1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঢাকায় বিহারি ক্যাম্পে হামলা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৪ জুন ২০১৪

ঢাকার পল্লবীর কালশীতে শনিবার ভোর থেকে বিহারিদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে৷ এ ঘটনায় একই পরিবারের সাতজনসহ অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে৷

https://p.dw.com/p/1CINP
হামলায় পুড়ে যাওয়া একটি ঘরছবি: Reuters

নিহতদের মধ্যে দু'টি শিশুও রয়েছে৷ পুলিশ হতাহতের কথা স্বীকার করলেও নিহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেনি৷ কারণ স্বজনদের বাধার কারণে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে পারছে না৷

বিহারি ক্যাম্পের অধিবাসী মো. ইয়াসিনের দাবি, আগুনে তাঁর পরিবারের সাতজন সদস্য নিহত হয়েছেন৷ একজন নিখোঁজ ও আরেকজন আহত হয়েছেন৷ ইয়াসিন জানান তিনি গুলশান ক্লাবে সেলুনে চাকরি করেন৷

নিহতরা হলেন ইয়াসিনের স্ত্রী বেবী (৪০), তিন মেয়ে শাহানা (২৬), আফসানা (১৯) ও রোকসানা (১৬), যমজ দুই ছেলে লালু (১৪) ও ভুলু (১৪) এবং শাহানার ছেলে মারুফ (২)৷

Banghladesh Zusammenstöße Mirpur 14.6.2014
স্বজনদের বাধার কারণে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে পারছে নাছবি: Reuters

সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ মো. আজাদ (৩৫) নামের একজন বিহারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন৷ নিহত বাকি দুজনের নাম বাবুল ও আশিক বলে জানা গেছে৷

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নয়জনের লাশ বিহারি ক্যাম্পের ভেতরে অবস্থিত আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ক্যাম্প কার্যালয়ে রাখা হয়েছে৷

মিরপুর জোনের পুলিশের ডেপুটি কমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদের দাবি, ‘‘বিহারিদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে সংঘর্ষ হয়েছে৷ শবে বরাত উপলক্ষ্যে এক পক্ষ অন্য পক্ষের বাসার সামনে গিয়ে আতশবাজি পোড়ায়৷ একে কেন্দ্র করেই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে৷'' তিনি প্রাণহানির কথা স্বীকার করলেও সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেননি৷ ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘‘দুই পরিবারের কয়েকজন মারা গেছেন৷ লাশ এখনো উদ্ধার করা যায়নি৷ বিহারিরা লাশ দিতে চাইছে না৷ পুলিশকে অসহযোগিতা করছে৷''

তবে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, সাত থেকে ১০ জন নিহত হয়েছেন৷

Banghladesh Zusammenstöße Mirpur 14.6.2014
আত্মীয় হারানোর শোকছবি: Reuters

সংঘর্ষের কারণ নিয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের কথার গড়মিল রয়েছে৷ প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকার লোকজনের ভাষ্য, শবে বরাত উপলক্ষ্যে আতশবাজি পোড়ানোকে কেন্দ্র করে শনিবার ফজরের নামাজের পর বিহারিদের সঙ্গে স্থানীয় বাঙালিদের সংঘর্ষ শুরু হয়৷ থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে৷ সংঘর্ষের এক পর্যায়ে কুর্মিটোলা বিহারি ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়৷

হারিস ও আবু হোসেন নামের দুজন বিহারির দাবি, স্থানীয় বাঙালিদের বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন নেয়া নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে৷ পুলিশের উপস্থিতিতে ভোরে স্থানীয় বাঙালিরা প্রথমে বিহারি ক্যাম্পে হামলা করে৷

এদিকে, এ ঘটনায় মো. আসলাম (৫০), বদর উদ্দিন (৪৫), আরজু (১৬) নামে গুলিবিদ্ধ তিন ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়েছে৷

এছাড়া ফারজানা নামে এক অগ্নিদগ্ধ নারীও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন৷ তাঁর মুখ, শরীরসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ আগুনে পুড়ে গেছে৷ তিনি মিরপুর-১২'র কুর্মিটোলা ক্যাম্পে বসবাস করেন৷

Bangladesch Aktivist Hizb-ut-Tahrir Dhaka Zusammenstöße Polizei
পুলিশ ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য বিকেলে অভিযান শুরু করেছবি: Reuters

ফারজানার প্রতিবেশী নুরুদ্দিন জানান, ফারজানার ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে৷ তাঁরা শুনেছেন, ফারজানার মা ও বড় বোনসহ পরিবারের চারজন ঘরে আটকা পড়ে মারা গেছেন৷

বিকেল পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত হয়নি৷ বিভিন্ন অলিগলিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ছে বিক্ষুব্ধরা৷ পুলিশও জবাব দিচ্ছে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে৷

এমন পরিস্থিতিতে ঢাকা জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছেন৷ তাঁরা চাইছেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালে নিয়ে যেতে৷ কিন্তু স্থানীয়রা কিছুতেই প্রশাসনের লোকজনকে কাছে ভিড়তে দিচ্ছে না৷

লাশগুলো রাখা হয়েছে কালশীর মোনাপাড়া বিহারি ক্যাম্পের ভেতরের একটি ক্লাবে৷ শত শত নারী-পুরুষ লাশ ঘিরে রেখেছে৷

পুলিশ সেই ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য বিকেলে অভিযান শুরু করে৷ অভিযানের সময় ২০ জন বিহারি যুবককে আটকের খবর পাওয়া গেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য