1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির চেয়ে এগিয়ে অ্যামেরিকা

৩ জুন ২০১৪

শিল্পকারখানা চলে বিদ্যুতে৷ যদি একটি জার্মান শিল্পসংস্থার বিদ্যুতের বিল গত পাঁচ বছরে ৭০ শতাংশ বেড়ে থাকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হয়তো তা কমেছে বিশ কি বাইশ শতাংশ৷ জার্মানি চায় ‘সবুজ জ্বালানি’, যুক্তরাষ্ট্র চলে ফ্র্যাকিং-এ৷

https://p.dw.com/p/1CAdK
DW Im Fokus Fracking

রয়টার্সের দুই প্রতিবেদক জার্মানির বুর্গহাউজেন থেকে লুইজিয়ানা'র গাইসমার অবধি ঘুরে এসে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, বিশ্বের বৃহত্তম দুই শিল্পশক্তির মধ্যে প্রতিযোগিতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল সুবিধা হলো, যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুতের দাম কমছে, অথচ জার্মানিতে বাড়ছে৷

বুর্গহাউজেনের ভাক্যার শেমি বা ভাক্যার কেমিকালস একটি সুবিশাল রাসায়নিক সংস্থা, যাদের উৎপাদিত সব রাসায়নিক চিউয়িং গাম থেকে শুরু করে সোলার সেল তৈরি'তে কাজে লাগে৷ ভাক্যার'এর মূল কারখানাটি হলো দক্ষিণ জার্মানির বুর্গহাউজেনে৷

বিদ্যুতের দাম

গত পাঁচ বছরে ভাক্যার সংস্থার ইলেকট্রিসিটি বিল ৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ কোটি ইউরো'য়৷ সে তুলনায় মার্কিন মুলুকের লুইজিয়ানার হান্টসম্যান কর্পোরেশন নামধারী রাসায়নিক সংস্থাটির বিদ্যুতের বিল গত সাত বছরে কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ৷

একদিকে জার্মান সরকার তথা জনগণের সিদ্ধান্ত যে, দেশ পরমাণু শক্তি থেকে বিদায় নিয়ে তথাকথিত ‘সবুজ শক্তি' বা নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর নির্ভরশীল হবে৷ অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ফ্র্যাকিং'-এর কল্যাণে প্রাকৃতিক গ্যাস, ও তার ফলশ্রুতি হিসেবে বিদ্যুতের দাম কমেই চলেছে৷

জার্মান শিল্পসংস্থাগুলিকে আজ গড়ে কিলোওয়াট ঘণ্টা প্রতি ১৫ (ইউরো) সেন্ট মূল্য ধরে দিতে হয়৷ সেখানে লুইজিয়ানার শিল্পসংস্থাগুলির জন্য বিদ্যুতের দাম পড়ে কিলোওয়াট ঘণ্টা প্রতি আধ (মার্কিন) সেন্ট৷ সাধে কি হান্টসম্যান'এর সিইও পিটার হান্টসম্যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র'কে বলেন কম খরচে শিল্পোৎপাদনের নতুন আন্তর্জাতিক মান৷ অ্যামেরিকায় একটি পেট্রোকেমিকাল কারখানা বসাতে নাকি ইউরোপের চেয়ে ১২৫ মিলিয়ন ডলার কম খরচা হয়৷

জ্বালানি নীতি ও তার ফল

অথচ ২০১১ সালেও মার্কিন রাজনীতিকরা জার্মানিকে ম্যানুফ্যাকচারিং সাফল্যের আদর্শ হিসেবে তুলে ধরছিলেন৷ আজ আর কেউ সে'কথা বলেন না৷ তার মূল কারণ হলো জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল'এর নতুন জ্বালানি নীতি৷ ম্যার্কেল চান আরো বেশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার এবং সেই পন্থায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবদান রাখতে ও বিদেশ থেকে আমদানি করা তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো৷

ওদিকে জার্মান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বলছে, জার্মানির অর্ধেক শিল্পসংস্থার বিশ্বাস যে, জার্মানির জ্বালানি নীতির ফলে তাদের বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার মোকাবিলা করার ক্ষমতা কমছে৷ তাদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ নাকি উৎপাদন বিদেশে স্থানান্তরিত করছে অথবা করার কথা ভাবছে৷ এবং সেই বিদেশ বলতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বোঝায়৷

Infografik Erdgasgewinnung durch Fracking RUS
জার্মানি চায় ‘সবুজ জ্বালানি’, যুক্তরাষ্ট্র চলে ফ্র্যাকিং-এ

যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ

বিশ্বের বৃহত্তম লাক্সারি কারমেকার, জার্মানির বিএমডাব্লিউ কোম্পানি গত মার্চে ঘোষণা করেছে যে, তারা সাউথ ক্যারোলাইনা'য় তাদের কারখানাটিতে আরো এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চলেছে - ফলে স্পার্টানবার্গের কারখানাটি সারা বিশ্বে বিএমডাব্লিউ'র বৃহত্তম কারখানায় পরিণত হবে৷

বলতে কি, ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জার্মান শিল্পসংস্থাগুলি মোট ৮০০ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করেছে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে - এ হলো জার্মান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান৷ জার্মান বণিক সমিতি বলছে, ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জার্মান বিনিয়োগ ২০০ বিলিয়ন ইউরোয় পৌঁছবে, যা কিনা একটা রেকর্ড৷

যে সব জার্মান শিল্পসংস্থা যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করছে, তাদের মধ্যে স্বভাবতই ভাক্যার শেমি আছে৷ তারা যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি রাজ্যে একটি নতুন পলিসিলিকন কারখানা খাড়া করছে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার খরচ করে৷

মাত্র ছ'বছর আগে ফ্র্যাকিং যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় হয়৷ এই ছ'বছরে মার্কিন মুল্লুকে জ্বালানির দাম পড়েছে প্রায় ৬১ শতাংশ৷ তার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও তা আরো বেশি করে কাজে লাগানো হচ্ছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলির এক-তৃতীয়াংশ আজ ফ্র্যাকিং-লব্ধ প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে৷

এসি/জেডএইচ (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য