মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দিল্লিতে মমতা বন্দোপাধ্যায়
২১ জুন ২০১১স্বভাবতই প্রশ্ন ছিল রাজ্যের উন্নয়ন থেকে লোকপাল বিল, গান্ধী পরিবার, কর্ম সংস্কৃতি নিয়ে৷ জবাব দিয়েছেন তিনি খোস মেজাজে৷
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দোপাধ্যায় তাঁর কার্যকালের একমাস পর এই প্রথম দিল্লি এলেন৷ আজ ছিল তাঁর ঠাসা কর্মসূচি৷ দেখা করেন তিনি প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে৷ অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর আলোচনা করার কথা৷ সবটাই পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক প্যাকেজ এবং নিরাপত্তাকে ঘিরে৷
তারই মাঝে তিনি দিল্লির প্রেস ক্লাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী দিনেশ দ্বিবেদীকে পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন৷ রাজ্যের সার্বিক বিকাশ বিশেষ করে জঙ্গলমহল ও পাহাড়ের উন্নয়নে তাঁর আগামী দিনের রোডম্যাপ কী, জানতে চাইলে ডয়চে ভেলেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পাহাড়ের সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে৷ উভয়পক্ষ সমাধানসূত্রে সম্মত স্রেফ ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সই হওয়া বাকি৷ এই চুক্তি সই-এর জন্য শুধু কেন্দ্রের সময়ের অপেক্ষা৷ চুক্তি সই হতে পারে হয় দার্জিলিঙ না হয় কলকাতা না হয় দিল্লি৷ আর জঙ্গলমহলের জন্য আমি সেখানে দল পাঠিয়েছি কী ধরণের প্যাকেজ দরকার তা জানতে৷ দার্জিলিঙ-এর পর আমি জঙ্গলমহলে যাব পুরো উন্নয়ন প্যাকেজ নিয়ে৷ জঙ্গলমহল এলাকায় এবং অন্যত্র গরিবদের জন্য দু-টাকা কিলো দরে চাল দেবার প্রকল্প রয়েছে৷ পাহাড় ও জঙ্গলমহলের উন্নয়ন করা হবে একই সঙ্গে৷''
একমাসের কার্যকালের অসুবিধার কথা বলতে গিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আর্থিক প্রশাসনিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য – পুরো ব্যবস্থাপনা ভেঙ্গে পড়েছে৷ তা পুনরুদ্ধার করা বেশ কঠিন৷ তবে আনন্দের কথা, ভোটের আগে বলা হচ্ছিল ভোটের পর রক্তগঙ্গা বইবে৷ তা হয়নি৷ আইনশৃঙ্খলা বহাল আছে৷ প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে৷ প্রায় রোজ তার সঙ্গে উদ্ধার করা হচ্ছে মানুষের কঙ্কাল যেটা মর্মান্তিক৷ তা সত্ত্বেও বাংলার মানুষ শান্তিকামি৷''
দুর্নীতি তথা লোকপাল বিল সম্পর্কে তাঁর ব্যক্তিগত মন্তব্য হলো, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে বা বিচার বিভাগকে বিলের আওতায় আনলে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর হয়ে যাবে একথা মনে করিনা৷ ঢেলে সাজাতে হবে পুরো সিস্টেমটা – রাজনৈতিক থেকে প্রশাসনিক স্তর পর্যন্ত আগাগোড়া৷ সংস্কার দরকার নির্বাচনি প্রক্রিয়ার৷ দরকার নির্বাচনে স্টেট ফান্ডিং৷ এটা হলে দুর্নীতি অনেকাংশে দূর করা সম্ভব৷''
রাহুল গান্ধীর প্রধানমন্ত্রী হবার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এর মধ্যে আমার কোন ভূমিকা থাকতে পারে না৷ এটা ঠিক করবেন গান্ধী পরিবার, কংগ্রেস পার্টি৷ তবে শরিক দল হিসেবে সমর্থন চাওয়া হলে তৃণমূল কংগ্রেস তা সমর্থন করবে, এটুকু বলতে পারি৷''
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন