1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের আসন্ন নির্বাচন

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩

২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচন কী ধর্মীয় মেরুকরণ ডেকে আনতে পারে? গোষ্ঠী দাঙ্গায় উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশ কী তারই অশনিসংকেত? প্রত্যাশিতভাবেই এই দাঙ্গায় রাজনৈতিক রং দেবার চেষ্টা চলেছে৷ কারফিউ জারির পরেও বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা৷

https://p.dw.com/p/19gAv
In this Saturday, Sept. 7, 2013 photo, people argue with Indian policemen during curfew hours following riots and clashes between two communities in Muzaffarnagar, in the Indian state of Uttar Pradesh. Hundreds of troops have been deployed to quell deadly riots and clashes between Hindus and Muslims sparked by the killing of three villagers who had objected when a young woman was being harassed in northern India. Nine people were killed, including an Indian broadcast journalist and a police photographer, when the two groups set upon each other with guns and knives in Kawal village, in the state of Uttar Pradesh, police said Sunday. (AP Photo) pixel
ছবি: picture alliance/AP Photo

সাম্প্রদায়িক স্পর্শকাতর রাজ্য বলে চিরদিনই উত্তরপ্রদেশ, বিশেষ করে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বদনাম আছে৷ প্রধানত তিন সম্প্রদায়ের বাস এখানে৷ উচ্চবর্ণ হিন্দু, দলিত ও মুসলিম৷ রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ মুসলিম ভোটব্যাংক শাসকদল সমাজবাদী পার্টির বলে মনে করা হয়৷ সাধারণ ছোটখাটো বিষয় নিয়েও সংঘর্ষ লেগেই আছে এদের মধ্যে৷ মেয়েদের টিটকারি থেকে শুরু করে গবাদি পশুচারণ, লাউডস্পিকার বাজানো, আবর্জনা ফেলা – কী নয়?

তার পরিণামে রাজ্যের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে৷ গত দেড় বছরে অখিলেশ যাদব সরকারের আমলে এই ধরণের সংঘর্ষ ৩৫ ছাড়িয়ে গেছে৷ বলা বাহুল্য, ধর্মীয় এই বিভাজন রেখায় লাভ হয়েছে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি তথা সঙ্ঘপরিবারের৷ কথায় যাকে বলে, ‘ঘর পুড়ুক, খই খাই' অবস্থা৷

মুজফ্ফরপুরের সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের সূত্রপাত সেই রকম এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেটা নিয়ে এতবড় সংঘর্ষ হবার কথা নয়, যার পরিণামে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৪০ জনের মতো৷ তার মধ্যে মুজফ্ফরপুরেই মারা গেছে ৩৪ জন৷ জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বহু ঘরবাড়ি৷ বাড়ি ছাড়া বহু পরিবার৷ একটি হিন্দু মেয়েকে অশ্লীল টিটকারি দেয়াকে কেন্দ্র করে তিনজনের প্রাণহানি হয়৷ তার প্রতিবাদে সংশ্লিষ্ট গ্রামে ডাকা হয় মহাপঞ্চায়েত৷ ‘বউ-বেটি সম্মান' নামে এক জনসমাবেশে হিন্দু জাঠ সম্প্রদায়ের লক্ষাধিক মানুষ দূর দূর অঞ্চল থেকে যোগ দিতে যায়৷ জ্বালাময়ী ভাষণে উঠে আসে অপর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ৷ তার অব্যবহিত পরেই ছড়িয়ে পড়ে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ অন্যান্য জায়গায়৷ তাতে ইন্ধন জোগায় ইন্টারনেটে দেয়া পুরানো কিছু ভুয়া ভিডিও ক্লিপিং৷

Indian army vehicles patrol on a deserted road during a curfew in Muzaffarnagar, in the northern Indian state of Uttar Pradesh September 8, 2013. The Indian army was called in, an unusual measure, to contain communal violence pitting Hindus against Muslims that killed at least 15 people in northern Uttar Pradesh state. An army contingent of up to 800 was dispatched to the area on Saturday night, as armed gangs of Jats, a group practising Hinduism, stormed a mosque and a village with Muslim residents, the state's principal home secretary R.M. Srivastava said. REUTERS/Stringer (INDIA - Tags: CIVIL UNREST MILITARY POLITICS)
মুজফ্ফরপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাস্তায় সেনাবাহিনীর টহলছবি: Reuters

প্রশ্ন ওঠে, গোড়ার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং সহিংসতা দমনে শাসকদল সমাজবাদী পার্টির তরুণ মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের চরম ব্যর্থতা নিয়ে৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং মুসলিম সংগঠনগুলি মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করে৷ এখন অবশ্য কিছুটা হলেও পরিস্থিতি উন্নতির দিকে৷ এর মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় ১৫০০ জনকে৷ ২০০০ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে৷ কয়েক ঘণ্টার জন্য শিথিল করা হয় কারফিউ৷ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এই গোষ্ঠী সংঘর্ষের পেছনে রাজনৈতিকদলগুলির হাত আছে৷

আসন্ন নির্বাচনি লড়াইয়ের জমি তৈরিতে সাম্প্রদায়িক ইস্যু জাগিয়ে তুলতে হিন্দুত্ববাদীদের তৎপরতার মোকাবিলা করতেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ব্যর্থ৷ একদিকে তিনি এবং তাঁর দল যেমন সংখ্যালঘু-ভোট নিজের ঝুলিতে ধরে রাখতে চাইছেন, অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশে নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অমিত শাহ বিজেপির নির্বাচনি প্রচারের প্রধানের পদে অভিষেকের পর সঙ্ঘবদ্ধ হিন্দু ভোট নিজের দিকে টানতে ব্যস্ত৷

ফলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এটাকে ভোট রাজনীতির ধর্মীয় মেরুকরণ বলে মনে করছেন৷ বলছেন, এটা তো আগুন নিয়ে খেলারই নামান্তর৷ অথচ এমনই পরিহাস, এই অখিলেশ যাদবই কিছুদিন আগে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিযোগে ‘সাসপেন্ড' করেছিলেন এক উচ্চপদস্থ মহিলা প্রশাসনিক অফিসারকে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য