1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভিটামিন ট্যাবলেটের মিথ

২১ এপ্রিল ২০১০

সুস্থ থাকার জন্য ইউরোপে অ্যামেরিকায় ভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রবণতা খুব বেশি৷ এই ট্যাবলেট কিনতে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনও প্রয়োজন হয়না৷ ইদানীং গবেষকরা এর উপকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন৷

https://p.dw.com/p/N1hV
অ্যামেরিকার একটি ওষুধের দোকানে ভিটামিন ট্যাবলেটের সম্ভারছবি: picture-alliance/ dpa

মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট৷ এই একখানা ট্যাবলেটেই অনেক রকমের ভিটামিন৷ শীত জানান দিতে শুরু করলেই টপাটপ ভিটামিন সি ট্যাবলেট খেয়ে নেয়া৷ অন্য সময়ে মাল্টি ভিটামিন৷ কিন্তু সত্যিই কী কাজ হয়? ভিটামিন ট্যাবলেটের মিথটা নিয়ে সংশয়ী গবেষকরা৷

জার্মানিতে বলুন, ইউরোপের অন্যান্য দেশে বলুন বা অ্যামেরিকায় বলুন, ফার্মেসি, ড্রাগস্টোর আর সুপার মার্কেটের তাক ভিটামিন ট্যাবলেটে বোঝাই৷ ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, মাল্টিভিটামিন থরে থরে সাজানো৷ কোন ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন প্রয়োজন নেই৷ তাক থেকে শুধু তুলে নিন৷ ব্যস, মনে করলেন আপনার শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি এই ট্যাবলেট পুষিয়ে দেবে৷ কিন্তু এমনটা মনে করার কোন কারণ নেই, বলছেন একদল মার্কিন গবেষক৷

এই তো গত বছর গবেষকরা দীর্ঘমেয়াদী এক গবেষণাকাজের ফল প্রকাশ করেন৷ এক লাখ ষাট হাজারেরও বেশি মধ্যবয়সি মহিলাদের ওপর চালানো হয় এই বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা৷ প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত থেকে দেখা গেছে, মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট খেয়েছেন যারা, তাঁদের স্বাস্থ্য যারা ট্যাবলেট খাননি, তাদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভাল, এমন নয়৷ অন্তত ক্যান্সার, হার্টের রোগ বা স্ট্রোক-এর মত বড় বড় অসুখের কথা বিবেচনা করলে৷ গবেষণা রিপোর্টের লেখিকা ম্যারিয়ান নয়হাউজার বলেছেন: ‘‘এমনকি যেসব মহিলা যথেষ্ট ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাননি, তাঁরাও মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট খেয়ে উপকার পাননি৷''

ডঃ নয়হাউজার অ্যামেরিকার সিয়াটেলের ফ্রেড হাচিনসন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারের ক্যান্সার প্রতিরোধ কর্মসূচিতে কাজ করছেন৷ তিনি বলছেন: ‘‘ মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেটে হয়ত দু ডজন উপাদান থাকতে পারে৷ কিন্তু টাটকা শাক সব্জি আর ফলে রয়েছে অন্য আরও শতাধিক উপকারী যৌগ৷ তার মানে একখানা মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট খেলে বহু উপকারী যৌগ থেকে বঞ্চিত হবে শরীর৷''

১৯৭০-এর দশকে নোবেলজয়ী মার্কিন বিজ্ঞানী লাইনাস পলিং এরকম একটা ধারণা সাধারণ মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দেন যে ভিটামিন সি খেলে ঠান্ডা লাগবেনা৷ উল্লেখ্য, বিজ্ঞানী পলিং চিকিৎসা বিজ্ঞানে এবং রসায়নেও নোবেল পুরস্কার পান৷ পলিং-এর তত্ত্ব এমনটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে ড্রাগস্টোরগুলোর তাকে নানা জাতের ভিটমিন সি ট্যাবলেটের সমাহার৷ কিন্তু গবেষণার ফল থেকে ভিন্ন ফল পাওয়া গেছে৷ কয়েক দশক ধরে ১১,০০০ মানুষের ওপর চালিত পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করেন গবেষকরা৷ ২০০৭ সালে তাঁরা এই সিদ্ধান্তে আসেন যে ভিটামিন সি ঠান্ডা প্রতিহত করেনি৷ অন্তত ঠান্ডা লাগার সময়কালটাকে কী কমিয়ে দিতে পারে ভিটামিন সি ট্যাবলেট? তেমন কিছু কমেনা, বলছেন গবেষকরা৷ সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে ঠান্ডা লাগার লক্ষণগুলো থাকে বছরে ১২ দিন৷ প্রতিদিন ভিটামিন সি পিল খেলে তা ১১ দিনে নামতে পারে৷ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তা বছরে ২৮ দিন থেকে ২৪ দিনে নামতে পারে৷ আর তাই গবেষকদের সিদ্ধান্ত: হ্রাসের পরিমাণ যেহেতু নগণ্য সেহেতু সারা বছর ধরে ট্যাবলেট খেয়ে যাওয়ার কোন যুক্তি নেই৷ তাছাড়া সর্দি কাশির লক্ষণগুলো দেখা দেয়ার পর ভিটামিন সি ট্যাবলেট খেলে তাতে কোন কাজই হবেনা বলে তাঁরা মনে করেন৷

প্রতিবেদক : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা : দেবারতি গুহ