ভারতীয় রেলওয়ের সাহায্য ছাড়াই তৈরি করা হল সর্বপ্রথম রেলস্টেশন
১৩ জানুয়ারি ২০১০তাজনগরের দুই হাজার মানুষ সমবেত হয় তাদের নতুন রেল স্টেশনটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে৷ স্টেশনটি চালু হওয়ার পর থেকে দুই দিক থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন সেখানে দাঁড়াচ্ছে, তবে কোন মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেন আপাতত সে স্টেশনে থামবে না৷ একাধিকবার জেলা কর্মকর্তাদের অনুরোধ করার পর স্টেশন না হওয়ায় এলাকাবাসিরা নিজেরাই স্টেশনটি তৈরির কাজে হাত দেয়৷ তাজনগরবাসি একটি সমিতি গঠন করে এবং নিজেরাই স্টেশনটি তৈরি করতে সিদ্ধান্ত নেয়৷
নির্মাণ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত মানিশ টোকাস জানান, পাঁচ বছর আগে তারা স্টেশন তৈরির কাজ শুরু করেন৷ প্রথমে দুই বছর লেগে যায় স্টেশন তৈরির অনুমতি পেতে এবং আরও তিন বছর লাগে কাগজ-কলমের কাজ সারতে৷ এ সময় তারা অর্থ জোগাড় করে কাজ শুরু করে দেয়৷
তিনি আরও জানান, প্রতিটি পরিবার এ স্টেশনটি তৈরির জন্য চাঁদা দেয় প্রায় ৭০ মার্কিন ডলার করে৷ প্রায় একবছর সময় লাগে স্টেশনটি তৈরি হতে৷ ভারতীয় রেলওয়ে স্টেশনটি তৈরি করতে জায়গা, প্রযু্ক্তিগত উপদেশ এবং দেখাশোনার কাজ করেছে৷
এক হাজার ফুট দৈর্ঘের এবং ১৮ ফুট প্রস্থের এ স্টেশনটিতে দুটি প্ল্যাট ফর্ম, একটি টিকিট কাউন্টার এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে৷ রেলস্টেশনটি তৈরি হওয়াতে বিশটি গ্রামের মানুষ উপকৃত হল৷ রেলস্টেশনটি তৈরির আগে গ্রামবাসিদের অনেক দূর যেতে হত এবং কাজে বা বাড়ি যাবার জন্য তাদের প্রাইভেট যানবাহনগুলো ব্যবহার করতে হত৷ নতুন এ রেলস্টেশনটি তাদের সময়ের পাশাপাশি অর্থও বাঁচাতে সাহায্য করবে৷
তাজনগরের অনুপ কুমার জানান, তিনি মনে করেন এটি খুবই ভাল এবং এই অংশীদারিত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ সরকার বিভিন্ন স্থানের মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে না এবং এর ফলে সেখানকার মানুষ বিভিন্ন সম্যসায় ভুগে৷ এ পদক্ষেপটির মধ্য দিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠি উপকৃত হবে৷
বিশ্বে সবচেয়ে বড় এবং ব্যস্ততম রেলওয়ের মধ্যে ভারত অন্যতম৷ প্রতিদিন ১৮ মিলিয়নের বেশি মানুষ স্থলপথে এবং ২ মিলিয়ন জলপথে যাতায়াত করে থাকে৷
তাজনগরবাসি এখন দিল্লির বাইরের স্যাটেলাইট শহর গুরগাওনে যেতে পারবেন, ঐ স্যাটেলাইট শহরটিতে অনেকেই চাকুরি করেন৷ছয় মাসে স্টেশনটির মাসিক আয় সন্তোষজনক হলে একে একটি স্থায়ী স্টেশনে পরিণত করবে বলে ভারতীয় রেলওয়ের কর্মকর্তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷
প্রতিবেদন: আসফারা হক
সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার