1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশুপ্রেমী হচ্ছে চীন

২০ জুন ২০১০

জীবন ধারণের জন্য পশু হত্যা এখনো চললেও পশুর প্রতি মানুষের মমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে৷ তবে এ ক্ষেত্রে চীন কিছুটা পিছিয়ে ছিলো সম্ভবত৷ তবে তারা এখন একটি আইন করতে যাচ্ছে, যা রোধ করবে পশুর প্রতি মানুষের নির্মমতা৷

https://p.dw.com/p/NxtL
চিতাবাঘের বাচ্চাছবি: AP

বেইজিংয়ের কাছেরই একটি ওয়াইল্ডলাইফ পার্ক৷ ডজন খানেক সিংহ লড়াই করছিলো৷ লড়াইয়ের কারণ কয়েকটি মুরগির দখল নেওয়া৷ চারপাশে উল্লসিত মানুষের ভিড়৷ এটা তাদের আনন্দ, আর তা কিনতে হয়েছে চার ডলার দিয়ে, প্রত্যেককে৷ আর যদি ৬০ ডলার করে দেওয়া যায়, তখন ক্ষুধার্ত সিংহের সামনে ছেড়ে দেওয়া হবে ছাগল৷

চীনে এ ঘটনা চলছে অহরহ৷ এটাকে খেলা হিসেবেই দেখে তারা৷ খেলা দেখে এক পর্যটক বললেন, এটা ভয়ঙ্কর৷ তবে এতে মজা আছে, বললেন অন্য একজন৷ অবশ্য মজা পাওয়া এমন লোকের সংখ্যা দিন দিন কমছে, বাড়ছে এর বিরোধীদের সংখ্যা৷ আর এ কারণেই পশুর প্রতি নির্মম আচরণ ঠেকাতে আইনটি করার উদ্যোগ নিয়েছে চীন সরকার৷

আইনের একটি খসড়া এরইমধ্যে তৈরি হয়েছে৷ এতে বলা হয়েছে, চিড়িয়াখানায় এক প্রাণীর খাদ্য হিসেবে জীবন্ত অন্য কোনো প্রাণীকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না৷ কোথাও কোনো চিড়িয়াখানায় পশুখাদ্যের জন্য অর্থকড়ির সঙ্কট হলে জানাতে হবে সরকারকে৷ আর না জানালে হবে শাস্তি৷ আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে৷ কবে যে তা চূড়ান্ত হবে, তা বলতে পারছে না কেউ৷

চীনে চিড়িয়াখানা এবং ওয়াইল্ডলাইফ পার্কগুলোতে থাকা প্রাণীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছে পশুপ্রেমীরা৷ তারা বলছে, সেখানে প্রাণীগুলোকে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হয় না৷ চালানো হয় বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন৷

প্রাণী অধিকার নিয়ে সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন ‘হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল'এর চীনা বিশেষজ্ঞ পিটার লি বলেন, ‘‘এ দেশে চিড়িয়াখানা, পার্ক, অ্যাকোয়েরিয়াম – এ জায়গাগুলোতে যে সব প্রাণী রয়েছে, তাদের অবস্থা খুব শোচনীয়৷ উন্নত বিশ্বের কোথাও এমনটা দেখা যায় না৷''

গত ১১ মাসে লিওয়ানিং প্রদেশের একটি চিড়িয়াখানায় খাদ্যাভাবে মারা যায় ১১টি সাইবেরিয়ান বাঘ৷ এ প্রাণী এখন বিশ্বের বুক থেকেই হারিয়ে যেতে বসেছে৷ আরেকটি কারখানায় পাওয়া গেছে প্রাণীদের একটি গণকবর৷ যেখানে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিলো কয়েকটি সিংহ, বাঘকে৷ এসব পশুর দেহের বিভিন্ন অংশ বেশ দামী৷ অভিযোগ রয়েছে, তা গোপনে চলে যাচ্ছে বাজারে৷ আর তার সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে, চিড়িয়াখানার কর্মীদেরই৷

আইন হলে ভালো, তবে প্রাণীদের বিষয়ে মানুষের সচেতনতার ওপরই জোর দিচ্ছেন লি৷ নতুন প্রজন্মের ওপর যে তার ভরসা রয়েছে, সে কথাটিও তার মুখ থেকেও শোনা গেলো৷ লি বললেন, পশু অধিকার, পশুকল্যাণ- এ শব্দগুলো ২০ বছর আগে চীনে শোনাই যেত না৷ এখন তার আর অচেনা নয়৷ যা এ প্রজন্মের সচেতনতার কথাই তুলে ধরে৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন