উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্ব
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেশ হতাশ হয়ে পড়েছিলেন৷ নির্বাচন বর্জন করায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও কথা বলেন৷ তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিএনপি আন্দোলন স্থগিত করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়৷ ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম পর্বের ৯৭টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ফলাফলে বিএনপি এগিয়ে আছে৷ দলটি ৪৩টি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছে৷ আর আওয়ামী লীগ জেতে ৩৪ উপজেলায়৷ বিএনপি এবং জামায়াত মিলে জয় পায় ৫৬ উপজেলায় – যা শুধু বিএনপি নয়, জামায়াতকেও আত্মবিশ্বাসী করেছে৷ মোট ৪৮৭টি উপজেলার নির্বাচন শেষ হবে ছয় ধাপে৷ এরই মধ্যে পঞ্চম ধাপের তফশিল ঘোষণা করা হয়েছে৷ দ্বিতীয় ধাপে ১১৭টি উপজেলার নির্বাচন হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি৷
বিএনপি-জামায়াত চাইছে তাদের জয়ের ধারা ধরে রেখে প্রমাণ করতে, যে তারাই জনপ্রিয় দল৷ বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘সাজানো প্রশাসন ও সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের লেজুড়বৃত্তির পরও সরকার উপজেলা নির্বাচনে জনগণের বিজয় ঠেকাতে পারেনি৷ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি সমর্থিতরা ৯৫ ভাগ উপজেলায় নির্বাচিত হতো৷ তবে পরবর্তী নির্বাচনে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব করলে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়া হবে৷'' তিনি বলেন, ‘‘পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে জনগণ আরো শক্তিশালী হয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বিজয় ছিনিয়ে আনবে৷'' জানা গেছে পরবর্তী ধাপের নির্বাচনের জন্য বিএনপি আরো কৌশল অবলম্বন করবে৷ আর তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আরো সক্রিয় হতে বলা হয়েছে৷ প্রশাসন বা স্থানীয় আওয়ামী লীগ কোনো ধরণের ঝামেলা করলে তা সরাসরি কেন্দ্রে জানাবে তৃণমূল৷ এজন্য একটি সেলও খোলা হয়েছে৷
এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘‘উপজেলা পরিষদের প্রথম দফা নির্বাচনের ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট নই৷ যেমন ফলাফল আশা করেছিলাম তেমন হয়নি৷ সামনের নির্বাচনগুলোতে দলীয় কোন্দল দূর ও সাংগঠনিক অবস্থা মজবুত করে এবং অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে৷''
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে গিয়েছে৷ আর যাতে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী তৎপর না থাকতে পারে সেজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে৷ অভ্যন্তরীন কোন্দল মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ আওয়ামী লীগ চাইছে কোনোভাবেই নিজেদের কারণে যেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয় বরণ করতে না হয়৷
আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন এই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন না হলেও জাতীয় রাজনীতিতে এর প্রভাব আছে৷ আর ফল বিএনপি'র পক্ষে গেলে সেটা তারা ব্যবহার করতে চাইবে৷