1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুদকের তত্‍পরতা

সমীর কুমার দে, ঢাকা২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

হঠাত্‍ করেই ব্যাপক তত্‍পরতা শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক৷ সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতা থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তাদেরও ডেকে পাঠানো হচ্ছে দুদকে৷ বলা বাহুল্য, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগেই ডাকা হচ্ছে তাঁদের৷

https://p.dw.com/p/1BH5S
Symbolbild Korruption
ছবি: Fotolia/Natalia D.

দুদক-এর এসব তত্‍পরতার ব্যাপারে কমিশনার শাহাবুদ্দিন চুপ্পু ডয়চে ভেলেকে বলেন, এই সরকার, এর আগের সরকার এবং তার আগেও যারা সরকার বা বিরোধী দলে ছিলেন – সকলেরই দুর্নীতি খতিয়ে দেখা হবে৷ তাঁর মতে, ‘‘শুধু যে এই সরকার দুর্নীতি করছে তা নয়৷ এর আগে যাঁরা ছিলেন তাঁরা এবং তার আগেও যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন তাঁরাও দুর্নীতি করেছেন৷ সেই দুর্নীতিগুলো এখনো মরে যায়নি৷ তাই আমরা সরকার ও বিরোধী দল সকলের দুর্নীতিই খতিয়ে দেখবো৷'' তিনি বলেন, দুদক যে কাজ শুরু করেছে শিগগিরই দেশবাসী তার রেজাল্ট দেখতে পাবে৷

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বৃহস্পতিবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান ও রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল হুদাকে৷ এর আগেও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক৷ দুদক-এর জিজ্ঞাসাবাদের পর আবদুল মান্নান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি কোনো দুর্নীতি করিনি৷ তাই আমি একটা কথাই বলি যে, সত্যের মতো শক্তিশালী কোনো কিছু আর নাই৷ সত্য একদিন আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হবেই৷''

দুদক-এর উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন৷ সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের মানুষ জানে যে আমি কতটা স্বচ্ছ৷ আমি বিগত পাঁচ বছরে ইতিবাচক কাজ করেছি৷ নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি দু'বার আহত হয়েছি৷''

দুদক-এর কাছে কি বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘দুদক আমার কাছে যা জানতে চেয়েছে, আমি তার উত্তর দিয়েছি৷''

Symbolbild Korruption
‘এই সরকার, এর আগের সরকার এবং তার আগেও যারা সরকার বা বিরোধী দলে ছিলেন – সকলেরই দুর্নীতি খতিয়ে দেখা হবে’ছবি: picture alliance/CTK

প্রসঙ্গত সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত পাঁচ বছর আগে তাঁর সাকুল্যে ১০ লাখ ৩৩ হাজার টাকার সম্পত্তি ছিল৷ মন্ত্রিত্বকালে, অর্থাৎ গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে সেটা হয়েছে ১১ কোটি ৩ লাখ টাকা৷ আগে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা৷ সেই আয় এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে বছরে ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকায়৷ এছাড়া পাঁচ বছরের মন্ত্রিত্বকালে তাঁর সম্পত্তি ১০৭ গুণ বেড়েছে৷

এদিকে নিজের হাত দিয়ে কোনো দুর্নীতি হয়নি বলে খোলাখুলি ‘চ্যালেঞ্জ' ছুড়ে দিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বা রাজউক-এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা৷ বৃহস্পতিবার দুদক-এর জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি বলেন, ‘‘একজন ভিআইপি-র দুর্নীতি অনুসন্ধানে কিছু তথ্য-উপাত্ত চেয়ে পাঠিয়েছিল দুদক৷ তাই আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপন করতে এসেছি৷ তবে আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই৷ আমার হাত দিয়ে রাজউক-এর কোনো দুর্নীতি হয়নি৷ এটা আমার ওপেন চ্যালেঞ্জ৷''

এই দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর কমিশনার শাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, ‘‘তাঁরা আসলে অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথা বলেছেন৷ কেননা তাঁদের আত্মবিশ্বাস নিয়েই দুদক-এ আসতে হবে৷ তবে তাঁদের আত্মবিশ্বাস কতটা সত্য, তা আমাদের অনুসন্ধানে বের হবে৷''

দুদক-এর এ সব তত্‍পরতার ব্যাপারে টান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দুদক যে তত্‍পরতা শুরু করেছে তাতে অবশ্যই তাদের ধন্যবাদ দিতে হবে৷ তারা সাহস করে ক্ষমতাধরদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে নেমেছে৷ এখন দেখার বিষয় তাদের এ সব তদন্তে কি ফল আসে৷ মানুষ তাদের তদন্তের ফল দেখতে চায়৷ ক্ষমতাধরদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ায় মানুষের মধ্যে এক ধরনের প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে৷ এটা যেন কোনোভাবেই ধ্বংস না হয়৷ দুদক এবার সঠিক তদন্ত করে ক্ষমতাধরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলে দুদক-এর প্রতি মানুষের যে নেতিবাচক ধারণার তৈরি হয়েছে, তা অনেকটাই দূর হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য