1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অভিবাসী ছাড়া সুইজারল্যান্ড!

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

সুইজারল্যান্ডের গণভোটে অভিবাসনের বিরুদ্ধে রায়ের ফলে বিশেষ করে ইউরোপ জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ কিন্তু খোদ সুইজারল্যান্ডের শিল্প-বাণিজ্য জগতও এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছে৷

https://p.dw.com/p/1BDiG
বিদেশিদের ছাড়া সুইজারল্যান্ডের ভাতে টান পড়বেছবি: picture-alliance/dpa

বহুকাল ধরেই ছুটি কাটানোর গন্তব্য হিসেবে সুইজারল্যান্ড গোটা বিশ্বের পর্যটকদের তালিকার প্রথম সারিতে রয়েছে৷ মনোরম নিসর্গ, পাহাড়-পর্বত, স্কি করার উপযোগী এলাকা – সব মিলিয়ে ছোট্ট এই দেশটিতে বেশ আরামে বেড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে৷ সুইজারল্যান্ডে পর্যটকদের জন্য উচ্চ মানের অবকাঠামো গড়ে উঠেছে অনেক কাল আগেই৷ তবে সেই অবকাঠামো চালু রাখার পেছনেও রয়েছে বিদেশি কর্মীদের অবদান৷ হোটেল, রেস্তোরাঁ, পর্যটন কেন্দ্রে কাজ করেন তাঁরা৷ গণভোটের রায় কার্যকর করা হলে এই সব বিদেশি কর্মীদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তাও স্পষ্ট নয়৷ ফলে শুধু কর্মীরা নয়, মাথায় হাত পড়ছে মালিকদেরও৷ সুইজারল্যান্ডে চাহিদা পূরণ করতে না পারার কারণেই তো বিদেশ থেকে কর্মী আনতে হয়েছে৷ তাঁরা চলে গেলে কাজগুলি করবে কে! সুইজারল্যান্ডের পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যৎ কি তাহলে অন্ধকার?

Schweizer Zuwanderungsabstimmung
কদিন আগে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়ছবি: picture-alliance/dpa

আল্পস পর্বতে বিখ্যাত ‘শোয়াইৎসারহোফ' হোটেলের ম্যানেজার আন্দ্রেয়াস স্যুলিশ বলেন, সুইজারল্যান্ড খুবই ছোট দেশ৷ হোটেলের প্রায় ৪০ শতাংশ কর্মীই বিদেশি – মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশ থেকে তাঁরা এসেছেন৷ শুধু পর্যটন নয়, স্বাস্থ্য পরিষেবা সহ অনেক ক্ষেত্রেই দেশের মধ্যে যথেষ্ট সংখ্যক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর অভাব রয়েছে৷

শুধু হোটেল-মালিক স্যুলিশ নন, এমন উৎকণ্ঠার সুর শোনা যাচ্ছে রসায়ন, ওষুধ, বায়ো প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রের অনেক সংস্থার কর্ণধারদের কণ্ঠে৷ অনেক কোম্পানিতে প্রায় অর্ধেক কর্মীই ইইউ নাগরিক৷ অনেকে বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী তিন বছরের মধ্যে গণভোটের রায় কার্যকর করা হলে তাদের সুইজারল্যান্ড থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে বিদেশে দপ্তর ও কারখানা খুলতে হবে৷ সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত নেসলে ও সোয়াচ কোম্পানিও প্রমাদ গুনছে৷ তাদের শীর্ষ পদে বিদেশিদের রমরমা৷

সুইজারল্যান্ডের গণভোটের রায়ের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে শুল্ক চাপাতে পারে বলে অনেক সুইস শিল্পপতি আশঙ্কা করছেন৷ তখন তাঁদের পক্ষে ইউরোপে রপ্তানি করা কঠিন হয়ে উঠবে৷

শিল্প জগতের একাংশ অবশ্য নতুন পরিস্থিতির মধ্যে নতুন সম্ভাবনার আলোও দেখতে পাচ্ছেন৷ তাঁদের মতে, এতকাল বড় বেশি ইউরোপের প্রতি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছিল৷ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে হলে এশিয়ার প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত বলে তাঁরা মনে করেন৷

বিদেশিদের উপর এত নির্ভরতা সত্ত্বেও সুইজারল্যান্ডের মানুষ গণভোটে এমন রায় দিলেন কেন? এর আংশিক উত্তর হয়ত লুকিয়ে রয়েছে পরিসংখ্যানের মধ্যে৷ দেশের জনসংখ্যা ৮০ লক্ষের সামান্য বেশি৷ তার মধ্যে প্রায় ২৪ শতাংশ – অর্থাৎ প্রায় এক-চতুর্থাংশই বিদেশি৷ গত বছরে এই সংখ্যা প্রায় ৩.৪ শতাংশ বেড়েছে৷ সে তুলনায় জার্মানির জনসংখ্যা প্রায় ৮ কোটি ২০ লক্ষ, যার মধ্যে ৯ শতাংশ বিদেশি৷ সুইজারল্যান্ডের বিদেশিদের মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই ইইউ এবং নরওয়ে, আইসল্যান্ড ও লিশটেনস্টাইনের নাগরিক, যাদের সুইজারল্যান্ডে বসবাস ও কাজ করার অধিকার রয়েছে৷ অন্তত এখনো পর্যন্ত তাই ছিল৷ গণভোটের রায় কার্যকর হলে তাঁরা সেই অধিকার হারাবেন৷

এসবি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য