1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতীয় মুসলিমদের ভীতি

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১ জুলাই ২০১৪

এই ভীতির বাস্তব ভিত্তি কতটা এবং কী ধরণের ভীতি এটা? ইত্যাদি প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে গত ২৬শে জুন প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে সর্বভারতীয় ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে দিল্লি শাখার সভাপতির বৈঠকের পর প্রকাশিত বিবৃতিকে ঘিরেই৷

https://p.dw.com/p/1CSsF
ছবি: Reuters/Press Information Bureau of India

অবশেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাহলে স্বীকার করলেন যে, মোদীর বিজেপি সরকার সম্পর্কে ভারতীয় মুসলিম সমাজে একটা ভীতির মানসিকতা কাজ করছে৷ সেই কারণেই গত ২৬শে জুন সর্বভারতীয় ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের দিল্লি শাখার সভাপতি সিরাজুদ্দিন কুরেশির সঙ্গে বৈঠকে মোদী তাঁদের ‘ভয়ের রাজনীতি' থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলেন৷ বৈঠকের পর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সেকথাই উঠে এসেছে৷

পরে কুরেশি সংবাদমাধ্যমের কাছে এর বিশদ ব্যাখ্যা দেন, যার সারমর্ম হলো কোনো সন্ত্রাস মামলায় মুসলিম যুবকদেরই কেন জড়ানো হয় এবং তাঁরা এবং তাঁদের পরিবারকে হয়রানির শিকার হতে হয় কেন? এই অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী খতিয়ে দেখার জন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে এক কমিটি গঠনের কথা বলেন৷ এর অন্তর্নিহিত অর্থ এই যে, সব সন্ত্রাসে ভারতীয় মুসলিমদের যেমন সন্দেহ করা হয়, তেমনি এ কথাও সত্য যে তাঁরা সবসময় সন্দেহের বাইরে থাকে না৷ ভারতীয় মুসলিমদের একাংশের ভোট বিজেপিকে দেয়ায় মোদী তার প্রশংসা করেছেন৷ তবে মোদী মনে করেন না ভারতীয় মুসলিমদের সার্বিক আর্থ-সামাজিক অনগ্রসরতার নিরিখে অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত, অন্ততপক্ষে সরকারি সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে৷ এর পরেও অবশ্য সাচার কমিটির রিপোর্টে সংখ্যালঘু ভারতীয় মুসলিমদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেবার সুপারিশ করা হয়৷ ভারতের নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোদী মনে করেন, ভারতীয় মুসলিমদের শিক্ষা শুধু মাদ্রাসা-কেন্দ্রিক না হয়ে আধুনিক শিক্ষাকেও গ্রহণ করা উচিত৷

ভারতের মুসলিম সমাজের মানসিকতায় বিজেপি তথা হিন্দুত্ববাদী সংঘ পরিবারের মতাদর্শ সম্পর্কে ভীতি জন্মানোর জন্য দায়ী কে বা কারা? প্রথমেই আঙুল ওঠে অ-বিজেপি রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি৷ তারা ভোটব্যাংকের জন্য বিজেপি সম্পর্কে মুসলিমদের মন বিষিয়ে তোলে৷ দ্বিতীয়ত, মোদীর কথাবার্তা বা হাবভাব সর্বদাই মুসলিম-বিরোধী৷ এইভাবে মোদী সরকারের প্রতি একটা ভীতি বদ্ধমূল হয়ে ওঠে মুসলিম সমাজে, যার পরিণামে হয়েছে ভয়ংকর৷ সাম্প্রদায়িক হিংসা ছাড়ানোর অভিযোগে বহু কমিশন বসে সংঘ পরিবারের বিরুদ্ধে৷ স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৬১ সালে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে প্রথম বড় ধরণের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধে৷ সাম্প্রতিককালে ৯০-এর দশকে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবানির রথযাত্রা, অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ভাঙা এবং ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গা৷

মোদী সরকারের ৩০ দিনের শাসনে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মন থেকে কি শঙ্কা দূর হয়েছে? ফিরে এসেছে কি তাঁদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ? না আসেনি৷ বিশ্লেষকদের মতে, আদতে তার বিপরীতটাই হয়েছে৷ বিশাল সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে বিজেপি ক্ষমতা আসায় তাঁদের মনে আরো বেশি ভয় ঢুকেছে৷ তবে এ কথা সত্য যে, এই ৩০ দিনে বড় কোনো সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেনি৷ ভারতের হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে ২০১৪ সালেই বিধানসভা ভোট৷ বিজেপি ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের বিভেদকামী লাইনেই দলীয় কর্মকৌশল স্থির করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ সাধারণ নির্বাচনের সময় মুজফ্ফরনগরে জাট-মুসলিম দাঙ্গার পর মোদীর সেখানে যাওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তিনি সেখানে যাননি৷ বরং যাঁদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা ঘটানোর অভিযোগ ছিল তাঁদের সম্বর্ধনা সভাতেও উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদী৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য