মৈত্রী চুক্তির ৫০ বছর
২২ জানুয়ারি ২০১৩এলিসে চুক্তির গুরুত্ব ফ্রান্স ও জার্মানির কাছে আজও অসীম৷ সেই চুক্তির অর্ধশতাব্দী পূরণ উপলক্ষ্যে হালের ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ বার্লিনে এসেছেন; তিনি এবং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ২০০ জার্মান ও ফরাসি ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন; দু'দেশের মন্ত্রীসভার ও প্রায় ৪০০ সাংসদদের পৃথক পৃথক যৌথ অধিবেশন হচ্ছে স্মারক দিবসে৷
বৃহত্তর আঙ্গিকেও এই চুক্তিকে ইউরোপীয় ঐক্যের ভিত্তিপ্রস্তর বলা হয়৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে ও ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরঁ ফাবিয়ুস এলিসে চুক্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি জার্মান পত্রিকাকে যুগ্ম সাক্ষাৎকার দিয়েছেন৷ সেই সাক্ষাৎকারে তাঁদের বক্তব্য হলো: ইউরোপ মূল সমস্যা নয়, ইউরোপ হল সমস্যার সমাধান৷ তাঁরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরে ভাঙনের বিপদ রুখতে চান৷ ইউরোপীয় ঋণ সংকটের ফলে যে জাতীয়তাবাদী প্রবণতার সৃষ্টি হয়েছে, তার মোকাবিলা করতে চান৷
আডেনাউয়ার এবং দ্য গল, মিতেরঁ এবং কোল, সার্কোজি এবং ম্যার্কেল – সর্বোচ্চ পর্যায়ে ফরাসি-জার্মান মৈত্রী ও সখ্যতার বিভিন্ন পরিচয় অতীতে পাওয়া গেছে৷ ওলঁদকে ঠিক ম্যার্কেলের বন্ধু পর্যায়ে ফেলা চলে না, অন্তত গতকাল অবধি চলত না৷ ইউরোজোন এলাকার সমস্যা দূর করার পন্থা নিয়ে উভয়ের মতপার্থক্য রয়েছে: ওলঁদ চান সরকারি ব্যয় বাড়াতে, ম্যার্কেল তা কমাতে৷
২০১১ সালে লিবিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের সময় জার্মানি দূরে থেকেছে৷ এবার মালিতেও জার্মান সৈন্য পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা বার্লিনের নেই৷ ফ্রান্সের সঙ্গে এক্ষেত্রে জার্মানির দৃষ্টিভঙ্গির এই ফারাককে ম্যার্কেল স্বীকার করেছেন, কিন্তু গুরুত্ব দিতে চাননি৷ জার্মানি যে তার সহযোগীকে একা রাখবে না, সে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন৷
৫০ বছর আগে এলিসে প্রাসাদে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তার মূল সূত্র ছিল, উভয় দেশ বিদেশনীতি ও প্রতিরক্ষানীতির ক্ষেত্রে মন্ত্রীপর্যায়ে নিয়মিত বৈঠক ও আলাপ-আলোচনা করবে৷ লিবিয়া কি মালির ক্ষেত্রে তা-তে বিশেষ লাভ হয়নি৷ অপরদিকে দুই দেশের মধ্যে মানবিক পর্যায়ে এক নতুন, আন্তরিক ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যে কখন তার স্থান করে নিয়েছে, দুই প্রতিবেশির কেউই সেটা খেয়াল করেনি৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)