1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতীয় চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধের দাবি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৮ জুলাই ২০১৪

ঈদে ‘পাখি ড্রেস’ নিয়ে উৎসাহ আতঙ্কে পরিণত হয়েছে৷ এই পোশাক না পেয়ে দুই কিশোরীর আত্মহত্যার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে বাংলাদেশে ভারতীয় একটি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের দাবি উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/1CjkI
Deepika Padukone Schauspielerin aus Indien
ছবি: DW/P. M. Tewari

ভারতের বিনোদনমূলক টিভি চ্যানেল স্টার জলসার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘বোঝে না সে বোঝে না'৷ তারই একটি নারী চরিত্রের নাম পাখি৷ সিরিয়ালে চরিত্রটি যে থ্রি-পিস পরেন তা-ই বাংলাদেশে পাখি ড্রেস নামে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ এবারের ঈদে কিশোরী ও তরুণীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে এই পোশাক৷

রবিবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় নূরজাহান খাতুন (১৪) নামে এক কিশোরী ঈদে পাখি ড্রেসের আবদার করেও না পেয়ে রাগে অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে৷ পুলিশ ও তার পরিবারের লোকজন জানান, ঈদ উপলক্ষ্যে নূরজাহান তার মা ও বড় বোনের কাছে পাখি ড্রেস চায়৷ ওই পোশাক কিনে না দেওয়ায় রবিবার নূরজাহানের সঙ্গে তার মা ও বোনের ঝগড়া হয়৷ এরপর কষ্টে-অভিমানে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে নূরজাহান৷

এর আগে গত ৯ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আরেক কিশোরী হালিমা খাতুন (১৫) একইভাবে পাখি ড্রেস না পেয়ে আত্মহত্যা করে৷ হালিমা তার বাবাকে ঈদের জন্য পাখি ড্রেস কিনে দিতে বলার পরও তার বাবা অন্য পোশাক কিনে আনায় সেও অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে৷ হালিমা স্থানীয় মাহিদুর রহমান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল৷

এই দু'টি মর্মান্তিক ঘটনায় বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেল বিশেষ করে স্টার জলসার বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে৷ বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক এবং বিভিন্ন ব্লগে সমালোচনার ঝড় বইছে৷ তারা বেশ কয়েকটি ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বাংলাদেশে বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. সফিউল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কর্পোরেট পুঁজি নানাভাবে ভোক্তা শ্রেণি গড়ে তুলতে চায়৷ তারা নাটক বা সিরিয়ালের মাধ্যমে কৌশলে পণ্য উপস্থাপন করে তার বাজার সৃষ্টি করে৷ ‘পাখি ড্রেস' তার একটি বড় উদাহরণ৷'' তিনি বলেন দর্শকদের ভেতর ভোগের মানসিকতা তৈরি করে তারা৷ এতে প্রলুব্ধ হয়ে কেউ যখন সেই ভোগ্যপণ্য না পান তখন তিনি হীনমন্যতায় ভোগেন৷ এর ফলে আত্মহত্যা ছাড়াও নানা অপরাধ করতে পারেন তারা৷

ড. সফিউল আলম বলেন এটা প্রতিরোধে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা৷ এছাড়া যারা এধরণের সিরিয়াল প্রচার করে তারা যেন সেটা বন্ধ করে সেজন্য সামাজিক চাপ সৃষ্টি করা প্রয়োজন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনো গণমাধ্যমের সম্প্রচার বন্ধের বিরোধী৷ তবে তা যদি মৃত্যুর মতো ক্ষতির দিকে নিয়ে যায় তাহলে সরকার সেই ধরণের সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে পারে৷''

এদিকে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে ভারতের স্টার জলসাসহ বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে৷ তারা ক্ষতিকর অনুষ্ঠান সম্প্রচার বন্ধ না করলে বাংলাদেশে তাদের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হতে পারে৷

ঢাকার ঈদের পোশাকের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ভারত থেকে আসা পাখি ড্রেসে বাজার সয়লাব৷ পাখি ড্রেসের ব্যাপক চাহিদার সঙ্গে এর দামও বেশি৷ তিন হাজার টাকার নীচে কোনো পাখি ড্রেস নেই৷ আর সর্বোচ্চ লাখ টাকা দামের পাখি ড্রেসও আছে৷ ফলে অনেকের সাধ থাকলেও সাধ্যে পাখি ড্রেস কুলোচ্ছে না৷ যার পরিণতি হচ্ছে ভয়াবহ৷ ঘটছে আত্মহত্যার মতো ঘটনা৷ এমনকি সংসার ভাঙার খবরও প্রকাশ হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য