1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দ্বৈত নাগরিকত্ব

২৭ মার্চ ২০১৩

জার্মানিতে বসবাসরত অভিবাসীদের অনেকেই জার্মান নাগরিকত্ব নিতে দ্বিধা বোধ করেন, কেননা পুরানো নাগরিকত্বটি বাতিল করতে হয় এক্ষেত্রে৷ এটি তো শুধু একটি দাপ্তরিক প্রক্রিয়া নয়, এর সঙ্গে যে জড়িয়ে থাকে অনেক আবেগ অনুভূতিও৷

https://p.dw.com/p/184an
ছবি: DW

বিশেষ করে প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীদের কাছে জন্মভূমির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করাটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়৷ আর আগের পাসপোর্টটি জমা দিতে হলে তো কথাই নেই৷ কারণ, নিজের দেশে ভিসা নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তাই করতে পারেন না অনেকে৷ তাই ইচ্ছা বা সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও জার্মান নাগরিকত্ব নিতে চান না কেউ কেউ৷ বিশ্বের অনেক দেশে দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার ব্যবস্থা থাকলেও, জার্মানি কিন্তু এ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে গড়িমসি করছে৷

সম্পৃক্তি সহজ করার পক্ষে

সম্প্রতি জার্মান অঙ্গরাজ্যগুলির ইন্টিগ্রেশন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অভিবাসী সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে এক সম্মেলন হয়ে গেল৷ অংশ গ্রহণকারীদের দুই-তৃতীংয়াশই দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার পক্ষে মত দেন৷ এছাড়া এই সম্মেলনে তরুণ অভিবাসীদের ২৩ বছর বয়সের মধ্যে নাগরিকত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক যে নিয়মটি চালু রয়েছে, তা বাতিল করার পক্ষে মত দেয়া হয়৷ বিষয়টি একটু খোলাসা করা প্রয়োজন৷ ২০০০ সাল থেকে নাগরিকত্বের ব্যাপারে একটি অদ্ভুত আইন চালু রয়েছে জার্মানিতে৷ উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, জার্মানিতে জন্ম নেয়া কোনো বাচ্চার বাবা বা মার যদি তুরস্কের নাগরিকত্ব থাকে তাহলে বাচ্চাটি তুরস্কের নাগরিকত্বের পাশাপাশি জার্মান নাগরিকত্বও পাবে৷ তবে শিশুটির মা বা বাবার যে কোনো একজনকে অন্তত আট বছর ধরে জার্মানিতে বসবাস করতে হবে৷ প্রাপ্ত বয়স্ক হলে অর্থাৎ ২৩ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে তুরস্ক বা জার্মান এই দুই দেশের পাসপোর্টের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে৷ এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করলে বা ভুলে গেলে জার্মান নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যাবে৷ তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলি থেকে আসা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নিয়মটি প্রযোজ্য নয়৷ এক্ষেত্রে দুই দেশের নাগরিকত্বই রাখতে পারেন সংশ্লিষ্টরা৷

Türkisches Mädchen in München
ছবি: AP

অধিকাংশ ক্ষেত্রে তুর্কিরাই ভূক্তভোগী

জার্মানিতে বসবাসরত অভিবাসীদের বেশির ভাগই তুর্কি বংশোদ্ভূত৷ তারাই এব্যাপারে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বেশি৷ সম্প্রতি ২৩ বছরের এক তুর্কি তরুণী এই অদ্ভুত আইনের জাঁতাকলে পড়ে হতভম্ব হয়ে যান৷ ঠিক সময়ে তুর্কি পাসপোর্টটি জমা দিতে না পারায় তাঁর জার্মান পাসপোর্টটি বাতিল হয়ে যায়৷ সিদ্ধান্তের এই টানাপড়েনের পড়ে অনেকেই এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন৷ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর প্রায় সাড়ে তিন হাজার তরুণ-তরুণী এই পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন৷ ২০১৮ সাল থেকে এই সংখ্যাটা বছরে ৪০ হাজারের ওপরে হবে৷

ইদানীং অনেক তুর্কি তরুণ-তরুণী এই অস্বস্তিকর বিষয়টিকে পাশ কাটাবার জন্য খানিকটা অপেক্ষা করে দেখতে চান৷ জার্মানিতে তুর্কি সম্প্রদায়ের মুখপাত্র কেনান কোলাত বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে জানান, ‘‘আগামী সেপ্টেম্বরে জার্মান সংসদীয় নির্বাচনে এসপিডি ও সবুজ দল সরকার গঠন করতে পারলে এব্যাপারে নতুন আইন চালু হতে পারে৷ এই আশা অনেকের৷''

রাজনৈতিক অঙ্গনে মতভেদ

এসপিডির প্রধান সিগমার গাব্রিয়েল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মানরা তাদের তুর্কি পাসপোর্টটা রেখে দিলে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য যেন কমে যাবে৷ এটি একটি বাজে ধারণা৷''

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দুটি দল, সিডিইউ ও সিএসইউ এই আইনটি শিথিল করার পক্ষপাতী নয়৷ তাদের মতে, এতে বহু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে৷ যেমন আইনগত জটিলতা দেখা দিতে পারে সাজাপ্রাপ্ত আসামি বা মামলা মোকদ্দমার ক্ষেত্রে৷

তাদের কোয়ালিশন সহযোগী মুক্তগণতন্ত্রী দল, এফডিপি অবশ্য একেবারেই উল্টো সুরে কথা বলছে৷ আইনমন্ত্রী সাবিনে লয়েটহয়জার শ্নারেনব্যার্গার দ্বৈত নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া শিথিলের ব্যাপারে সোচ্চার৷ তাঁর মতে দ্বৈত নাগরিকত্বের মাধ্যমেও সম্পৃক্তির পথ সুগম করা যায়৷ এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে বহু৷

আরবি/ডিজি (এআরডি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য