1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব়্যাবের বিলুপ্তি চেয়ে হাসিনাকে চিঠি

সমীর কুমার দে, ঢাকা২১ জুলাই ২০১৪

বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব ‘ডেথ স্কোয়াড’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, এইচআরডাব্লিউ৷ র‌্যাব ভেঙে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি৷

https://p.dw.com/p/1Cg1Z
Bangladesch Salauddin Quader Chowdhury Urteil 01.10.2013 Dhaka
ছবি: picture-alliance/dpa

ভেঙে দেয়ার আগ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর সব সদস্যকে সরিয়ে নিয়ে র‌্যাবকে পুরোপুরি বেসামরিক বাহিনীতে পরিণত করারও দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই মানবাধিকার সংগঠনটি৷

এইচআরডাব্লিউ'র এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলেছেন, ‘‘স্বাধীন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর হিসাব অনুযায়ী, গত ১০ বছরে প্রায় ৮০০ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র‌্যাব দায়ী৷'' সোমবার সংগঠনটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আধা-সামরিক বাহিনীটি ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখার বিষয়টি জানানো হয়৷

তবে এইচআরডাব্লিউ'র রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে র‌্যাবের মুখপাত্র ‘লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং'এর পরিচালক উইং কমান্ডার এটিএম হাবিবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘র‌্যাব গঠনের পর থেকেই এইচআরডাব্লিউ এই বাহিনীর পেছনে লেগে আছে৷ তারা কোন জায়গা থেকে তথ্য পায়, সেই তথ্যের সত্যতাই বা কি? আর এই ধরনের রিপোর্ট এবারই প্রথম নয়, কিছুদিন পরপরই তারা র‌্যাবের বিরুদ্ধে একটা করে রিপোর্ট প্রকাশ করে৷ ষড়যন্ত্রমূলকভাবেই এটা করা হচ্ছে৷''

এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘বিশ্বের বহু জায়গায় ভয়াবহ মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটছে৷ কিন্তু এইচআরডাব্লিউর সেদিকে কোনো নজর নেই৷ বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ এই বাহিনীকে ধ্বংস করার জন্য তাদের চক্রান্ত চলছে৷ প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই চিঠি তাদের চক্রান্তেরই অংশ৷''

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সরকার র‌্যাব গঠন করেছে, সরকারের সিদ্ধান্তেই এই বাহিনী পরিচালিত হয়৷ জনগণের নিরাপত্তার জন্য বাহিনীটি কাজ করে৷ বিদেশি কোনো সংস্থার সিদ্ধান্তে র‌্যাব বিলুপ্ত হবে না৷''

এইচআরডাব্লিউর চিঠিতে বলা হয়েছে, র‌্যাব ‘সিরিয়াল ও সিস্টেম্যাটিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত৷' এইচআরডাব্লিউসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলো গত এক দশক ধরে র‌্যাবের বিরুদ্ধে বিপুল সংখ্যক বিচার বহির্ভূত হত্যা, আইন বহির্ভূতভাবে আটক ও আইনি কাঠামোর সুযোগ নিয়ে ‘পদ্ধতিগত' নির্যাতনের অভিযোগ জানিয়ে আসছে৷

Opfer des Rapid Action Battalion (RAB) in Bangladesh
র‌্যাব ‘সিরিয়াল ও সিস্টেম্যাটিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত৷'ছবি: DW

চিঠিতে আরো বলা হয়, ২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের আমলে র‌্যাব প্রতিষ্ঠিত হয়৷ ঐ সরকারের পর ২০০৭ সালে ক্ষমতায় আসে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার৷ তাদের বিদায়ের পর ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ সরকার৷ এইচআরডাব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে দাবি করে, আগের সরকারগুলোর মতো এখনকার ক্ষমতাসীনরা প্রতিষ্ঠানটিকে দায়মুক্তি দেয়ায় র‌্যাব ‘গুরুতর' ও ‘পদ্ধতিগত' অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়েছে৷ র‌্যাবের বিরুদ্ধে নির্বিচারে গ্রেফতার ও নিষ্ঠুর নির্যাতনসহ গত ১০ বছরে প্রায় ৮০০ লোককে হত্যার অভিযোগ রয়েছে৷

চিঠির বিষয়ে এইচআরডাব্লিউর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘গত এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় র‌্যাব সদস্যদের ভাড়াটে খুনি হিসাবে কাজ করার তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর বাংলাদেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়৷ র‌্যাব সদস্যরা ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার হয়ে ওই কাজ করে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ র‌্যাব যে আসলে একটি ‘ডেথ স্কোয়াড' হিসাবে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, এটি তার আরেকটি উদাহরণ৷ বাংলাদেশ সরকার র‌্যাব সংস্কারের মধ্য দিয়ে এ বাহিনীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করে এলেও তা পূরণে ‘পুরোপুরি ব্যর্থ' হয়েছে৷''

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘র‌্যাবকে এখন আর সংস্কার করে চালানো সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করি না৷ আইনের ঊর্ধ্বে থেকে কোনো ধরনের জবাবদিহিতার তোয়াক্কা না করে র‌্যাব পরিচালনার একটি সংস্কৃতি তৈরি হয়ে গেছে৷ এই অবস্থায় এ বাহিনীকে শিগগিরই বিলুপ্ত করতে হবে, যাতে বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য