1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইহুদি-বিদ্বেষ

৭ মে ২০১৩

সোমবার হাঙ্গেরিতে বিশ্ব ইহুদি সম্মেলনে এ কথা বললেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে৷ বললেন, ‘‘ইউরোপে ইহুদি-বিদ্বেষের স্থান নেই৷ তাই আমাদের যৌথ মূল্যবোধকে সুরক্ষিত করতে হবে৷’’

https://p.dw.com/p/18TOu
ছবি: ATTILA KISBENEDEK/AFP/Getty Images

ইহুদি বিদ্বেষ ইউরোপে কিছু নতুন নয়৷ তার একটি চরম পরিণতি ঘটেছে হলোকস্টে৷ কিন্তু তা বলে ইউরোপ থেকে ইহুদি বিদ্বেষের বীজ পুরোপুরি লুপ্ত হয়নি, যার সর্বাধুনিক দৃষ্টান্ত হাঙ্গেরি৷ ২০১০ সালের নির্বাচন যাবৎ সেখানে ইহুদি – এবং ভবঘুরে রোমা উপজাতির প্রতি বিদ্বেষ যেভাবে মাথা চাড়া দিয়েছে, তা-তে বিশ্ব ইহুদি কংগ্রেস তাদের এবারকার সম্মেলন বুদাপেস্টে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেয়৷ প্রতি চার বছর অন্তর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, কাজেই এই সিদ্ধান্তের গুরুত্ব তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে৷

পূর্ব ইউরোপের একটি দেশে চরম দক্ষিণপন্থিরা নাৎসি স্যালুট দিচ্ছে, লোকজনকে ইহুদি মনে করে মারধোর করছে৷ কালো বুট পরা উগ্র-দক্ষিণপন্থিরা হলোকস্টের অতিবৃদ্ধ সাক্ষীদের ভয় দেখাচ্ছে৷ হালের হাঙ্গেরিতে এসব কিছুই ঘটছে৷ ২০১০ সালের নির্বাচনে চরম দক্ষিণপন্থি ‘জবিক' দল সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী হয়ে ওঠে৷

‘জবিক' ও ‘ফিদেস'

জবিক দলের একটি নিজস্ব মিলিশিয়া ছিল – কিংবা আছে – যাদের নাম হল হাঙ্গেরিয়ান গার্ড৷ এদের কালো উর্দি দেখলে নাৎসিদের কথা মনে পড়তে পারে৷ প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওর্বান-এর সরকার তাদের নিষিদ্ধ করলেও জবিকের বিভিন্ন সমাবেশে তাদের নিয়মিত দেখা যায়৷ গত শনিবারেও জবিক দল বুদাপেস্টে বিশ্ব ইহুদি সম্মেলন অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে একটি ‘‘অ্যান্টি-জিওনিস্ট'' বিক্ষোভের আয়োজন করে৷

Viktor Orban Premierminister Ungarn
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওর্বানছবি: Getty Images/AFP

ওর্বানের ফিদেস দল তিন বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও জবিকের ইহুদি বিদ্বেষ রোখার বিশেষ কোনো প্রচেষ্টা করেনি বলে অভিযোগ৷ প্রকাশ্য স্থানে নাৎসি অথবা কমিউনিস্ট প্রতীক ব্যবহার নিষিদ্ধ করার মতো কিছু হাল্কা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এই অবধি৷ আসলে ওর্বান সংসদে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে যে অতিমাত্রায় কর্তৃত্বমূলক শাসন চালাচ্ছেন, তা নিয়েই আপাতত ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাথাব্যথা৷ ওদিকে সাম্প্রতিক কয়েক মাস ধরে হাঙ্গেরিতে ইহুদি কবরখানায় ভাঙচুর কিংবা হলোকস্ট স্মৃতিসৌধের উপর নাৎসিদের স্বস্তিকা চিহ্ন আঁকার মতো ঘটনা ঘটে চলেছে৷ হাঙ্গেরিতে প্রায় এক লক্ষ ইহুদির বাস, ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম ইহুদি সম্প্রদায়৷

আশা-নিরাশা

পূর্ব ইউরোপের এক প্রাক্তন কম্যুনিস্ট দেশ, যার গণতান্ত্রিক বিকাশ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুশ্চিন্তা; সেখানে সংঘটিত হচ্ছে বিশ্ব ইহুদি সম্মেলন; সেই সম্মেলনে প্রদত্ত উদ্বোধনী ভাষণে হাঙ্গেরির বহু সমালোচিত প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওর্বান ঘোষণা করেছেন যে, ইহুদি-বিদ্বেষ ‘‘অগ্রহণযোগ্য এবং অসহনীয়''৷ কিন্তু তিনি জবিক দলের নামোল্লেখ পর্যন্ত করেননি৷ কাজেই ডাব্লিউজেসি-র হতাশ হওয়াটা বোধগম্য৷

সোমবার বুদাপেস্ট কংগ্রেসে বক্তৃতা দেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে৷ তিনি কিন্তু সম্মেলনকে হতাশ করেননি, প্রতিনিধিরা স্ট্যান্ডিং ওভেশন দিয়ে যার স্বীকৃতিও জানিয়েছেন৷ ভেস্টারভেলের অবস্থান ছিল স্পষ্ট: ‘‘বার্লিন কি বুদাপেস্তে ইহুদি-বিদ্বেষের স্থান নেই৷ ইউরোপে কি বিশ্বের বাকি কোথাও ইহুদি-বিদ্বেষের স্থান নেই৷ আমাদের যৌথ মূল্যবোধকে সুরক্ষিত করতে হবে৷''

সেই মূল্যবোধ রক্ষার পন্থা সম্পর্কে ভেস্টারভেলের ধারণা অনুরূপ স্পষ্ট: সদস্যদেশগুলিতে জাতিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাতে আরো কার্যকরি আইনি অস্ত্রের প্রয়োজন৷ অর্থাৎ ইইউ'তে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার জন্য যা প্রয়োজন, ইহুদি বিদ্বেষ রোখার জন্য ঠিক সেই অস্ত্রই দাবি করলেন ভেস্টারভেলে৷ সবচেয়ে বড় কথা, তিনি জবিক দলের উল্লেখ করতে পিছপা হননি৷

এসি/ডিজি (ডিপিএ, এপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য