1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টেলিমেডিসিন – ভবিষ্যতে সুস্থ থাকার নতুন পদ্ধতি

১৬ মার্চ ২০১১

সম্প্রতি জার্মানির হানোফারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশ্বের সর্ববৃহৎ তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত মেলা ‘সেবিট’৷ এবারের মেলায় যে বিষয়টি সবাইকে নাড়া দিয়েছে তা হল টেলিমেডিসিন৷ সেটা আবার কী?

https://p.dw.com/p/10ZjM
ছবি: DW/Wenkel

এবারের মেলায় কম্পিউটার নানা ধরণের চমক দেখিয়েছে৷ কম্পিউটারের বিপক্ষে কুইজ প্রতিযোগিতা, কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত গাড়ি কথা বলছে আরো অনেক কিছু৷ হানোফারের সেবিট মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বাস্থ্যনীতি দপ্তরের কমিশনার জন ডালি৷ তিনি ই-হেল্থের প্রতি আগ্রহ দেখান৷ তিনি জানান, ‘‘ আমি এখানে এসেছি মূলত দেখতে, প্রযুক্তি স্বাস্থ্যনীতির কোন কোন ক্ষেত্রে কাজ করছে৷ আমি খুঁটিয়ে ই-হেল্থ সম্পর্কিত নানা তথ্য সংগ্রহ করতে চাই এই মেলা থেকে৷ কারণ আমি বিশ্বাস করি এই ই-হেল্থই হল সুস্থ থাকার অন্যতম স্তম্ভ, যার ওপর ভবিষ্যতে আমরা সবাই নির্ভর করবো৷ এই ই-হেল্থের মাধ্যমেই দেশের মানুষদের সুস্থ রাখা সম্ভব হবে৷''

Forschung Spiel und Hirn
আপনি কী ভাবছেন, সেটাও বলে দেবে কম্পিউটারছবি: picture alliance/dpa

মেলায় উপস্থিত ছিল টেলি-হেল্থের একাধিক স্টল৷ প্রযুক্তির সাহায্যে কীভাবে মানুষকে সুস্থ রাখা সম্ভব তাই জানাচ্ছিল বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান৷

জন ডালির লক্ষ্য হল টেলিমেডিসিনের ধারণাটি ইউরোপে জনপ্রিয় করে তোলা৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মানুষের মধ্যে টেলিমেডিসিনের ধারণাটি আরো স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেয়া৷ এই টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সময় বাঁচবে৷ এছাড়া রোগী অত্যন্ত দক্ষ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারবে৷ আর এক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে৷ জার্মানিতে আইবিএমের প্রধান মার্টিন ইয়েটার জানান,‘‘ আমরা সারা বিশ্বেই নানা ধরণের সমস্যার সমাধান খুঁজে বেড়াচ্ছি৷ একদিকে আমরা কাজ করছি জিন সিকুয়েন্স নিয়ে, অন্যদিকে কাজ করছি বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে৷ আমরা যা করতে চাইছি, তা হল অনেক আগে থেকেই মানুষের বিভিন্ন ডিএনএ সিকুয়েন্স নিয়ে গবেষণা শুরু করা৷ এর মধ্যে দিয়ে প্রতিটি মানুষের অসুখ-বিসুখ আমরা নির্দিষ্ট করে নিরূপণ করতে পারবো৷ প্রতিটি মানুষ একজন আরেকজন থেকে ভিন্ন৷ অসুখ-বিসুখও তাই একরকম হবে না৷''

Cebit 2011 Roboter AILA
মানব সভ্যতার ভবিষ্যত কি এই রোবটদের হাতে?ছবি: DW

এটা হল একটা দিক৷ অন্যদিকে আইবিএম প্রতিটি মানুষের চলাফেরার নথিপত্র সংগ্রহ করছে৷ যেমন কেউ কোথাও বেড়াতে গেল৷ সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ল৷ সেই মানুষটির স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রতিটি তথ্য আইবিএম তাদের নিজস্ব ডেটাবেসে রাখছে৷ সফটওয়্যার তার কাজ করে যাচ্ছে মানুষটিকে নিয়ে৷ সব ডেটা সফটওয়্যার নিজেই গুছিয়ে নিচ্ছে৷ এর অর্থ হল, আইবিএমের সংগ্রহে রয়েছে বিশাল তথ্যভাণ্ডার৷ প্রতিদিনই মানুষরা এগিয়ে যাচ্ছে বার্ধ্যকের দিকে৷ আইবিএম চেষ্টা করছে সবাইকে সুস্থ রাখতে৷

এবার নজর দেখা যাক টেলিহেল্থ বিষয়টির দিকে৷ কোবলেনৎস'এর কম্পুগ্রুপ মেডিক্যাল বোঝাচ্ছে সুস্থ থাকার জন্য নেটওয়ার্ক এবং স্বাস্থ্যনীতির নানা দিক৷ টোমাস ভানাকা বললেন,‘‘আমাদের দাবি, আমাদের মূল লক্ষ্য হল স্বাস্থ্যনীতির পুরো কাঠামোকে এমনভাবে ঢেলে সাজানো, যাতে করে সঠিক সময়ে, সঠিক স্থানে নির্দিষ্ট চিকিৎসকের কাছে রোগী সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো পাঠানো যায়৷''

কথাগুলো জানান টোমাস ভানাকা৷ তিনি দীর্ঘদিন কাজ করছেন কম্পুগ্রুপ মেডিক্যালে৷ তাদের কোম্পানির তৈরি সফটওয়্যার ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি চিকিৎসক তাদের ক্লিনিকে ব্যবহার করছেন, সুফল পাচ্ছেন৷ গত কয়েক বছর ধরে এই কোম্পানিতে কাজ করছে প্রায় ৩৩ হাজার কর্মী এবং অফিসার৷ কম্পুগ্রুপ গত কয়েক বছরে মুনাফা করেছে তিনশ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি৷ তবে সেবিট মেলায় কোম্পানিটি খুব সাবধানে তাদের প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন যেন কেউ ভুল করে স্বাস্থ্যবীমা কোম্পানির সঙ্গে মিলিয়ে না ফেলে৷

টোমাস ভানাকা আরো জানান, সুস্থ থাকতে চান এরকম মানুষের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে৷ নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, এমন মানুষও কম নয়৷ এই সুযোগটিই আমরা নিচ্ছি৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত জানাচ্ছি আমরা কী কী কাজ করছি৷ সুস্থাস্থ্যের জন্য আমরা কোন ধরণের গবেষণা চালাচ্ছি, কীভাবে মানুষদের সাহায্য করতে চাইছি৷ যেমন কোমরে ব্যথা, রিউম্যাটিক ফিভার, হাঁটুতে বা হাতে ব্যথা – এসবের সহজ সমাধান হল বিভিন্ন ধরণের ব্যায়াম এবং পেশাদারদের কাছ থেকে জিমন্যাস্টিক্স শেখা৷ বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয় আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে৷ সেগুলোর উত্তরও আমাদের দিতে হয়৷ শুধু মাত্র পিঠ এবং কোমরের ব্যথা প্রসঙ্গে আমরা এ পর্যন্ত প্রায় ১৬ মিলিয়ন প্রশ্ন পেয়েছি৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য