1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুই ডিগ্রি বাড়ুক বিশ্বের তাপমাত্রা, বলছে জি এইট

১০ জুলাই ২০০৯

জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে যে নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তির দিকে এগোচ্ছে এই গ্রহ, জি এইট সম্মেলন সেই চুক্তির দিকে দুপা এগিয়ে, একপা পাশে সরে আবার এক পা পিছিয়ে এল বৃহস্পতিবার৷

https://p.dw.com/p/Ikm6
বৃহস্পতিবার জি-৮ বৈঠকে নেতৃবৃন্দছবি: AP

জি এইট নেতারা চাইছেন, বিশ্বের তাপমাত্রার মান স্থির করতে৷ গত শতকের গোড়ায় বিশ্বের যে গড় তাপমান ছিল, তার থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ুক তাতে ক্ষতি নেই৷ কিন্তু, তার চেয়ে বেশি যেন আর না বাড়ে এই গ্রহের তাপমাত্রা৷ ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রায় ত্রাহি ত্রাহি রব তোলা পৃথিবীকে বাঁচাতে এই সমাধানের ব্যাপারে জি এইটের সদস্য আটটি দেশ একমত হল বৃহস্পতিবার ইটালির লাকিলায়৷ শিল্পোন্নত আটটি দেশ এবং ব্রাজিল, ভারত আর চীনের যোগদানে জি এইট জমে উঠেছে প্রত্যাশামতই তবে কীভাবে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে, সে বিষয়ে কোন সুনিশ্চিত পথনির্দেশ এখনও দিতে পারেন নি জি এইটের নেতারা৷

কারা এই জি এইট?

গোটা বিশ্বজুড়ে মোট যে পরিবেশ দূষণ ঘটছে বা গ্রিণহাউজ গ্যাস নির্গমন ঘটছে, তার চারভাগের তিনভাগ যে দেশগুলি ঘটিয়ে থাকে, জি এইট সম্মেলনে মূলত তারাই যোগ দিয়েছে ইটালিতে৷ প্রথম আটটি শিল্পোন্নত দেশ যারা জি এইটের সদস্য, সেই ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, জাপান, রাশিয়া এবং আমেরিকা তো রয়েছেই, এর বাইরে শিল্পক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত, ব্রাজিল, চীন, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়া৷

G8 Gipfel in L`Aquila, Italien: G5-Regierungschefs
জি-৮ সম্মেলনে অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংছবি: picture alliance/Photoshot

বৈজ্ঞানিক হুঁশিয়ারি

বৈজ্ঞানিকরা সাম্প্রতিক অতীতে যে হুঁশিয়ারি শুনিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, শিল্পোন্নয়নের পূর্ববর্তী যে বিশ্ব ছিল, অর্থাৎ গত শতকের গোড়ার দিকের পৃথিবীর যে তাপমাত্রা ছিল, তার থেকে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা যদি দুই ডিগ্রির বেশি বেড়ে যায়, তাহলে তার প্রভাব হবে ভয়াবহ৷ প্রলয়ংকর ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খরা এবং দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে বিশ্বের বিস্তীর্ণ অঞ্চল৷ সংকট দেখা দেবে মানব অস্তিত্বের৷ সুতরাং তাপমাত্রার এই বাড়বাড়ন্ত রুখতে হবেই৷ কমাতে হবে দূষণের মাত্রা৷

সুতরাং বাড়বৃদ্ধি দুই ডিগ্রিতে বাঁধার সিদ্ধান্ত জি এইটের

রাজনীতিতে আসার আগে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ছিলেন একজন বৈজ্ঞানিক৷ সুতরাং বিশ্ব উষ্ণতা রুখতে তিনি পূর্ণ উদ্যমে কাজ করছেন এবং করে চলেছেন৷ বৃহস্পতিবার জি এইটের সাইডলাইনে মেজর ইকনমিক ফোরামের যে বৈঠকে এই দুই ডিগ্রি বাড়বাড়ন্তর সীমানায় বিশ্ব উষ্ণতাকে বাঁধার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে, সেখানে ম্যার্কেল বলেন, পদক্ষেপটা গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটাকে সফল করতে হলে আমাদের প্রচুর কাজ করতে হবে৷ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ইটালির প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনির মতে, এই জি এইট সম্মেলনে অন্তত একটা সম্মিলিত সদিচ্ছা চোখে পড়ছে৷ ২০৫০ সালের মধ্যে গ্রিণহাউজ প্রদূষণের মাত্রা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানো প্রয়োজন বলেছেন বার্লুসকোনি৷

খুশি নন বান কি মুন

বিশ্বের তাপমাত্রার বর্ধমান গতিকে দুই ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সন্তুষ্ট করতে পারে নি জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন কে৷ নিউ ইয়র্কে বৃহস্পতিবার বান কি মুন বলেছেন, ইটালির লাকিলায় যেসব দেশ এই জি এইট সম্মেলনে মিলিত হয়েছে, বিশ্বের প্রায় আশি শতাংশ দূষণ ঘটাচ্ছে তারাই৷ সুতরাং গোটা দুনিয়ার সামনে এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার সঠিক সমাধানসূত্র তাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে৷

যথাযথ অসন্তোষ

উল্লেখ করা দরকার, বান কি মুনের এই অসন্তুষ্টি যথাযথ৷ কারণ, তাপমাত্রার বাড়বৃদ্ধি রুখতে হবে এ প্রসঙ্গে একমত হলেও, দূষণ কমানোর ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে এখনও যথেষ্ট আমড়াগাছি রয়েছে শিল্পোন্নত দেশগুলির মধ্যে৷ আর মূল সমস্যাটাও সেখানেই৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই