1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অপহরণেরই দিনই হত্যা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৭ মে ২০১৪

নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৭ জনকে অপহরণের দিনই হত্যা করা হয়৷ তাদের হত্যাকাণ্ড ছিল সুপরিকল্পিত ঠান্ডা মাথায়৷ ময়না তদন্ত রিপোর্টে প্রতীয়মান হয়েছে প্রশিক্ষিত গ্রুপই পুরো ঘটনার সঙ্গে জড়িত৷

https://p.dw.com/p/1Bv6X
ছবি: DW/M. Mamun

এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ব়্যাব-১১-এর তিন সেনা কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বিদায় করা হয়েছে৷

নরায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন দুলাল চন্দ্র চৌধুরীর কাছে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ নিহত সাতজনের মরদেহের ময়না তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন ময়না তদন্তকারী ডাক্তার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া৷ বুধবার এই রিপোর্ট পাওয়ার পর জেলা সিভিল সার্জন জানান, ‘‘সাতজনকে অপহরণের পর পরই তাঁদের মাথায় আঘাত করা হয়৷ এরপর তাঁদের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে৷ হত্যার পর লাশ যাতে ভেসে না উঠে, তাই নাভির নীচে ফুটো করে দেওয়া হয়েছে৷ এ সব হত্যার ঘটনায় এটাই স্পষ্ট হয়েছে খুনিরা পেশাদার, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত৷''

সিভিল সার্জন দুলাল চন্দ্র চৌধুরী জানান, ‘‘৩০শে এপ্রিল রাত থেকে সকালের মধ্যে সাতটি লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়৷ ময়নাতদন্ত করার ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা আগে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে৷ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন একটি বন্দর থানায় ও অপরটি জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হবে৷'' তিনি আরও জানান, ‘‘হত্যাকারীরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে৷ এবং হত্যাকাণ্ডে যে পেশাদারিত্ব এবং দক্ষতার ছাপ আছে তাতে স্পষ্ট যে কোনো সাধারণ অপরাধী গ্রুপের এটা কাজ নয়৷''

Symbolbild Tatort
ছবি: Getty Images

গত ২৭শে এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন৷ এর তিন দিন পর ৩০শে এপ্রিল শীতলক্ষ্যায় একে একে ভেসে ওঠে সাতজনের মরদেহ৷ এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছে নজরুলের পরিবার৷

তবে নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ব়্যাব-১১-র কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের প্রধান লে. কমান্ডার এম এম রানা ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যা করেছেন৷ তিনি ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি৷ ঘটনার পর পরই তিন ব়্যাব কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়৷ এরপর শহিদুল ইসলামের অভিযোগ, সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর ব়্যাবের সেনা এবং নৌবাহিনীর ঐ তিন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় মঙ্গলবার৷ তবে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ব়্যাবের তিন কর্মকর্তা যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা এরই মধ্যে নানা দিক দিয়ে প্রমাণ হয়েছে৷ তাই তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা আইনের শাসনের দাবি৷ আর আদমজীতে ব়্যাব-১১-র অফিস তল্লাশি করা প্রয়োজন৷ কারণ এখানে বসেই হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷''

Bangladesch - Landesweiter Streik
ছবি: Getty Images

এদিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তিন কর্মকর্তাকে তদন্তের যে কোনো পর্যায়ে গ্রেফতার করা যায়, এতে আইনে কোনো বাধা নেই৷ তাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তাদের গ্রেফতার করাই আইনের দাবি৷''

অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বুধবার বলেছেন, ‘‘ব়্যাবের এই তিন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমাণ হয়, তাহলে প্রচলিত আইনেই তাদের বিচার হবে৷ সেনা আইনে নয়৷'' তবে তাদের কবে গ্রেফতার করা হবে তার কোন জবাব দেননি তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য