1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতিবাদী টাকার নোট বাজার থেকে সরাতে গিয়ে ঝক্কিতে ইরান

৮ জানুয়ারি ২০১০

ইরানে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নতুন এক রূপে উপস্থিত৷ আর সেই অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণান্ত হচ্ছে তেহরান সরকার৷ সরকার বিরোধী সবুজ আন্দোলনের শ্লোগান লেখা হয়েছে টাকার নোটের ওপর৷ নোট হয়ে উঠেছে মিনি গ্রাফিতি৷

https://p.dw.com/p/LOMT

ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অসহায় হয়ে পড়েছে প্রতিবাদী টাকার নোট বাজার থেকে সরাতে গিয়ে৷ বৃহস্পতিবারই ছিল শ্লোগান লেখা সব ব্যাংকনোট বাজার থেকে সরিয়ে নেয়ার চূড়ান্ত দিন৷ কিন্তু তা কি সম্ভব?

প্রতিবাদের কি সূক্ষ্ম এক উপায়৷ ইসলামী সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান টাকার নোটের ওপর৷ কিন্তু এরকম অসংখ্য নোট এই চূড়ান্ত সময়সীমার মধ্যে সরিয়ে ফেলা কি আদৌ সম্ভব? সাধারণ মানুষ এই সময়সীমাটাকে কি খুব গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করেছে? তেহরানের একটি কারখানা চালান এব্রাহিম এসমাতি৷ তিনি বলছেন: আমরা এই চূড়ান্ত সময়সীমার ব্যাপারটা তেমন খেয়াল করিনি৷ শুধু শুনেছি যে নোটগুলো তুলে নিতেই হবে৷ আমার আশপাশে যাঁরা থাকেন তাঁরাও যে এই সময়সীমাটা খুব গুরুত্ব দিয়ে নিয়েছে, এমন মনে হয় নি৷

ইরানের সরকার সমর্থক কট্টর সাংসদরা খবই রুষ্ট নতুন ধরণের এই প্রতিবাদে৷ প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের অনুসারী সাংসদ এজাতোলা ইউসেফিয়ান মনে করেন, এই ব্যাংক নোটগুলো ‘‘ইসলামী রাষ্ট্রের শান্তি আর নিরাপত্তার খুঁটিগুলোকে নাড়িয়ে দিচ্ছে৷''

তেহরানের এক মহিলা কিন্তু তা মনে করেন না৷ তিনি বলছেন, আমার কাছে প্রায় ১০০ খানা নোট আছে৷ ব্যাংকে গিয়ে এগুলো বদলে নতুন নোট আনার কথা আমি ভাবছি না৷

বিরোধী সবুজ আন্দোলন স্বভাবতই প্রতিবাদের এই পদ্ধতিকে বিরোধীদের শ্লোগান ছড়িয়ে দেয়ার এক ফলপ্রসূ উপায় হিসেবে দেখছে৷ বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিরুদ্ধে অসামরিক মানুষের প্রতিবাদ নৃশংসভাবে দমন করা হয় ইরানে৷ তারপর থেকে সরকারবিরোধীরা প্রতিবাদের এরকম অদৃশ্য মাধ্যমের কথা ভেবেছেন যার প্রচার নিয়ন্ত্রণ করা কোনমতেই সম্ভব নয়৷ যার ওপর রাষ্ট্রীয় দলনের স্টিমরোলার চালানো যায় না, লাঠি চালানো যায় না, যাকে সম্ভব নয় গ্রেপ্তার করা৷

Flash-Galerie Geldscheine Iran Protest

ব্যাংক নোটের ওপর প্রতীকী সবুজ কালি দিয়ে লেখা হয়েছে এইসব শ্লোগান: ‘‘ইরানের জনগণ যেভাবেই হোক সুবিচার পাবেই'', ‘‘মুক্তির জয় হোক''৷ কিছু নোটে স্থান পেয়েছে নেদা আঘা-সোলতান'এর বিশ্ববিখ্যাত ছবি৷ তার সঙ্গে স্লোগান - ‘‘স্বৈরশাসক খতম হোক''৷ নেদা হলেন জুন মাসের প্রেসিডেন্ট

নির্বাচনের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত প্রতিবাদের প্রতীক৷ ২৬ বছর বয়স্কা নেদাকে তেহরানের এক রাস্তায় গুলি করে হত্যা করা হয়৷

ইরানের দুশোটি শহর থেকে অসংখ্য শ্লোগান লেখা নোট সরিয়ে ফেলা সহজ কাজ নয়৷ আর একটা বাধা, ইরানের অধিকাংশ মানুষ নগদ টাকায় লেনদেন করে৷ অর্থনীতিবিদ মোহসেন শামশিরি বলছেন, সবসময়ই নগদ লেনদেনের কারণে ব্যাংকনোট ছড়িয়ে পড়ছে৷ নোটগুলো অ্যাকাউন্টে নেই, আছে বাড়িতে, দোকানির ক্যাশে এবং সিন্দুকে৷ ঐ নোট আবার ব্যাংকে পৌঁছতে বেশ সময় লেগে যায়৷

ব্যাংকে নোট বদলালেও তাতে খুব কাজ হবে বলে মনে করেন না অনেকেই৷ বদলানো নোটেই মানুষ আবার নতুন করে লিখবে প্রতিবাদী শ্লোগান৷

প্রতিবেদন: ফাতিমে ফারজাইয়ে/ আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার