বিক্ষোভে উত্তাল থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল ব্যাংকক৷ সহিংসতায় ৪ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে৷
আন্দোলনে সহিংসতা
সাত দিনের শান্ত কর্মসূচির পর রোববার থাইল্যান্ডের সরকারবিরোধী আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়৷ সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছে৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজধানী ব্যাংককে ২,৭০০ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷ নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ রয়েছে সেখানকার সব স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়৷
বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশের বাধা
সোমবার সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করে যখন প্রতিবাদকারীরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দখলের চেষ্টা করেন৷ সরকারবিরোধীরা একটি সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দখল করে নিয়েছে৷ মন্ত্রণালয়গুলোতে ঢোকার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিশ প্রচুর পরিমাণে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও জলকামান ব্যবহার করে৷
দু’পক্ষের সংঘর্ষ
ব্যাংককে শনিবার রাতেই মূলত বড় ধরনের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে৷ প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা’র সমর্থনে ওই দিন ব্যাংকক স্টেডিয়ামের চারপাশে জড়ো হয় সরকারপন্থী হাজার হাজার ‘রেড শার্ট’ সমর্থক৷ সেখানেই সরকারবিরোধীদের সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়৷
প্রধানমন্ত্রী-বিরোধী নেতা বৈঠক
রোববার রাতে থাইল্যান্ডের সরকারবিরোধী আন্দোলনের নেতা সুতেপ তাউকসুবান প্রধানমন্ত্রী ইংলাকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন৷ সেসময় প্রধানমন্ত্রীকে দুই দিনের মধ্যে পদত্যাগ করতে আলটিমেটাম দেন তিনি৷ সুতেপ জানান, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ইংলাকের সঙ্গে একটি গোপন স্থানে বৈঠক করেন তিনি৷ তাঁর অভিযোগ, সেখানে কোনো সমঝোতা ও সন্ধি স্থাপনের সুযোগ ছিল না৷
গণ-অভ্যুত্থানের ডাক
রোববার টেলিভিশনে বিরোধী নেতা সুতেপ তাউকসুবান সোমবার থেকে দেশে ধর্মঘটের ডাক দেন৷ রোববারকে তিনি ‘ভি-ডে’ (বিজয়ের দিন) ঘোষণা করে ঐ দিনকে ‘গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ বলে আখ্যা দেন৷ বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবারকে ‘‘বিশ্রাম দিবস'' ঘোষণা করে জানিয়েছে, বুধবার সারা দেশে আন্দোলন করা হবে৷
থাকসিনকে ফিরিয়ে আনার অভিযোগ
গত ১ নভেম্বর দেশ ছেড়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে ফিরিয়ে আনতে জোট সরকার তাঁর বিরুদ্ধে থাকা সব অভিযোগ প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয়ার পরই শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ৷ থাকসিন ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন৷ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হবার পর দেশ ছেড়ে যান তিনি৷
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি
দুর্নীতিসহ বেশ কিছু অভিযোগের যেসব মামলা রয়েছে, সেগুলো থেকে সরকার থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে রেহাই দিতে যাওয়ার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে বিরোধী দলগুলো৷ বিক্ষোভকারীদের দাবি, থাকসিনের বোন ইংলাক প্রধানমন্ত্রী হয়ে ভাইয়ের মতোই দেশ চালাচ্ছেন, সুতরাং ইংলাককে পদত্যাগ করতে হবে৷
শান্তিপূর্ণ সমাধানের সব পথ উন্মুক্ত
জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে পদত্যাগের দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা বলেছেন, জনগণকে সুখী করার জন্য তিনি যে-কোনো কিছু করতে প্রস্তুত৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে সংবিধানের আওতায় থেকেই সবকিছু করতে হবে৷ শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সবপথ খোলা রেখেছেন বলেও জানান তিনি৷