1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছাত্রলীগ নেতাদের রক্ষার চেষ্টা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতারা প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে সাধারণ ছাত্রদের ‘শায়েস্তা’ করেছে রবিবার৷ বেসামাল ছাত্রলীগকে নিয়ে সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ক্ষোভ এবং দুঃখ প্রকাশ করলেও সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী বলেছেন ভিন্ন কথা৷

https://p.dw.com/p/1B23K
প্রতীকী ছবিছবি: Reuters

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফিসহ অন্যান্য ফি বাড়ানো এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্স চালুর প্রতিবাদে আন্দোলনরত ছাত্রদের প্রকাশ্যে গুলি ছুড়ে ‘শায়েস্তা' করেছে ছাত্রলীগ নেতারা৷ রবিবারের ঐ ঘটনার পর, অস্ত্রহাতে ছাত্রলীগ নেতাদের ছবিও প্রকাশ পেয়েছে সংবাদমাধ্যমে৷ নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়ার পরে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে৷ এই ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সোমবার৷ তিনি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কথাও বলেছেন৷

তিনি জানিয়েছেন, ছাত্রদের ওপর হামলার জন্য যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের শাস্তি দেয়া হবে৷ তবে এর বিপরীত কথা বলেছেন সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা ড. হাছান মাহমুদ৷ তিনি বলেন, ‘‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে জামায়াত-শিবির ও জঙ্গিগোষ্ঠী জড়িত রয়েছে৷ ছাত্রলীগের মধ্যে অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়েছে৷ ঐ অনুপ্রবেশকারীরাই এ ঘটনা ঘটাতে পারে৷ তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নিজেদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলে৷ এটা আওয়ামী লীগের কোনো অঙ্গসংগঠন নয়, ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন৷ তাদের কর্মকাণ্ড তারাই দেখভাল করে৷''

প্রায় একই রকম কথা বলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সভাপতি মিজানুর রহমান রানা৷ তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী এই হামলায় জড়িত নয়৷ ইসলামী ছাত্রশিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালে আমরা তাদের প্রতিহত করেছি মাত্র৷''

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ রবিবারের ঘটনায় মোট চারটি মামলা করেছে৷ কিন্তু কোনো মামলাতেই প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে যেসব ছাত্রলীগ নেতা গুলি করেছে, তাদের কাউকে আসামি করা হয়নি বলে অভিযোগ৷

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন ডয়চে ভেলেকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দেলনে অংশ নিয়েছে৷ শুধু ছাত্রশিবির কেন, কোনো ছাত্র সংগঠনের পক্ষেই ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর সমাবেশ ঘটানো সম্ভব নয়৷ সরকারের উচ্চমহল এবং কর্তৃপক্ষ যদি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের ওপর রঙ চড়ানোর চেষ্টা করেন, তার চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর হতে পারে না৷ আসলে নিজেদের দায়-দায়িত্ব এড়ানোর জন্যই তাঁরা এসব কথা বলছেন৷ তিনি বলেন, যারা সাধারণ ছাত্রদের ওপর গুলি করেছে তাদের আইনের আওতায় না এনে সাধারণ ছাত্রদের হয়রানির চেষ্টা করা হচ্ছে৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া পুলিশ গুলি ছুড়তে পারে না৷ তাই পুলিশের বিরুদ্ধেও মামলা হওয়া উচিত৷ এছাড়া যেসব ছাত্রনেতারা গুলি করেছে তাদের ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে৷ ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ধরেই তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব৷ কিন্তু তা না করে উল্টো পথে হাঁটছে প্রশাসন, যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না৷

সেলিম রেজা নিউটনের কথায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবিতেই আন্দোলনে নেমেছে৷ তারা ছয় দিন ধরে অহিংস আন্দোলন করেছে৷ অহিংস আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে৷ তাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর এই হামলার বিচার হতেই হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য