1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘উড়ন্ত শৌচাগার’

১৭ নভেম্বর ২০১৩

শৌচাগারে যাওয়াটা আমার-আপনার জন্য খুব সাধারণ একটা বিষয় ও জীবনের অঙ্গ হলেও, কেনিয়ার মতো আফ্রিকার বহু দেশেই কিন্তু তেমন নয়৷ সেখানে কার্যকর, পরিষ্কার পয়ঃপ্রণালি না থাকায় অনেকের কাছেই ঠিকঠাক ‘টয়লেট’-এ যাওয়াটা একটা স্বপ্ন!

https://p.dw.com/p/1AIoG
ছবি: Fotolia

বিশ্বের বহু দেশেই এ ধরণের একটা দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়৷ রোগ-জীবাণু ভর্তি ময়লা শৌচালয়, যেখানে না আছে পানি, না আছে অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা৷ অনেক জায়গায় আবার কোনো শৌচাগারই নেই৷ এই যেমন, কেনিয়ার কিবেরিয়া অঞ্চল৷ মানে নেই বললেই চলে৷ কারণ, সেখানে মাথাপিছু প্রতি ৩০০ জন মানুষের জন্য রয়েছে মাত্র একটি শৌচালয়

তা, তাহলে সেখানকার মানুষ কীভাবে সারেন প্রতিদিনকার এই অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজটা? সচরাচর যেটা হয়ে থাকে, সেটা হলো এরকম: এক, তাঁরা যতক্ষণ সম্ভব ততক্ষণ পায়খানা আটকে রাখেন৷ আর দুই, বেগতিক দেখলে প্লাস্টিকের ব্যাগ তো রয়েছেই৷ সেটা ব্যবহার করে মাঠে-ঘাটে ফেলে দিলেই হলো৷

আপনি ভাবছেন, এ কী কথা! সে আপনি যতই অবাক হন না কেন, এভাবে টয়লেটের কাজ সারার ফলে যেটা হচ্ছে, সেটা স্বাভাবিকভাবেই স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক, বিশেষ করে নারীদের জন্য৷ তাছাড়া, মানুষের মল-মূত্র এই উপায়ে নদী-নালায় গিয়ে পড়ার ফলে (তাও আবার প্লাস্টিকের ব্যাগে) সেই ময়লা পানি থেকে হাজারো শিশু অসুখে পড়ে৷ পানীয় জলে মানুষের বর্জ্য মিশে সংক্রমণ ঘটায়, দেখা দেয় কলেরা ও অন্যান্য পেটের অসুখ৷ এমনকি ঘন ঘন পেট নামলে প্রাণও হারাতে হয় অগুন্তি শিশুকে৷

Somalische Frauen stehen Schlange vor einer Mobiltoilette
শৌচাগারে যাওয়াটা আমার-আপনার জন্য খুব সাধারণ একটা বিষয় ও জীবনের অঙ্গ হলেও, আফ্রিকার বহু দেশেই কিন্তু তেমন নয়ছবি: picture-alliance/dpa

তবে আর নয়৷ কারণ, এবার সেখানে আসছে ‘ফ্লাইং টয়লেট' বা ‘উড়ন্ত শৌচাগার'৷ কী সেটা? কেনিয়ার এই দরিদ্র মানুষদের খোলা জায়গায় মলত্যাগ করার অভ্যাসটা না পাল্টিয়েই এই ‘উড়ন্ত শৌচাগার' নামের প্রকল্পটি তৈরি করেছেন ক্যামিলা ভিরসিন৷ তিনি সুইডেনের ‘পিপিপল' নামের একটি সংস্থার সঙ্গে জড়িত৷ বলা বাহুল্য, মানবস্বাস্থ্য রক্ষায় ‘স্যানিটেশন' অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই এ ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তুলতে সচেষ্ট জাতিসংঘ৷ ‘পিপিপল' তাদেরই দেখিয়ে দেয়া পথ অনুসারে কাজ করছে৷

এই প্রকল্পের আওতায় কিবেরিয়ার মানুষ এবার থেকে তাঁদের অভ্যাস মতোই মলত্যাগ করতে পারবেন৷ তবে সাধারণ প্লাস্টিকে নয়, বরং পরিবেশবান্ধব বা ‘বায়ো-ডিগ্রেডেবেল' এক ধরণের ব্যাগে৷ দেখতে পাতলা, অথচ হাড়ির মতো মুখ-বিশিষ্ট এই ব্যাগগুলির ভিতরে রয়েছে গুঁড়ো করা ইউরিয়া৷ এটা এমন এক অ্যামোনিয়া, যা একদিকে যেমন ক্ষতিকারক প্যাথোজেনকে দূরে রাখে, তেমনই এর ফলে থাকে না কোনো দুর্গন্ধ৷

ক্যামিলা ভিরসিন জানান, এগুলি দু-তিন সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়৷ এছাড়া, কিবেরিয়ার বেশ কয়েকটি জায়গায় কিছু ‘ড্রপ-অফ পয়েন্ট' করা হয়েছে, অর্থাৎ এমন কিছু জায়গায় চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে কয়েক সপ্তাহ অন্তর গিয়ে ঐ ‘উড়ন্ত শৌচাগার'-গুলিকে ফেলে আসলেই হলো৷ মজার ব্যাপার, পরবর্তীতে কিন্তু এগুলি দিয়ে মাটির সারও তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন ভিরসিন৷

শুধু তাই নয়, পরিবেশ বান্ধব এই শৌচাগার তৈরি করতে খরচও খুব কম৷ এমনকি, ‘কোল্ড ড্রিংক'-এর বোতলে যেমন ‘ফান্ড' থাকে, তেমনই এটা কিনে ব্যবহারের পর ফেরত দিলে কিছু অর্থ ফেরতও পাওয়া যায়৷ তাই কেনিয়ার দরিদ্র মানুষের কাছে খুব দ্রুতই যে এই ‘উড়ন্ত শৌচাগার' জনপ্রিয় হয়ে উঠবে, তা কী আর বলতে?

ডিজি/জেডএইচ (এএফপি, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য