1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপন্ন হচ্ছে

রিচার্ড ফুক্স/এসি৩ জানুয়ারি ২০১৩

দক্ষিণ আফ্রিকার সমাজের একাংশ কিছুটা সমৃদ্ধির মুখ দেখার পরে সেখানেও ‘রিসাইক্লিং’ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷ তবুও যাবতীয় বর্জ্য আজও ময়লা ফেলার ভাগাড়ে গিয়ে পড়ে৷ তাই চেষ্টা চলেছে, এ থেকে সৃষ্ট গ্যাসের সদ্ব্যবহার করার৷

https://p.dw.com/p/17Ckq
ছবি: DW

জার্মানি এবং অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশে যেমন বিভিন্ন ধরণের বর্জ্য – রান্নাঘরের কুড়ো, বাগানের ডালপালা, প্লাস্টিক কি কাগজ – সব আলাদা করে ফেলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকাতে স্বভাবতই সে ব্যবস্থা নেই৷ সব কিছু গিয়ে পড়ে ময়লা ফেলার ভাগাড়ে৷ কিন্তু তার একটা ভালো দিক হলো, ভাগাড়গুলিতে গ্যাস উৎপন্ন হয়৷ আগে সেই গ্যাস স্রেফ জ্বালিয়ে দেওয়া হতো৷ এবার বিজ্ঞানী-গবেষকদের নজর পড়েছে সেদিকে৷ জোহানেসবার্গের আশপাশে ময়লার পাহাড় থেকে গ্যাস, এবং সেই গ্যাস থেকে পেট্রোল-ডিজেলের বিকল্প কোনো জ্বালানি সৃষ্টি করা যায় কিনা, তাই নিয়েই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন তারা৷ ধারণাটা চমকে দেবার মতো সহজ: তথাকথিত বায়োগ্যাস থেকে বায়ো-মিথেন তৈরি করা৷

তাই জোহানেসবার্গের সবচেয়ে আশ্চর্য পেট্রোল পাম্পটি একটি সবুজ ঘাসে ঢাকা পাহাড়ির উপর৷ তার ওপাশেই ময়লা ফেলার ভাগাড় – যেখান থেকে এই পেট্রোল পাম্পের ‘পেট্রোল', মানে মিথেন গ্যাস আসে৷ কারণ এটা একটা গ্যাস স্টেশন৷ যে সব গাড়ি-ট্যাক্সি গ্যাসে চলে, তারা এখানে গ্যাস ভরতে আসে৷ গ্যাস স্টেশনটি চালায় ‘‘এনার্কি'' নামধারী একটি জার্মান-দক্ষিণ আফ্রিকান গবেষণা প্রকল্প৷

Maputo Hauptstadt von Mosambik versinkt im Müll
ছবি: DW

ময়লা ফেলার ভাগাড়ে ময়লার পাহাড়ে যে বায়োগ্যাস উৎপন্ন হয়, তাই পর্যায়ক্রমে পরিশোধন করে বায়ো-মিথেন তৈরি করা হয়৷ জোহানেসবার্গের নোভো এনার্জি সংস্থার এডি কুক বলেন:

‘‘প্রথমত, পরিবেশের কথা ভাবলে, মিথেন একটি ভালো জিনিস, কেননা মিথেন পোড়ালে পেট্রোল কি ডিজেলের চেয়ে অনেক কম কার্বন নিঃসরণ হয়৷ দ্বিতীয়ত, বর্জ্য থেকে তৈরি জ্বালানি পেট্রোল-ডিজেলের চেয়ে অনেক সস্তার হয়, কেননা তা স্থানীয়ভাবে উৎপন্ন হয়৷''

নোভো এনার্জি সংস্থাটি নতুন নতুন ধরণের জ্বালানির উৎস সংক্রান্ত গবেষণায় জোহানেসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন জার্মান গবেষণা সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করে থাকে৷ মজার কথা, জোহানেসবার্গে যে দশকের পর দশক ধরে নির্বিচারে ভাগাড়ে ময়লা ফেলা হয়েছে, সেটা থেকেই এই সর্বাধুনিক গবেষণা প্রকল্পের সূচনা৷ জৈব বর্জ্য থেকে জীবাণুর প্রভাবে কার্বন ডাইঅক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড ইত্যাদি নানা ধরণের গ্যাস উৎপন্ন হচ্ছে৷ সেটাই হল বায়ো-মিথেন গবেষকদের মূলধন৷ বায়ো-মিথেন জ্বালানির উপযোগিতা সম্পর্কে জোহানেসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এডিসন মুজেন্ডা বলেন:

‘‘বিশেষ করে সরকারি পরিবহণ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ির ক্ষেত্রে বিরাট পার্থক্য হতে পারে৷ বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাত্রী এবং মাল পরিবহণের খরচ ও ভাড়া অত্যন্ত বেশি৷ এই খরচ এবং ভাড়া ৩০ শতাংশ কমানোর চাবিকাঠি আমাদের হাতে রয়েছে বলে আমি মনে করি৷ বিশেষ করে জনসাধারণের দরিদ্র অংশের পক্ষে সেটা একটা সুখবর হবে৷''

ওদিকে এডি কুক-এর স্বপ্ন হলো, ভাগাড়ের মিথেন গ্যাস দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পাঁচ শতাংশ গাড়ি চালানো৷ জলবায়ুর পক্ষে হানিকর বলে মিথেনের বদনাম আছে বটে, কিন্তু কুক সে যুক্তি মানতে রাজি নন:

‘‘মিথেন যদি বাতাসে ছাড়া হয়, তবে তা জলবায়ুর পক্ষে নেতিবাচক হবে৷ কিন্তু আমরা একটি মোটরের মধ্যে মিথেন পোড়াচ্ছি৷ ফলে মিথেনের জ্বালানি অংশটুকুর সদ্ব্যবহার হচ্ছে, বাকি থাকছে কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং পানি, যা জলবায়ুর পক্ষে বিশুদ্ধ মিথেনের চেয়ে অনেক কম ক্ষতিকারক৷''

জোহানেসবার্গের ট্যাক্সিচালক জেফ্রি জানে, পেট্রোল কি ডিজেলের বদলে গাড়ির ট্যাংকে বায়ো-মিথেন ভরলে, খরচ কমে প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ৷ এবং তার কাছে, এবং দৃশ্যত তার দেশবাসীদের কাছে, বায়ো-গ্যাসের সপক্ষে এর চাইতে ভালো যুক্তি আর কিছু হতে পারে না:

‘‘বায়ো-মিথেন কিভাবে কাজ করে এবং তা থেকে কিভাবে টাকা বাঁচানো যায়, ৮০ শতাংশ মানুষ সেটা বোঝে৷ দক্ষিণ আফ্রিকার ৮০ শতাংশ মানুষ পেট্রোল-ডিজেলের বদলে বায়ো-মিথেন ব্যবহার করতে রাজি৷ আমি সেটা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য