1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাছ চাষ টিকিয়ে রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পদক্ষেপ

১১ মার্চ ২০১০

পশ্চিমী বিশ্বে মাছের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে মানুষরা৷ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি মাছ ধরা হচ্ছে এবং এর নেতিবাচক প্রভাবও পরিলক্ষিত হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/MPSq
ইউরোপ এবং অ্যামেরিকাতে মাংসের চেয়ে মাছের বাজারে চলছে রমরমা ব্যাবসাছবি: RIA Novosti

খাবারের তালিকায় মাছ রয়েছে – ছোটবেলা থেকেই আমার তা দেখে আসছি৷ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মাছ খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি৷ ইউরোপ এবং অ্যামেরিকাতেও গত দশ বছরে মাংসের চেয়ে মাছের বাজারে চলছে রমরমা ব্যাবসা ৷ চাহিদা বাড়ছে, কিন্তু বাড়ছে না উৎপাদন বা সরবরাহ৷ হুমকির সম্মুখীন মৎস চাষ, উন্নয়নশীল দেশের জেলেরা৷ সমুদ্র এবং নদীর মাছ বাঁচাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গ্রহণ করেছে বেশ কিছু পদক্ষেপ৷

Typisch britisches Essen: Fisch und Chips
ইউরোপে মাছে জনপ্রিয়তা বাড়ছেছবি: dpa

ইউরোপে গত দশ বছরে মানুষের মধ্যে মাছ খাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে৷ জনপ্রিয় মাছের তালিকায় স্যামন, ঈল, টুনা, কড, মাগুর, শিঙ রয়েছে৷ এছাড়া শামুক আর চিংড়ি তো আছেই৷ মাছের চাহিদা প্রতি বছরই বাড়ছে৷ একজন মানুষ প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৭ কিলোগ্রাম মাছ খেয়ে থাকে৷ এবং ভোগের এই মাত্রা বাড়ছে৷ এ থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী ? একটিই মাত্র উপায় তা হল প্রয়োজনের তুলনায় কোন অবস্থাতেই বেশি মাছ ধরা যেন না হয়৷ জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফ এ ও ৷ মাছ কমে যাচ্ছে, নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু মাছের প্রজাতি৷ আশংকা প্রকাশ করেন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচারের কর্মকর্তা ক্যাথরিন সুকো৷ তিনি জানান, মাছের চাহিদা বাড়ছে৷ এসব মাছ সব সময়ই সমুদ্র থেকে ধরা সম্ভব নয় তাই আমাদের হাত বাড়াতে হচ্ছে নদীর মাছের দিকে৷ প্রতি বছর সমুদ্র থেকে প্রায় ৯০ মিলিয়ন টন মাছ ধরা হয়৷

Lebensmittel Fisch Fische in der Kühltruhe
চাহিদা বাড়ছে কিন্তু উৎপাদন বাড়ছে নাছবি: RIA Novosti

প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মাছ ধরার কারণে দেখা দিচ্ছে তীব্র সংকট৷ এসব মাছের সঙ্গে উঠে আসে শামুক, চিংড়ির মত আরো অনেক প্রজাতির জীব৷ সেগুলো খাওয়া হয় না, বিক্রিও করা হয় না, ফেলে দেয়া হয়৷ ক্যাথরিন সুকো আরো বললেন, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি মাছ ধরা পড়ছে৷ চাহিদা মিটে যাচ্ছে বলে এই খবরগুলো কেউই পাচ্ছে না৷ প্রতি বছরই চাহিদা বাড়ছে৷ গত বছরের তুলনায় এ বছর চাহিদা বেড়েছে ২০ শতাংশ৷

ইউরোপীয় ইউনিয়ন গ্রহণ করেছে কঠোর কিছু ব্যবস্থা৷ উত্তর সাগর এবং উত্তর অ্যাটলান্টিক অঞ্চলের দেশগুলোতে কোটা ভাগ করে দেয়া হয়েছে৷ কোন্ দেশ প্রতি বছর কত টন মাছ ধরতে পারবে তা নির্দিষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে৷ মাছের বাচ্চা বা পোনা ধরলে জরিমানা করা হবে তাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে৷ ব্রাসেলসে আশা করা হচ্ছে এর মধ্যে দিয়ে মৎস চাষকে টিকিয়ে রাখা হয়তো সম্ভব হবে, বাঁচানো সম্ভব হবে সমুদ্রের প্রাণী জগতকে৷ জো বর্গ ইউরোপীয় ইউনিয়নে মৎস কমিশনের প্রধান৷

Garnelen der Art Xiphopenaeus riveti sind die wirtschaftlich wichtigste Gruppe der wirbellosen Einwanderer während El Niño
চিঙড়ির জনপ্রিয়তা কোন দেশে নেই ?ছবি: presse

তিনি জানালেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা জেলেদের জন্য একটি সুখবর৷ মৎস চাষকে টিকিয়ে রাখতে হবে – এটি মাথায় রেখেই এখন অনেকে মাছ ধরছেন৷ যতখানি প্রয়োজন ঠিক ততটাই মাছ ধরা হচ্ছে৷ এই ব্যবস্থা চালু থাকলে সমুদ্রের মাছ বিলীন হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে৷ তবে এই পদ্ধতি মেনে চলার জন্য প্রয়োজন কঠিন নিয়মানুবর্তিতার৷ এর ফলেই সম্ভব হবে ভবিষ্যতে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করার৷

মাছ ধরার ক্ষেত্রে কোটা সিস্টেম চালু করা হয়েছে এবং ইউরোপের প্রতিটি দেশকেই এই কোটায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ কোটা যতটুকু অনুমোদন করছে তত কিলোগ্রাম মাছ সে দেশটি ধরতে পারবে৷ এর বাইরে কেউ বেশি মাছ ধরতে যেন না পারে, সেদিকে কড়া নজর রাখা হবে৷

প্রতিবেদক : মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদক : সঞ্জীব বর্মন