1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অবৈধভাবে নির্মিত হয় রানা প্লাজা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৪ এপ্রিল ২০১৩

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভারে রানা প্লাজা নামের যে বহুতল ভবনটি ধসে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেই ভবনটি অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে৷ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে নোটিশ দেয়ার পরও লোকজন সরিয়ে নেয়া হয়নি৷

https://p.dw.com/p/18Lyi
ছবি: Reuters

রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটি নির্মাণ করা হয় ২০০৯ সালে৷ এর মালিক শাসক দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন সাভার পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক সোহেল রানা৷

এই ভবনটি যেমন সরকারী খাস জমির ওপর অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে৷ তেমনি ভবন নির্মাণে নেয়া হয়নি কোনো অনুমোদন৷

রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নূরুল হুদা ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁরা সাভারে রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবন নির্মাণের কোনো অনুমোদন দেননি৷ তাহলে কীভাবে নির্মাণ করা হল? এই প্রশ্নের জবাবে সাভার পৌর মেয়র রেফায়েত উল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, সাভার পৌর এলাকায় ৬ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণে পৌরসভার অনুমোদন হলেই চলে৷ কিন্তু এর চেয়ে বেশি তলার ভবন করতে হলে রাজউকের অনুমোদন লাগে৷ সোহেল রানা ৬ তলার অনুমোদন নিয়ে অবৈধভাবে ১০ তলা বানিয়েছেন৷ পৌর মেয়র জানান, ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়ার পর তাঁরা ভবনটি খালি করার নোটিশ দেন ২ দিন আগে৷ কিন্তু ভবন মেরামত না করেই উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ক্ষমতার জোরে সোহেল রানা মাইকিং করে বুধবার সকালেই ভবনটিতে সবাইকে ফিরে আসতে বলেন৷ আর সবাই ফিরে এলে ভবনটি ধসে পড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে৷ প্রাণ হারায় শতাধিক নারী পুরুষ৷

সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে এই ভবনে নানা ধরনের দোকানপাট, শো রুম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি অফিস, ব্যাংক-বিমা এবং ৫টি তৈরি পোশাক কারখানা ছিল৷ ভবন ধসে পড়ার সময় ৬ হাজারের মত মানুষ ছিলেন ভবনটিতে৷ সাভার পৌরসভার প্রকৌশলী ইনতেমাম হোসেন জানান, তাঁদের কাছ থেকেই ভবনের নকশা পাশ করা হয়৷ কিন্তু ভবনটি তৈরির সময় সে নকশা মানা হয়নি৷ আর ব্যবহার করা হয় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী৷ সে কারণেই ভবনের ৬টি পিলারে ফাটল দেখা যায়৷ তারা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে নোটিশ দেয়ার পরও যুবলীগ নেতা সোহেল রানা তাদেরকে পাত্তা দেননি৷

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঙ্গলবার বিকেলে ভবনটি পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, কয়েকটি পিলারে ফাটল দেখা গেলেও ঝুঁকির কোনো কারণ নেই৷ তাঁর সঙ্গে ভবনের মালিক সোহেল রানাও ছিলেন৷ ফলে রাতেই ভবনটির সব প্রতিষ্ঠান আবার চালু হয়৷ তবে উপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবির হোসেন সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটি যখন আবার চালু করা হয় তখন তা বন্ধে পৌরসভা পুলিশের সহায়তা চাইলেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটতো না৷

রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটির সংলগ্ন এলাকায় জলাভূমি এবং নিম্নভূমি আছে৷ পৌর প্রকৌশলী জানান, পুকুর ভরাট করে নরম মাটিতে ভবনটি নির্মাণের জন্য ঠিকমতো পাইলিংও করা হয়নি৷ নির্মাণের সময় তাঁরা এ বিষয়ে বার বার তাগাদা দিয়েছেন৷ নির্মাণকাজ বন্ধও রাখা হয়েছিল৷ কিন্তু সোহেল রানা প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁকে আটকানো যায়নি৷ সে ভবনের আন্ডার গ্রাউন্ডে পার্কিং ছাড়াও অফিসের জন্য ভাড়া দিয়েছিল৷ ভবন ধসের পর থেকে যুবলীগ নেতা সোহেল রানা পলাতক আছেন৷ আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দিন খান আলমগীর বলেছেন, এই মর্মন্তুদ ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷

২০০৯ সালে এই ভবনটি নির্মাণের পর এক জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল৷ অবৈধভাবে ভবনটি নির্মাণ করা হলেও সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিসহ সংসদ সদস্য তৌহিদ জং মুরাদও উপস্থিত ছিলেন৷ তাঁরা তখন এই অবৈধ কাজকেই উৎসাহ দিয়েছেন৷ আর তখন উৎসাহ না দিলে এত মানুষের প্রাণ যেতনা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য