1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বহুজাতিক পুঁজি ও রাষ্ট্রনেতাদের সমালোচনায় মুখর ‘বিশ্ব সামাজিক ফোরাম’

২৯ জানুয়ারি ২০১০

কোপেনহেগেনে বিশ্ব জলবায়ু চুক্তির ব্যর্থতা, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিশ্বজুড়ে খনিজ সম্পদ শোষণ ও পরিবেশ ধ্বংস এবং বিশ্ব-অর্থনীতিতে বহুজাতিক পুঁজির একচেটিয়ার অভিযোগে মুখর ‘বিশ্ব সামাজিক ফোরাম’৷

https://p.dw.com/p/Ln64
ছবি: AP Graphics

ডাভোসে ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম'-এ ব্যবসায়ী ও রাষ্ট্রনেতাদের বার্ষিক সম্মেলনের পাল্টা সমাবেশ হিসেবে প্রতিরোধী-বুদ্ধিজীবীদের এ ফোরামের ১০ম সম্মেলন শুক্রবার শেষ হচ্ছে ব্রাজিলের পোর্টো অ্যালেগ্রে-তে৷

‘বিশ্ব সামাজিক ফোরাম' এর আন্দোলনকর্মীরা বলছেন, কোপেনহেগেনে নতুন একটি বিশ্ব জলবায়ু চুক্তি করতে না পারার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে যে, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনেতারা মানবজাতির কল্যাণের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তটি নিতেও কতোটা ব্যর্থ৷

দক্ষিণ আফ্রিকার ‘সেন্টার ফর সিভিল সোসাইটি'র প্যাট্রিক বন্ড বলেন, ‘‘এতে এটাই প্রমাণ হয়েছে যে জলবায়ুর প্রশ্নে নতুন একটি বিশ্বব্যবস্থা গড়ার প্রশ্নে জনগণ আর এই এলিটদের বিশ্বাস করতে পারে না৷'' সম্মেলনের চতুর্থ দিনে বৃহস্পতিবার একইসঙ্গে তিনি বলেন, ধনী এবং বাজার-অর্থনীতির উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশ্বউষ্ণায়নকারী জীবাশ্মজ্বালানির ব্যবহার সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখছে৷

ক্যানাডার জৈব-প্রযুক্তি এ জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ প্যাট মুনি বলেন, যে কোম্পানিগুলো বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী হিসেবে অভিযুক্ত তারাই এখন বলছে, ‘‘আমাদের বিশ্বাস করো, আমরাই তোমাদেরকে এই সংকট থেকে বের করে আনবো৷'' সম্মেলনের তৃতীয় দিনে বুধবার ফোরাম নেতারা অভিযোগ করেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন করার পর এখন ধনীদেশ এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোই কার্বন নির্গমন কমানোর প্রক্রিয়ার কোটি কোটি ডলারের বাজার দখল করা নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র করছে৷

Paul Singer beim FSM 2010
ফোরামের বক্তারাছবি: DW

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আলোচকরা বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার পর এখন দৈত্যাকার সব তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই দেশে দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং পরিবেশ ধ্বংস করা থেকে প্রতিহত করতে হবে৷ পেরুতে আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের ভূমি থেকে উৎখাত করে সেখানে সোনা, রূপা ও দস্তার খনি খুঁড়ছে দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলো৷ পেরুর উদাহরণ দিয়ে দেশটির খনি-বিরোধী গ্রুপের নেতা কার্লোস ক্যানিডিয়োত্তি ফোরামকে বলেন, ‘‘আমাদের অনুমোদন ছাড়াই এই কোম্পানিগুলো আমাদের ভূমিতে এসেছে৷ কিন্তু রাষ্ট্রের অবশ্যই আমাদের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া উচিৎ৷ কারণ আমরা যেখানে বাস করি পূর্ব-পূরুষের উত্তরাধিকারসহ সেই ভূমির মালিক আমরাই৷''

বিশ্বের নানাপ্রান্ত থেকে সমবেত হওয়া কয়েক শত বামপন্থি আন্দোলনকর্মী এবং স্খানীয় হাজারো স্বেচ্ছাসেবক-কর্মীদের সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্য দিয়ে গত ২৫শে জানুয়ারি ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর পোর্টো অ্যালেগ্রেতে শুরু হয় পাঁচদিনব্যাপী এই সম্মেলন৷ জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো পর্যবেক্ষক হিসেবে এই সম্মেলনে অংশ নিয়ে থাকে৷

দশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এবার ‘বিশ্ব সামাজিক ফোরাম' এর এই সম্মেলনে ছিল বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনা৷ ২০০১ সালে এই পোর্টো অ্যালেগ্রেতেই বসেছিল ফোরামের প্রথম আসর৷একই নগরে পরপর তিনটি সম্মেলনের পর চতুর্থ সম্মেলন হয় ভারতের মুম্বাইয়ে৷ পঞ্চম আসরে ঘরে ফিরে এসে ষষ্ঠ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় একইসঙ্গে ভেনেজুয়েলার কারাকাস, মালির বামাকো এবং পাকিস্তানের করাচিতে৷ সপ্তম সম্মেলন ছিল কেনিয়ার নাইরোবিতে৷ কোনো একটি একক স্থানে একক অনুষ্ঠান না করে অষ্টম বছরে বিশ্বের নানা প্রান্তে বহু আয়োজন করেছিল এই ফোরাম৷ দশম সম্মেলনে আবারও ঘরে ফেরার আগে নবম সম্মেলনটি হয়েছে ব্রাজিলেরই বেলেম নগরীতে৷

প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক