1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘আন্দোলনেই থাকবে শাহবাগ’

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

গণজাগরণ মঞ্চের বর্ষপূর্তিতে স্বাধীনতা বিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে অবিচল থাকার ঘোষণা করেছেন মঞ্চের নেতা-কর্মীরা৷ তাঁরা শপথ নিয়েছেন নতুন করে৷ এই নতুন শপথে উজ্জীবিত শাহবাগ৷ সংহতি জনিয়েছেন হাজারো মানুষ৷

https://p.dw.com/p/1B3HR
Bangladesch die Bewegung in Dhaka
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan

বর্ষপূর্তির কর্মসূচি শুরু হয় সকাল থেকেই৷ সকালে গণজাগরণ মঞ্চের নেতা-কর্মীরা মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান৷ নীরবতা পালন করে সম্মান জানান ৫২-র ভাষা শহিদদের৷ তার সঙ্গে তাঁরা শপথ নেন নতুন আন্দোলনের৷

বিকেলে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চে সমাবেত সবাই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন৷ বিকেল সাড়ে ৩টার কিছু আগে ইমরান এইচ সরকার শপথ বাক্য পাঠ করান সমবেত সবাইকে৷ প্রজন্ম চত্বরে সকলে সমবেত কণ্ঠে শপথ নেন সকল যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, যুদ্ধাপরাধীদের সব সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জোট বর্জন করা, সাম্প্রদায়িক হামলা প্রতিরোধ এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার লক্ষ্যে৷ শপথের পর শাহবাগ থেকে শুরু হয় গণজাগরণ যাত্রা৷ যুদ্ধাপরাধের বিচারসহ তাঁদের দাবির পক্ষে ব্যানার, পোস্টার আর ফেস্টুন নিয়ে পায়ে হেঁটে এই জাগরণ যাত্রা শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারা ঘুরে আবারো শাহবাগে এসে শেষ হয়৷ এরই মধ্যে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর৷

Bangladesch die Bewegung in Dhaka
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan

এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণ এবং সবশেষে রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷ এ সব কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ ছাড়াও বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন৷ তাঁরা আলোচনা সভায় গণজাগরণ মঞ্চের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন৷ বলেন, অনেক অপপ্রচার হয়েছে৷ কিন্তু তরুণ প্রজন্মকে থামানো যায়নি৷ তাঁরা মাথা নোয়ায়নি৷ তাঁরা জেগে আছে বলেই আজ বাংলাদেশে যু্দ্ধাপরাধের বিচার সম্ভব হয়েছে৷ আর তাঁরা জেগে থাকলে এই বিচার কেউ বন্ধ রতে পারবে না৷ সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, ‘‘শাহবাগের এই তারুণ্যই আমাদের বাতিঘর৷ তারাই আমাদেও পথ দেখিয়েছে, পথ দেখাবে৷'' শিক্ষাবিদ ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘শাহবাগের তারুণ্য আমাদের গর্ব৷ তারাই আমাদেও পথ হারাতে দেয়নি৷''

বর্ষপূর্তির সমাবেশে আসা তরুণ কর্মজীবী সায়মা সুলতানা জানান, অনেকেই সমালোচনা করেছেন৷ তিনি নিজেও শাহবাগে আসার কারণে সহকর্মীদের নিন্দার মুখে পড়েছেন, তবুও পিছপা হননি৷ ভবিষ্যতেও হবেন না৷ এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাবির আহমেদ বলেন, তাঁকেও নাস্তিক ব্লগার বলে গালি দেয়া হয়েছে৷ ভয় দেখানো হয়েছে৷ অপপ্রচার করা হয়েছে, যা চলছে এখনও৷ কিন্তু যে তারুণ্য এক বছর আগে জেগেছে, সেই তারুণ্য থামবে না৷

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, তাঁদের আন্দোলনে সব সময়ই গণমানুষের সমর্থন ছিল এবং থাকবে৷ দেশের মানুষ এই আন্দোলনকে পথ দেখিয়েছে৷ ভবিষ্যতেও পথ দেখাবে৷ কোনো অপশক্তির কাছে তাঁরা মাথা নোয়াবেন না৷ কোনো ভয়ে তাঁরা ভীত নন৷ কোনো অপপ্রচারই তাই সফল হবে না৷ দেশ যুদ্ধাপরাধী এবং সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে৷

গত বছরের ৫ই ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রতিবাদে ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ব্লগাদের আহ্বানে প্রতিবাদী তরুণরা নেমে আসেন শাহবাগে৷ এরপর সেই আন্দোলন শাহবাগ থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে৷ গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন পরিণত হয় সবার আন্দোলনে৷

বছর পূর্তিতে বুধবার আবারো মানুষের পদভারে এবং স্লোগানে প্রকম্পিত হয় শাহবাগ৷ শাহবাগ আন্দোলনের এক বছর পূর্তিতে পালন করা হচ্ছে তিন দিনের কর্মসূচি৷ কেউ কেউ লিখেছেন কবিতা৷ যেমন কবি আলেক্স আলিম৷ তিনি লিখেছেন:

‘শাহবাগ মানে আন্দোলনের

নতুন ইতিহাস৷

শাহবাগ মানে কসাই কাদেরের

গলায় পরে ফাঁস৷

শাহবাগ মানে...৷'

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য