1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

solar panel, renewable energy, Bangladesh

২ জুলাই ২০১০

পরিবেশ বাঁচাতে এখন বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন এবং ব্যবহার বৃদ্ধির উপর৷ এই খাতে বরাদ্দ বাড়াচ্ছে এডিবি৷ আর সবুজ জ্বালানির জন্য সহায়ক আইন করল অস্ট্রেলিয়া৷ পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও৷

https://p.dw.com/p/O8iz
সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল (ফাইল ছবি)ছবি: picture-alliance/ dpa

জলবায়ু পরিবর্তন আর পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব৷ একদিকে উন্নত বিশ্বের কার্বন নির্গমন অব্যাহত৷ আর অন্যদিকে দরিদ্র জাতিগোষ্ঠীর দুর্ভোগ আর ঝুঁকি৷ তবে এর বাইরেও নেওয়া হচ্ছে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ৷ এসব পদক্ষেপের একটি হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন ও ব্যবহার৷

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির জন্য অর্থায়ন করবে তারা৷ মূলত জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতেই এডিবি'র এই উদ্যোগ৷ ম্যানিলা ভিত্তিক এই ব্যাংকের প্রধান হারুহিকো কুরোদা৷ গত সপ্তাহে তিনি জানান, প্রতি বছর শুধুমাত্র পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি খাতে এডিবি দেবে দুই বিলিয়ন ডলার৷ ২০১৩ সাল থেকেই শুরু হচ্ছে এই কর্মসূচি৷ তাহলে এই সবুজ জ্বালানির জন্য কি বসে থাকতে হবে ২০১৩ পর্যন্ত? না, তা নয়৷ বরং ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এই খাতে এডিবি সহায়তা করছে বছরে এক বিলিয়ন ডলার করে৷ আর তিন বছরের ব্যবধানে এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হবে দ্বিগুণ৷

Kochen mit einem energiesparenden Herd in Uganda
জ্বালানি সাশ্রয়ী চুলাই রান্না করছেন গৃহিনী (ফাইল ছবি)ছবি: GTZ / Karin Desmarowitz

এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি তৈরি ও স্থাপনে একটি বিনিয়োগ তহবিল গঠনের পরিকল্পনাও রয়েছে এডিবি'র৷ কুরোদা আরো জানান, ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়া, কুক আইল্যান্ডস, মার্শাল আইল্যান্ডস, মাইক্রোনেশিয়া, পূর্ব টিমর এবং টোঙ্গায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন ও ব্যবহারে সহায়তা দিচ্ছে এডিবি৷

এদিকে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক আইন অনুমোদন করল অস্ট্রেলিয়ার সেনেট৷ এই আইনের লক্ষ্য, ২০২০ সাল নাগাদ ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন৷ এই আইনের ফলে সবুজ জ্বালানি খাতে প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত হলো৷ দেশটির পরিবেশ মন্ত্রী পেনি ওঙ্গ এই আইনকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন৷ তাঁর মতে, এর ফলে অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানের চেয়ে চারগুণ বাড়বে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির ব্যবহার৷ এখন সংসদের নিম্ন কক্ষে অনুমোদন হতে হবে এই আইন৷ আর প্রয়োগ শুরু ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে৷ তাঁর প্রত্যাশা, ২০২০ সাল নাগাদ সেদেশের বাসা-বাড়িগুলোতে যতোটা বিদ্যুৎ দরকার তার সবটুকুই আসবে বায়ু, সূর্য কিংবা অন্য কোন পরিবেশ বান্ধব উৎস থেকে৷

Flash-Galerie Portugal
পর্তুগালের একটি সৌর বিদ্যুৎ প্যানেলছবি: AP

জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম শিকার বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিক থেকে৷ জার্মানিসহ বেশ কিছু উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থা এক্ষেত্রে সহায়তা করছে বাংলাদেশকে৷ আর সরকারও পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির উৎপাদন ও ব্যবহারে গ্রহণ করছে বেশ কিছু কর্মসূচি৷ বিশেষ করে জৈব গ্যাস এবং সৌর শক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি জ্বালানি সাশ্রয়ে উদ্বুদ্ধ করছে সারাদেশের মানুষকে৷ এমনকি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি বিতরণ করা হয়েছে জনগণের মাঝে৷

ঢাকা থেকে প্রকাশিত জ্বালানি বিষয়ক সাময়িকী ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার' এর সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার এবং এর সংরক্ষণ - এই দু'টি বিষয় নিয়েই কাজ হচ্ছে বাংলাদেশে৷ এক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ৷ সরকার এখন ভাবছে বায়ুর যে সম্ভাবনা সেটা কাজে লাগানোর কথা৷ এছাড়া জৈবগ্যাসের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে৷

তিনি জানান, লাইটিং লোড প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট সেভ করার জন্য সরকার দুই কোটি আশি লক্ষ সিএসএল বাতি বিনাপয়সায় বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে৷ প্রথম ধাপে ইতোমধ্যে ৪০ লক্ষ বিতরণ করা হয়েছে৷ ২০১১ সালের মধ্যেই এটার কাজ সম্পন্ন হবে৷ একইসাথে এই বিষয়গুলো প্রয়োগ করার জন্য ফিডিং ট্যারিফ বা গ্রিন ট্যারিফ করা যায় কি না এটা নিয়ে সরকার ভাবছে৷ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে৷ এছাড়া কনজারভেশন অ্যাক্ট খসড়া পর্যায়ে আছে, এটা নিয়েও কাজ করছে সরকার৷ সাথে সাথে টেকসই জ্বালানি উৎপাদন কর্তৃপক্ষ গঠন করার জন্য কাজ এগুচ্ছে এবং এটাতে জার্মান সরকার সহায়তা দিচ্ছে৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক