1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংকটে পড়তে যাচ্ছে অর্থনীতি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৯ ডিসেম্বর ২০১৩

টানা হরতাল, অবরোধের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এক দীর্ঘকালীন সংকটে পড়তে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা৷ পোশাক খাতে প্রতিদিন গড়ে ক্ষতি হচ্ছে ২৫০ কোটি টাকা৷ ক্রেতারাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন৷

https://p.dw.com/p/1Ac8o
Bangladesch Textilindustrie
ছবি: AP

একটি পোশাক কারখানার মালিক ইসমাইল হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, বাংলাদেশের অনেক পোশাক কারাখানা এখন সময়মত ক্রেতাদের পোশাক সরবরাহ করতে পারছে না৷ আর কাঁচামালের সংকট ধীরে ধীরে প্রকট হয়ে উঠছে৷ এই অবস্থায় ক্রেতারা যদি স্থায়ীভাবে মুখ ফিরিয়ে নেন তাহলে পোশাক শিল্প বড় ধরনের সংকটে পড়বে৷ ক্রেতারা ইতিমধ্যেই ভারত ও চীনে বিকল্প বাজারের কথা ভাবছেন৷

বিজিএমইএ'র সভাপতি আতিকুল ইসলাম জানান সবচেয়ে বড় আশঙ্কার কথা হলো বাংলাদেশে এখন যে রাজনৈতিক সংকট চলছে তা সমাধানের কোনো আভাস দেখা যাচ্ছে না৷ বাইরের বিশ্বও মনে করে, এই সংকট দীর্ঘায়িত হতে পারে৷ তাই যদি হয় তাহলে পোশাক শিল্প মুখ থুবড়ে পড়তে পারে৷ এতে করে পোশাক খাতে কর্মরত ৪০ লাখ শ্রমিক বিশেষ করে মহিলা শ্রমিকরা পথে বসে যাবেন৷

এফবিসিসিআই এর সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন জানান তাদের হিসেবে, এখন প্রতিদিন গড়ে বাংলাদেশের শিল্প এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে৷ এছাড়া একটি ব্যবসা বা শিল্পের সঙ্গে আরেকটি শিল্পের আন্তঃসম্পর্ক রয়েছে৷ ফলে একটি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে আরেকটিতে তার প্রভাব পড়ে৷ এতে করে এক ধরণের নেতিবাচক ‘চেইন রিএ্যাকশন'এ পড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের উৎপাদন এবং রপ্তানি খাত৷

তিনি বলেন ব্যবসায়ীরা এজন্যই পথে নেমেছেন, দাবি জানাচ্ছেন রাজনৈতিক সমঝোতার৷ বন্ধ করতে বলছেন হরতাল, অবরোধ৷ কিন্তু তাঁদের কথায় কোনো রাজনৈতিক দলই কান দিচ্ছে না বলেও জানান ব্যবসায়ীদের নেতা কাজী আকরাম উদ্দিন৷

সিপিডির অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ডয়চে ভেলেকে জানান, উৎপাদন খাতের সঙ্গে সঙ্গে এর সহায়ক শিল্প, সেবাখাত এবং ব্যাংকিং খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ ফলে পুরো শিল্প এবং ব্যবসা-বাণিজ্য এখন হুমকির মুখে৷ বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা সংকুচিত হয়ে পড়ছে৷ একই সঙ্গে কাঁচামালের সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় উৎপাদনও হচ্ছে না ঠিকমত৷ ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শিল্প মন্দার মধ্যে পড়ে গেছে৷

তিনি বলেন রাজনৈতিক সংকট কেটে যাওয়ার এখনো কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ তাই দীর্ঘমেয়াদে এই সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করবে৷ এক দীর্ঘকালীন সংকটে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি৷

গোলাম মোয়াজ্জেম জানান, বাংলাদেশে অনেক ছোট ছোট শিল্প কারখানা আছে যেগুলো প্রতিদিনের উৎপাদন এবং সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল৷ টানা অবরোধ, হরতালের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেই সব শিল্প৷ আর সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা কাজ হারাতে শুরু করেছেন৷

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল মনে করে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কোনোভাবেই ৫ থেকে সাড়ে ৫ ভাগের বেশি হবে না৷ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এটি হবে একটি বড় ধাক্কা৷

গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সিপিডিও মনে করে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা এবার অর্জিত হবে না৷ তবে সবচেয়ে আশঙ্কার কথা, কয়েক দশকের চেষ্টায় দেশে ও দেশের বাইরে তৈরি পোশাক শিল্পসহ বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের একটি বাজার এবং সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে৷ এটা যদি একবার নষ্ট হয় তাহলে সেটা গড়ে তুলতে আবারো অনেক সময় লাগবে৷ ফলে অর্থনীতি পড়বে বড় সংকটে, বাড়বে বেকারত্ব৷ রাজনীতিবিদদের এই কথাটা বুঝতে হবে৷ বিশ্ব মন্দার ধাক্কা বাংলাদেশ সামাল দিতে পারলেও এই ধাক্কা সামলানো কঠিন হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য