1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পপকর্ন খেলে বিজ্ঞাপন ভুলে যাবেন

আন্দ্রেয়াস নয়হাউস/এসবি৩ মে ২০১৪

সিনেমা হলে গিয়ে বড় পর্দায় ছবি দেখার মজাই আলাদা, কী বলেন! সঙ্গে চাই চিপস, পপকর্ন৷ কিন্তু জানতেন কি, মুখ চললে মনোযোগ নাকি অনেক কমে যায়? এক জার্মান বিজ্ঞানী বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখেছেন৷

https://p.dw.com/p/1Bsk6
ছবি: DavisKlemmGallery

কোলোনের এক সিনেমা হলে একদল দর্শক পপকর্ন খাচ্ছেন, অন্য দলকে তা দেওয়া হচ্ছে না৷ না, এটা কিন্তু কোনো সিনেমা শো নয়, এখানে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চলছে৷ প্রশ্ন হলো, হলে বসে পপকর্ন চিবিয়ে খাওয়ার সময় কি মনোযোগ কমে যায়? কোলোনের মনোবিজ্ঞানী সাশা টোপোলিনস্কি সেটাই মনে করেন৷ তাঁর তত্ত্ব অনুযায়ী পপকর্ন খেতে খেতে বিজ্ঞাপন দেখলে পরে তা আর মনে থাকে না৷

নতুন পণ্যের নাম তখনই মনে থাকে, যখন সেটা একবার মুখে আওড়ানো যায়৷ টোপোলিনস্কি বলেন, ‘‘এই সিনেমা হলে আমরা যাদের পপকর্ন খেতে দিয়েছি, তারা অবচেতন মনে মুখ খুলে পণ্যের নাম বলার সুযোগ পাচ্ছে না৷ এক সপ্তাহ পরে আমরা দেখবো, এদের উপর বিজ্ঞাপনের আদৌ কোনো প্রভাব পড়েছে কিনা৷''

Futurando 78 – Popcorn-Esser Kinowerbung
সিনেমা দেখার সময় পপকর্ন না হলে কি চলে?ছবি: DW

এরা নতুন পণ্যের নাম মনে করতে পারছে কিনা, ত্বকের উপর পরীক্ষা চালিয়ে তা বোঝা যায়৷ ফলফল দেখে বোঝা যাচ্ছে, যে পপকর্ন-খাদকরা সিনেমা হলে দেখা বিজ্ঞাপন মনে করতে পারছে না বললেই চলে৷ যারা খায়নি, তাদের মনে কিন্তু বিজ্ঞাপনটি দাগ কেটেছে৷ টোপোলিনস্কি বলেন, ‘‘এই পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, পপকর্ন খেলে মুখ ব্যস্ত থাকে৷ তখন স্বতঃস্ফূর্ত অনুভূতি ও স্মৃতিশক্তি কমে যায়৷ অর্থাৎ শরীরের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে৷ যেমন নাম মনে রাখার ক্ষেত্রে মুখ খোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷''

কেনাকাটার ক্ষেত্রেও এমনটা দেখা যাচ্ছে৷ যারা পণ্যের নাম যাকে বলে শরীরের মধ্যেই ধারণ করেছে, তাদের মনে সেটি সম্পর্কে বিশেষ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ টোপোলিনস্কি বলেন, ‘‘যারা পপকর্ন খায়নি, কেনার সময় তাদের উপর বিজ্ঞাপনের প্রভাব স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ তারা সেটাই কিনছে৷ যারা পপকর্ন খেয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটা দেখা যাচ্ছে না৷''

অনুভূতি ও অভিজ্ঞতাকে নিজের শরীরের ভাষায় অনুবাদ করা – সাশা টোপোলিনস্কির কাছে বিজ্ঞাপন ও শিল্পের ক্ষেত্রে এটাই বোধ ও স্মৃতিশক্তির ভিত্তি৷ মস্তিষ্ক কোনো অনুভূতিকে আবার জীবন্ত করে তোলে৷ শরীরও সেই অনুযায়ী নড়াচড়া করলে সেই অনুভূতি আরও পাকাপোক্ত হয়ে পড়ে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা এক পরীক্ষার জন্য কিছু মানুষকে ছবি দেখতে দিয়েছিলাম এবং নির্দিষ্টভাবে হাত নড়াচড়া করতে বলেছিলাম৷ শিল্পী যেভাবে তুলির টানে ছবিটি এঁকেছিলেন, সেই একই ভঙ্গিমায় হাত নাড়াতে বললে দেখা যায় মানুষের সেটা বেশি পছন্দ হয়েছে৷''

টোপোলিনস্কি মনোবিদ্যার নতুন এক শাখার প্রতিনিধি, যার নাম ‘এমবডিমেন্ট'৷ শরীরের নড়াচড়ার সাহায্যে বিমূর্ত বার্তা গ্রহণ করাই এর মূলমন্ত্র৷ যেমনটা মানুষের মধ্যে ভাবের আদানপ্রদানের সময় ঘটে৷ পপকর্ন নিয়ে পরীক্ষা প্রাথমিক এক দৃষ্টান্ত মাত্র৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা এবং অন্য অনেক এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে দেখা যায় যে স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে শরীরের কেন্দ্রীয় ভূমিকা রয়েছে৷ যেমন কোনো পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা তার উপর নির্ভর করে৷''

এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞাপন শিল্প গবেষণার এই ফলাফল সম্পর্কে সচেতন নয়৷ ফলে তারা কোনো প্রতিক্রিয়াও দেখাতে পারেনি৷ এ কথা জানতে পারলে তারা হয়তো সিনেমা হলে পপকর্ন নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করবে৷ কিন্তু সিনেমা হলে বসে পপকর্ন চিবাতে না পারলে আর মজা কীসে! গবেষক টোপোলিনস্কিও সেটা ভাবতে পারেন না৷