1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘নিপীড়িত গার্মেন্টস শ্রমিকরা’

সমীর কুমার দে, ঢাকা১ মার্চ ২০১৪

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের মানবাধিকার রিপোর্টে বাংলাদেশ বিষয়ে একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে শ্রমিকদের মানবাধিকারের বিষয়টি৷ বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নানা নির্যাতন ও নিগ্রহের প্রসঙ্গ সামনে এসেছে৷

https://p.dw.com/p/1BHdR
Feuer in Tazreen Fabrik November 2012
ছবি: picture-alliance/dpa

তবে শ্রমিক নেত্রীর এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সভাপতি আতিকুল ইসলাম৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘‘মানবাধিকার রিপোর্ট প্রকাশের আগেই বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস ১৯টি ফ্যাক্টরির ব্যাপারে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছিল৷ এই ১৯ ফ্যাক্টরির মালিককে পৃথকভাবে ডেকে বাণিজ্যমন্ত্রী, সচিবসহ সরকারের ঊর্ধ্বতনরা কথা বলেছেন৷ প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন৷ মালিকদের দেয়া তথ্য ও বক্তব্যে মন্ত্রীসহ সবাই সন্তুষ্ট হয়েছেন৷''

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘মার্কিন দূতাবাসের মূলত অভিযোগ ছিল চাকরিচ্যুতির৷ কিন্তু প্রত্যেক মালিকের তো শ্রমিককে বাদ দেয়ার অধিকার রয়েছে৷ সে ক্ষেত্রে ওই শ্রমিককে সব সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে কিনা সেটাই আসল কথা৷ এ ক্ষেত্রে যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের সবাইকে ন্যায্য সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে বলেই মালিকরা কাগজপত্র দাখিল করেছেন৷'' সব মিলিয়ে তিনি বলেন, এই সেক্টরে ৪৪ লাখ শ্রমিক কাজ করে৷ মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্ক না থাকলে অনেক বড় বড় সমস্যা হতে পারতো৷ কিন্তু আল্লাহর রহমতে তেমন কিছু তো এখনো হয়নি৷

মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনে শ্রমিকদের ইউনিয়নে যুক্ত হওয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে৷ ইউনিয়ন গঠনে সরকারেরও অনুমোদন রয়েছে৷ অথচ ইউনিয়ন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে এখনো অনেক বাধা রয়েছে৷ আইনিভাবে নিবন্ধিত ইউনিয়নগুলোর শ্রমিকদের স্বার্থে সম্মিলিতভাবে কাজ করার কথা থাকলে বাস্তবে তা খুবই কম দেখা যায়৷ অন্যদিকে, আইন লঙ্ঘনকারীদের ক্ষেত্রে যে পরিমাণে জরিমানা করা হয় তা পর্যাপ্ত নয়৷ বেসরকারি সংস্থা অধিকারের তথ্য অনুযায়ী বর্ধিত বেতন দাবি করায় মালিকেরা ১ হাজার ৪০৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে৷

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হলেও ২০১২ সালের এপ্রিলে নিহত শ্রমিক নেতা আমিনুলের হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কোনো অগ্রগতি হয়নি৷ প্রতিবেদনে জোরপূর্বক কাজে নিয়োজিত করা ও শিশুশ্রমের কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ অনেক কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই নাজুক৷ কারখানাগুলো সারা বছরই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ সলিডারিটি সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী গত বছর ৩২টি আগুনের ঘটনা ঘটে৷ এতে অনেকে আহত ও দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন৷ গত বছরের ২৭ জানুয়ারি স্মার্ট গার্মেন্টস ও আসবাদ কম্পোজিট মিলে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে৷ প্রতিটি ঘটনায় কমপক্ষে ৭জন নিহত হয়েছেন৷

সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও শ্রমিক নেত্রী নাজমা আক্তার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের গার্মেন্টস শ্রমিকরা কী অবস্থায় আছে তা আমরা সবাই বুঝি৷ সরকার ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ দিয়েছে সত্য, কিন্তু যারা এটা করতে যাচ্ছে তাদের অনেকেই নির্যাতিত হচ্ছেন৷'' আর শিশুশ্রমের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘এখন আর খুব বেশী কারখানায় শিশুদের নেয়া হয় না৷ বিশেষ করে বড় কারখানাগুলোতে শিশুদের নেয়া হয় না৷''

তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকদের স্বার্থে এখনো কোনো কারখানা গড়ে ওঠেনি৷ মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয় না৷ কেননা তারা কমিশনভোগী এজন্য অনেক পোশাক কারখানা শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত করেনি৷ তিনি বলেন, দেশে যারা ধনী হচ্ছেন তারা ব্যাংক লুট করে, শ্রমিক শোষণ করে মেহেনতি মানুষের রক্ত চুষে ধনী হচ্ছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য