ভারত সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী
২৮ ডিসেম্বর ২০১১জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো নোডা প্রথম ভারত সফরে এসে আজ নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হন৷ আলোচনা হয় ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে৷ তবে শীর্ষবিন্দু ছিল উভয় দেশের মধ্যে বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা৷ বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী নোডা বলেন, পরস্পরের গ্রহণযোগ্য ফল অর্জিত হবে বলে তিনি আশাবাদী৷ তবে নতুন দিল্লিকে মনে রাখতে হবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ এবং পরমাণু পরীক্ষা বন্ধের বিষয়ে জাপানের স্পর্শকাতরতার দিকটি৷ তিনি অবশ্য বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদনের পূর্বশর্ত হিসেবে ব্যাপক পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ চুক্তি সই করার কথা বলেনি৷
এতদিন জাপান ভারতের সঙ্গে অসামরিক পরমাণু সহযোগিতায় কোনরকম আগ্রহ দেখায়নি, যেহেতু ভারত পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ চুক্তিতে সই করেনি৷এখন সেই অবস্থান থেকে সরে আসার কারণ প্রসঙ্গে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সব্যসাচী বসু রায়চৌধরি ডয়চে ভেলেকে বললেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে যে বদলটা দেখতে পাচ্ছি, তার কারণ ভূ-রাজনৈতিক৷ এশিয়ার রাজনীতিতে চীনের উত্থান যেভাবে হয়েছে সেই জায়গা থেকে দেখতে গেলে দেখা যাবে চীনের সঙ্গে জাপানের সংঘাতের কতগুলো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ ভিয়েৎনাম ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় জ্বালানির ওপর নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গেও চীনের একটা চাপানউতোর হয়েছে৷ জ্বালানি রাজনীতির দিক থেকে ভারত-জাপান সমঝোতা জরুরি এবং সেক্ষেত্রে জাপানেরও দরকার ভারতকে৷এই জায়গা থেকেই জাপানের মানসিকতার এই পরিবর্তন৷
শিল্প ও বণিকসভায় দেয়া ভাষণে জাপানি প্রধানমন্ত্রী নোডা ভারতের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন৷ যারমধ্যে আছে দিল্লি-মুম্বই শিল্প করিডোর প্রকল্পে ৮৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ, ভারতে অতি দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন প্রকল্প ইত্যাদি৷ উভয় দেশ এক হাজার কোটি ডলারের পণ্য বিনিময় চুক্তিতে সই করেছে৷
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস.এম কৃষ্ণা প্রধানমন্ত্রী নোডার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন৷ ভারত ও জাপান মনে করে উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক পটপরিবর্তনে ফলে এই অঞ্চলের শান্তি ও সুস্থিতি যাতে বিঘ্নিত না হয় তারজন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ট সমন্বয় জরুরি৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক