টিউনিসের আততায়ীদের পরিচয় জানা গেছে
১৯ মার্চ ২০১৫আততায়ীরা বুধবার সামরিক উর্দি পরে, কালাশনিকভ হাতে নিয়ে বিদেশি টুরিস্টদের উপর গুলি চালাতে শুরু করে – বিশেষ করে দু'টি ক্রুজ শিপ-এর যাত্রীরা ছিলেন সেই দলে, পর্যটকরা যখন বাস থেকে নেমে মিউজিয়ামে ঢুকছিলেন৷
পরে মিউজিয়ামের ভিতরে আটকা পড়া প্রায় ১০০ দর্শক আরো গুলি চালানোর আওয়াজ শোনেন৷ এরপর সরকারি ‘‘সন্ত্রাসবাদ বিরোধী গোষ্ঠী'' মিউজিয়ামে ঢোকে এবং সব মিলিয়ে ঘণ্টা চারেক পরে ঘোষণা করা হয় যে, ‘‘অভিযান সম্পূর্ণ''৷
আক্রমণে নিহত হয়েছেন ১৭ জন বিদেশি পর্যটক এবং সেই সঙ্গে ইয়াসিন আবিদি ও হাতেম খাচনাউয়ি নামধারী দু'জন টিউনিশীয়৷ তাঁদের মধ্যে একজন নাকি গুপ্তচর বিভাগের কাছে আগে থেকেই পরিচিত, যদিও কোনো বিশেষ সন্ত্রাস গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর সংযোগের কোনো প্রমাণ নেই বা ছিল না৷ অপরদিকে কোনো সন্ত্রাস গোষ্ঠী এই আক্রমণের জন্য নিজেদের দায়ী বলে ঘোষণা করেনি৷
টিউনিশিয়ার প্রধানমন্ত্রী টেলিভিশনে ঘোষণা করছেন যে, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন জাপানি (জাপান সরকার যা পরে সংশোধন করে তিনজন করেন), চারজন ইটালীয়, দু'জন কলম্বিয়ান, এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, পোল্যান্ড ও স্পেন থেকে একজন করে পর্যটক৷ পোলিশ সরকার পরে দু'জন পোলিশ নাগরিকের নিহত হওয়ার কথা বলেছেন৷ বার্দো সংগ্রহশালার আক্রমণে দৃশ্যত একজন টিউনিশীয় বাসচালক ও একজন পুলিশকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন৷ আহতদের সংখ্যা ৪০-এর বেশি৷
নিহত বিদেশি পর্যটকদের একাংশ এসেছিলেন টিউনিস বন্দরে নোঙর ফেলা দু'টি ক্রুইজ শিপ থেকে৷ ‘স্প্লেনডিডা' জাহাজটির ন'জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন, ১২ জন আহত হয়েছেন এবং ছ'জনের এখনও পর্যন্ত কোনো খবর নেই; ‘কোস্টা ফ্যাসিনোজা' জাহাজটির ১৩ জন যাত্রী রাত্রে জাহাজে ফেরেননি৷ দু'টি প্রমোদতরীই টিউনিস বন্দর পরিত্যাগ করেছে৷ টিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট বেজি সাইদ এসিবসি ‘‘কোনোরকম ক্ষমা বা মমতা ছাড়া'' সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
এই সর্বাধুনিক সন্ত্রাস অবশ্যই দেশের পর্যটন শিল্পকে প্রভাবিত করবে৷ ২০০২ সালে টিউনিশিয়ার জেরবা দ্বীপে একটি ইহুদি প্রার্থনামন্দিরে আল-কায়েদার বোমাবাজিতে ২১ জন মানুষ প্রাণ হারান, তাঁদের মধ্যে ছিলেন বেশ কয়েকজন বিদেশি পর্যটক৷ বুধবার যারা রাজধানী টিউনিসের পথে সমবেত হয়ে জাতীয় সংগীত গেয়েছেন এবং ‘‘সন্ত্রাসবাদীদের'' বিরুদ্ধে ধ্বনি দিয়েছেন, তাঁদের কেউই জেরবার বিভীষিকা ও দেশের অর্থনীতির পক্ষে তার অশুভ ফলশ্রুতির কথা ভুলে যাননি৷
এসি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ)