1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ঢাকা চলো’

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৫ ডিসেম্বর ২০১৩

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন প্রতিহত, বাতিল ও গণতন্ত্র রক্ষায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন৷ ২৯ ডিসেম্বর রবিবার তিনি সারা দেশের সব শ্রেণির মানুষকে ঢাকা অভিমুখে অভিযাত্রার আহ্বান জানিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/1AgLO
Khaleda Zia 2013
বেগম খালেদা জিয়াছবি: Getty Images

বিরোধী দলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি৷’

বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়ার এই নতুন কর্মসূচি রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়াতে পারে৷ আর আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল বা স্থগিতের কোনো সুযোগ নেই৷

৫ম দফায় ৮৩ ঘণ্টার অবরোধ শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়া নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন৷ তিনি রবিবার সারা দেশের মানুষকে গণতন্ত্র রক্ষায় ঢাকায় এসে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান৷ আর ঢাকার বাসিন্দাদের সেদিন একযোগে রাস্তায় নেমে আসার অনুরোধ করেন৷ তিনি বলেন এই কর্মসূচিতে বাধা দিলে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে৷ তিনি পরিবহণ মালিক- শ্রমিক, পুলিশ-প্রশাসনসহ সবাইকে এই কর্মসূচি পালনে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন৷

‘মেরুদণ্ডহীন’ নির্বাচন কমিশন

কর্মসূচি ঘোষণার আগে খালেদা জিয়া বলেন, সরকার দেশের মানুষ, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷ এরই মধ্যে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন৷ বাকি ১৪৬ আসনেও যোগ্য প্রার্থী নেই যে ভোটাররা ভোট দেবেন৷ এটা ইলেকশন নয়, নির্লজ্জ সিলেকশন৷ তিনি বলেন এই প্রক্রিয়ায় জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে৷ সরকার গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে৷ আর মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবাহকে পরিণত হয়েছে৷ তিনি প্রশাসন, পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনকে এই নির্বাচনি কাজে যুক্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷

খালেদা জিয়া তাই ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল করে সরকারকে সংলাপ শুরুর আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, বিরোধী দল আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছে, জাতীয় পর্যায়ে মতপার্থক্য এবং মতবিরোধ মিটিয়ে এখনো সমঝোতার সময় আছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা সমঝোতার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সরকার তা চায় না৷ জনগণই তার প্রমাণ৷’’

খালেদা জিয়া অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে সহিংসতা এবং হতাহতের জন্য সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়ী করেছেন৷ তিনি দাবি করেছেন, সরকার আন্দোলন দমাতে চরমভাবে মানবাধিকারের লঙ্ঘন করছে৷ তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সরকারের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে মানবাধিকার লঙ্ঘন না করার আহ্বান জানান৷ আর দেশকে অরাজকতা থেকে রক্ষা, গণতন্ত্র রক্ষা ও মানুষের অধিকার রক্ষায় দলীয় নেতা-কর্মীদের পাড়ায়, মহল্লায় কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন৷

বিরোধী দলীয় নেত্রী যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব পাসে মর্মাহত হওয়ার কথাও জানান সংবাদ সম্মেলনে৷

‘‘অবরোধের নামে তারা মানুষ হত্যা করেছে’’

খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের পর সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে জানান, সংবিধান ও নির্বাচনি আইনে কোনোভাবেই এখন আর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন স্থগিত বা বাতিলের সুযোগ নেই৷ তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর নতুন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে৷ আর ঢাকা অভিযাত্রা কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, এতদিন অবরোধের নামে তারা মানুষ হত্যা করেছে, সহিংসতা করেছে৷ এখন তাদের এই নতুন কর্মসূচি সহিংস না অহিংস হবে, তা বলেননি খালেদা জিয়া৷ সরকার এই কর্মসূচিতে বাধা দেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি কোন দিকে যায় তা দেখেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷

এদিকে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক বলেছেন, এখনো নির্বাচনের তারিখ ১৫-২০ দিন পিছিয়ে দিয়ে সমঝোতা সম্ভব৷ তিনি বলেন একতরফা নির্বাচন কারোর কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না৷ আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দলের এই ধরণের নির্বাচনের দিকে যাওয়া ঠিক হবে না বলে তিনি মনে করেন৷ তিনি বলেন বিরোধী দলের নতুন কর্মসূচি রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়াতে পারে, কারণ সরকার চাইবে বাধা দিতে৷ আর বিরোধী দল চাইবে কর্মসূচি সফল করতে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য