বাসে ধর্ষণ
২৬ জানুয়ারি ২০১৩বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানমের সঙ্গে ডয়চে ভেলের দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে৷ এ মাসের শুরুর দিকে টাঙ্গাইলের এক স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামালের সঙ্গেও কথা হয়েছিল ডয়চে ভেলের৷ সেদিন সুলতানা কামালের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল ধর্ষণের অপরাধের বিচার কতটা হয়? জবাবে হতাশাই প্রকাশ করেছিলেন তিনি৷ সেই ঘটনাটি ঘটেছিল ৭ ই ডিসেম্বর৷ বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে এক স্কুলছাত্রীকে পাশের পাহাড়ি এলাকায় একটি বাড়িতে নিয়ে যায় মেয়েটির এক বান্ধবী৷ সেখানে তাকে আটকে রাখা হয় তিন দিন৷ টানা তিনদিন ধর্ষণ করা হয় তাকে৷ মেয়েটির কথিত বান্ধবীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন৷
সুলতানা কামাল তখন জানিয়েছিলেন বড় জোর শতকরা ১০ ভাগ ধর্ষণের ঘটনার বিচার হয়ে থাকে বাংলাদেশে৷ টাঙ্গাইলের সেই মেয়েটির মতো মানিকগঞ্জে চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হওয়া মেয়েটিও সুবিচার পাবেন কিনা, পেলে কবে পাবেন এ প্রশ্ন এখনো তাই খুবই প্রাসঙ্গিক৷ কয়েক দিনের মধ্যে একই প্রশ্ন আয়েশা খানমকে না করে জানতে চাওয়া হয়েছিল প্রায় নিয়মিত বিরতিতে হতে থাকা এসব ধর্ষণের ঘটনা বন্ধ করা বা কমানো যায় কী করে? মূলত এ প্রশ্নকে ঘিরেই এগিয়েছে সাক্ষাৎকার৷
আয়েশা খানম নারী নেত্রী হিসেবে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে তুলে ধরেছেন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং প্রশাসনিক প্রভাব-প্রশ্রয়ের দিকগুলো৷ তাঁর মতে, এর মাঝেই মূল সমস্যা নিহিত৷ ধর্ষণ রোধে সামাজিক সচেতনতার প্রয়োজন অবশ্যই আছে৷ তবে সচেতনতা সেই পর্যায়ে যাওয়া পর্যন্ত তো বসে থাকা যায় না, তাই আয়েশা খানম মনে করেন, সবার আগে ধর্ষকের প্রতি দেখাতে হবে শূন্য সহনশীলতা (জিরো টলারেন্স)৷ তাঁর যুক্তিটা খুব পরিষ্কার – কেউ যদি আগে থেকেই জানে যে কোনো নারীর সঙ্গে এমন আচরণ করলে পরিবার থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই তার আর কোনো আশ্রয় থাকবে না, তাহলে ধর্ষণের ক্ষীণ ইচ্ছা থাকলেও নিজেকে তখন সে সেই ইচ্ছা পূরণের ঝুঁকি থেকে দূরে রাখবে৷
সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন