1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ত্বকের ক্যানসার

লিজা কিটেল/এসি৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

ত্বকের ক্যানসারে ত্বকের কোষগুলি কিভাবে বদলায়, গবেষকরা সেটা অনুসন্ধান করে দেখেছেন৷ উদ্দেশ্য হলো, এমন একটা ক্রিম আবিষ্কার করা, যা এই প্রক্রিয়াকে রুখতে কিংবা বিলম্বিত করতে পারবে৷

https://p.dw.com/p/17XPn
ছবি: DW/Al Farra

যেন একজন প্রাপ্তবয়স্ক হঠাৎ আবার শিশুতে পরিণত হয়ে দ্বিতীয়বার বাড়তে শুরু করেছে – কিন্তু অসুস্থ হয়ে৷ ত্বকের একটি সাধারণ কোষ এইভাবেই টিউমারে পরিবর্তিত হয়৷ যেন তার কম্প্যুটার প্রোগ্রামটা উল্টে দেওয়া হয়েছে৷ ব্রাসেলস ফ্রি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই তথ্যটি আবিষ্কার করেছেন৷ তাঁরা তথাকথিত ‘বাসাল সেল ক্যানসার'-এর টিউমারগুলি নিয়ে গবেষণা করেন৷ এই জাতের ক্যানসার প্রধানত ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেখা যায়, যে কারণে এককালে এটাকে ‘শ্বেত' ত্বকের ক্যানসার বলা হতো৷

বিজ্ঞানীরা এযাবত জানতেন, ত্বকের স্টেম সেলগুলোর মিউটেশন হয়েই ত্বকের ক্যানসারের সেল তৈরি হয়৷ ত্বকের স্টেম সেলগুলি সাধারণত ত্বক যাতে কাটাছেঁড়ার পর নিয়মিত সারে, তার ব্যবস্থা করে৷ কিন্তু তারা যখন মিউটেট করে, অর্থাৎ তাদের ডিএনএ বদলে যায়, তখন তারা যথেচ্ছ বংশবৃদ্ধি করতে শুরু করতে পারে৷ ক্যানসার গবেষক সেড্রিক ব্লঁপ্যাঁ কিন্তু দেখাতে সমর্থ হয়েছেন যে, শুধু স্টেম সেলগুলিই নয়, ত্বকের সাধারণ, সুস্থ কোষগুলোও এই উল্টো প্রোগ্রামিং-এর ফলে ক্যানসারের সেলে পরিণত হতে পারে৷

হাইডেলবের্গে জার্মান ক্যানসার গবেষণা কেন্দ্রের মার্টিন স্পিক মনে করেন, ত্বকের সাধারণ কোষ এবং স্টেম সেল, দু'টো থেকেই ক্যানসারের উৎপত্তি হতে পারে৷ যার ফলে সংশ্লিষ্ট টিউমারগুলিও বিভিন্ন আকার ও প্রকৃতি পায়৷ আসল কথা হল, ত্বকের সাধারণ কোষগুলির প্রোগ্রাম পাল্টে দিলে তারা ধীরে ধীরে এমব্রিয়োনাল স্টেম সেলের আকৃতি ধারণ করে৷

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রচার
ছবি: AP

এই এমব্রিয়োনাল স্টেম সেলগুলিকে বস্তুত শুধু ভ্রূণের মধ্যেই পাওয়া যায়৷ স্টেম সেলগুলো প্রয়োজনে মানুষের শরীরের যে কোনো অঙ্গ গঠন করতে পারে৷ তাদের কাজই হল, কোষের ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করা৷ তবে জন্মের পর মানুষের শরীরে যে ধরণের স্টেম সেল পাওয়া যায়, সেগুলোর বিকাশ সম্পূর্ণ হয়েছে৷ তারা বিশেষ বিশেষ ধরনের কোষে নিজেদের পরিবর্তন করতে পারে, কিন্তু সব কোষে নয়৷ কাজেই এই ‘প্রাপ্তবয়স্ক' স্টেম সেলগুলি অতো সহজে ক্যানসার সেলে পরিবর্তিত হতে পারে না, যেমন ভ্রূণের স্টেম সেলগুলি পারে৷

কিন্তু ত্বকের কোষগুলো যদি তাদের প্রোগ্রাম বদলে এক ধরনের এমব্রায়োনিক স্টেম সেলে পরিবর্তিত হয়, তাহলে বোঝা যাবে, ত্বকের ক্যানসার কেটে বাদ দেওয়া সত্ত্বেও বার বার ফিরে আসে কেন৷ কেননা ক্যানসারের উৎপত্তির ঐ স্টেম সেলগুলি ক্যানসারগ্রস্ত কোষসমষ্টিও ঠিক একই ভাবে মেরামত করে - যা তাদের স্বভাব৷ তার ফলে ক্যানসার আবার ফিরতে ও বাড়তে পারে৷

ব্রাসেলস'এর বিজ্ঞানীরা যেটা করেছেন, সেটা হল এই যে, তারা দেখিয়েছেন, আদত যে কোষগুলো থেকে ক্যানসারের শুরু, সেগুলো নিজেদের ক্যানসার সেলে বদলাতে পারে, একমাত্র যখন তারা বেটা-ক্যাটেনিন নামের একটি জৈব-রাসায়নিক সঙ্কেত পায়৷ এই বিশেষ ধরনের প্রোটিনগুলি কোষের ভিতরে সেই বার্তা পৌঁছে দেয়৷

ঐ সঙ্কেত যাওয়ার পথটি আটকে দিতে পারলে, উল্টো প্রোগ্রামিং করা, স্টেম সেলের অনুরূপ ত্বকের কোষগুলি থেকে টিউমারের সৃষ্টি হতে পারে না৷ কাজেই বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে এমন একটি ত্বকের ক্রিম উদ্ভাবন করার আশা করছেন, যা কোষের অভ্যন্তরে ক্যানসার তৈরীর ঐ বার্তা পৌঁছনো বন্ধ করতে পারবে৷ সানবেদিং'এর সময় যে সান ক্রিম মাখা হয়, তা'তে ঐ পদার্থটি মিশিয়ে দিলেই চলবে৷ পশ্চিমে সূর্যস্নান করতে গিয়ে সানবার্নের বিপদ ছাড়াও, শেষমেষ ত্বকের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি থাকে৷ কাজেই এ'টা এক ঢিলে দুই পাখির মতো কাজ করবে৷ ক্রিমটা যেখানে লাগানো হবে, বড়জোর সেখানে কিছুটা লোম উঠে যেতে পারে - সৌন্দর্যের দৃষ্টিকোণ থেকে যেটা বিশেষ অকাম্য নাও হতে পারে৷

২০১২ সাল থেকেই এই ধরণের একটি বড়ি বাজারে এসেছে, যা ত্বকের ক্যানসারের শ্বেতাঙ্গ রোগীদের দেওয়া হয়৷ এই ট্যাবলেটও ক্যানসার তৈরীর সঙ্কেত প্রেরণের অপর একটি পথ রোধ করে৷ কিন্তু এই ট্যাবলেট সারা শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে৷ পদার্থটি ক্রিম হিসেবে পাওয়া গেলে, তা স্থানীয় ভাবে প্রয়োগ করা যাবে বলে আশা করছেন গবেষকরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান