1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডাভোসে আলোচনায় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ

২৮ জানুয়ারি ২০১০

‘বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম' (ডব্লিউইএফ) এর ৪০তম বার্ষিক সম্মেলনের শুরুতেই জোর আলোচনা চলছে আর্থিক খাতে আরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ নিয়ে৷

https://p.dw.com/p/Lihi
ডাভোসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সারকোজিছবি: AP

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবারও পাদপ্রদীপে ছিল ব্যাংক এবং কর্পোরশেনগুলোর নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষতিপূরণের বিষয়টি৷

ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির উদ্বোধনী ভাষণের মধ্য দিয়ে বুধবার এ সম্মেলন শুরু হয়৷ অতিরিক্ত মুনাফালোভী পুঁজিবাদ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতার সমালোচনা করলেও তিনি এটা স্পষ্ট করেছেন যে, শেষ পর্যন্ত তিনি বাজারপন্থীই৷

এ সম্মলনে যোগ দিতে বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা এবং অনেক রাজনীতিক ও রাষ্ট্রনেতারাই এখন সুইজারল্যান্ডের পার্বত্য অবকাশ কেন্দ্র ডাভোসে৷ বুধবার শুরু হওয়া পাঁচদিনব্যাপী এ সম্মেলন চলবে আগামী রোববার পর্যন্ত৷

শারীরিক অসুস্থতার কারণে বৃহস্পতিবার এ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা বাদ দিয়েছেন এ সম্মেলনের অন্যতম অতিথি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা ডা সিলভা৷ অতিরিক্ত রক্তচাপজনিত সমস্যার কারণে আকস্মিকভাবে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হলেও এখন তিনি সুস্থ আছেন এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন বলে জানানো হয়েছে প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে৷

ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এ সম্মেলনে যোগ দিয়ে হাইতিতে মানবিক সাহায্য তৎপরতার বিষয়ে সবার মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছেন৷

‘বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম' এর গঠন, কাজের ধরণ এবং নানা টুকিটাকি নিয়ে আমাদের এ প্রতিবেদন৷

Symbolbild Weltwirtschaftsforum in Davos
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে এবারের সম্মেলন বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ছবি: AP Graphics

শুরুর কথা:

ডাভোসে অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কৌশল নির্ধারণী এ সম্মেলন প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালে৷ অবশ্য তখন এর নাম ছিল ‘ইউরোপিয়ান ম্যানেজমেন্ট সিম্পোজিয়াম'৷

অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াব এর মানসপুত্র এই দাভোস সম্মেলন৷ বাণিজ্য কৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য ১৯৭১ সালে ইউরোপের বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রধান নির্বাহীদের ডাভোসে সমবেত হওয়ার আমন্ত্রণ জানান তিনি৷ প্রথম সম্মেলনের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রায় প্রতিবছরই ডাভোসে ব্যবসায়ীদের এ সমাবেশ চলতে থাকে৷ ১৯৮৭ সালে ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম' (ডব্লিউইএফ) নাম ধারণ করে এই সম্মেলনের কর্মক্ষেত্র এবং লক্ষ্য উদ্দেশ্য আরও সম্প্রসারণ করা হয়৷

গঠনপ্রণালী ও সদস্যপদ :

‘বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম' এখন সদস্যপদ ভিত্তিক একটা অলাভজনক সংগঠন৷ প্রায় ১,০০০ বড় কোম্পানি নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা প্রদানের ভিত্তিতে এর সদস্য৷ এছাড়া অ-ব্যবসায়ী অংশগ্রহণকারীরা বিনা চাঁদায় এর বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে থাকে৷

এর সদর দপ্তর জেনেভায়৷ ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক এবং চীনের বেইজিংয়ে আঞ্চলিক দপ্তর খুলেছে ডব্লিউইএফ৷ সু্ইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিষদের ‘পর্যবেক্ষক সদস্য' হয়েছে এই সংগঠনটি৷

২২ সদস্যের একটি ‘ফাউন্ডেশন বোর্ড' এর সর্বোচ্চ পরিচালনা পরিষদের দায়িত্ব পালন করে থাকে৷ ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার এবং জর্ডানের রানী রানিয়ার মতো রাজনীতিক এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব এই বোর্ডের সদস্য৷

বিশ্বজুড়ে কাজের ক্ষেত্র :

ডাভোসে বার্ষিক সম্মেলন ছাড়াও বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক কলাকৌশল নির্ধারণ এবং বাণিজ্য সমন্বয়ের লক্ষ্যে আরও বেশকিছু উদ্যোগ নিয়ে থাকে ডব্লিউইএফ৷ বেইজিংয়ে ‘অ্যানুয়াল মিটিং অফ দ্যা নিউ চ্যাম্পিয়ন্স' নামে একটি ব্যবসায়ী সম্মেলনের আয়োজক এই সংগঠনটি৷ এছাড়া, ইউরোপ, মধ্যএশিয়া, পূর্বএশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় আলাদা আঞ্চলিক সম্মেলনের আয়োজন করে ডব্লিউইএফ৷ অন্যান্য আঞ্চলিক উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে ‘রাশিয়া সিইও রাউন্ডটেবিল' এবং ল্যাতিন আমেরিকায় ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম'৷ ২০০৮ সাল থেকে দুবাইয়ে ‘সামিট অন দ্য গ্লোবালা এজেন্ডা' নামে আলাদা একটি সম্মেলন শুরু করেছে ডব্লিউইএফ৷

এবারের সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন যারা :

বিশ্বের শীর্ষ দেড় হাজারেরও বেশি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ছাড়াও বিশ্বের অনেক সাবেক ও বর্তমান খ্যাতনামা রাজনীতিক এবং রাষ্ট্রপ্রধানরা যোগ দিচ্ছেন ২০১০ সালের সম্মেলনে৷ এদের মধ্যে রয়েছেন, ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মাইয়ুং বাক, দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাকব জুমা, ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পার, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী খোসে লুইস রড্রিগেজ সাপাতেরো এবং জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহ৷

প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ, সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক