1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বিমান যাত্রা

সঞ্জীব বর্মন৩ জুলাই ২০০৮

বেসামরিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে যে উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছিল, জ্বালানী তেলের বেড়ে চলা মূল্যের ফলে সেই প্রবণতায় বাধা পড়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে৷ জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর এই নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত৷

https://p.dw.com/p/EV8S
ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে দৈনিক প্রায় ১৪৮,০০০ যাত্রী যাতায়াত করেনছবি: dpa

বিশ্বায়ন ও গতিশীলতা

বিশ্বায়ন মানেই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগের পথে বাধা দূর করা৷ ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক সীমান্ত অগ্রাহ্য করে মানুষ, পণ্য, পরিষেবা নিমেষের মধ্যে পৌঁছে যাচ্ছে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে৷ অথচ এই গতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ছে জ্বালানী তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে৷ অন্যদিকে পরিবেশ দূষণ কমাতেও সচেতনতা বেড়ে চলেছে৷ এই পরিস্থিতিতে দেশের মধ্যে এক শহর থেকে অন্য শহরে যেতে গেলে গাড়ি, ট্রেন বা বিমানের মধ্যে পরিবহনের যে কোনো মাধ্যম বেছে নেওয়া যায় বটে, কিন্তু কয়েক ঘন্টার মধ্যে এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশ যেতে হলে বিমানই একমাত্র পথ৷ জার্মানি তথা ইউরোপ কীভাবে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে?

ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ

জার্মানির সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হল ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর৷ জার্মানির সবচেয়ে বড় কর্মদাতা হিসেবেও পরিচিত৷ প্রায় ৭০,০০০ মানুষ এখানে কাজ করেন৷

১৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্রতি দিন প্রায় ১৪৮,০০০ যাত্রী ওঠানামা করেন ও ৭৭,৯০০ মালপত্র খালাস করা হয়৷ প্রায় ১২৫টি বিমান সংস্থা ১০৯টি দেশে ৩০৭টি গন্তব্যে যাতায়াত করে৷ এই বিশাল কর্মযজ্ঞের পেছনে সরকারের কোনো দফতরের ভূমিকা নেই - বেসরকারী শিল্প সংস্থা হিসেবেই সুনিপুনভাবে এই কাজ করছে ফ্রাপোর্ট নামের সংস্থা৷ লোকসান তো দুরের কথা, শেয়ার হোল্ডারদের মুনাফার কথা মনে রেখে দক্ষ পরিচালনার মাধ্যমে লাভের মুখ দেখে চলেছে এই সংস্থা৷

02.05.2006 Made in Germany Chefkicker fraport Chef, Bender
ফ্রাপোর্ট সংস্থার কর্ণধার ড.ভিলহেল্ম বেন্ডারছবি: Dw-TV

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জ্বালানী তেলের দাম বেড়ে চলার ফলে বিমান চলাচলও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কার কথা শোনা যায়৷ এই অবস্থায় বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের যৌক্তিকতা কোথায়? ফ্রাপোর্ট সংস্থার কর্ণধার ড.ভিলহেল্ম বেন্ডারের মতে, ……তেলের দাম যেভাবে বেড়ে চলেছে, তা এক হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ বিমান চলাচলের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিল্পক্ষেত্র তেলের উপর তুলনামূলকভাবে বেশী নির্ভরশীল৷ বিকল্প জ্বালানী সম্পর্কে গবেষণা চলছে বটে, কিন্তু সেক্ষেত্রে এখনো তেমন অগ্রগতি ঘটে নি৷ অন্যদিকে বেশ কিছু প্রবণতার ফলে এই শিল্পের উন্নতিও হচ্ছে৷ যেমন বেসরকারীকরণের একটা হিড়িক দেখা যাচ্ছে৷ অনেক দেশের সরকারের পক্ষে বিমানবন্দর বা পরিকাঠামোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ লগ্নি করা সম্ভব নয়৷ আমরা এই সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছি৷––

বিশ্বব্যাপী ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরের কার্যকলাপ

ফ্রাপোর্ট শুধু ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের বিমানবন্দরের দক্ষ পরিচালনার জন্যই খ্যাতি অর্জন করে নি৷ এই দক্ষতার ফসল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অন্যান্য বিমানবন্দরের ক্ষেত্রেও কাজে লাগাতে উদ্যোগ নিয়ে চলেছে ঐ সংস্থা৷ ভারতের নতুন দিল্লী থেকে শুরু করে পেরুর রাজধানী লিমা, রাশিয়া, চিন, সৌদি আরব ইত্যাদি অনেক দেশের বিমানবন্দর পরিচালনা, আংশিক মালিকানা, বিনিয়োগকারী ইত্যাদি অনেক ভূমিকায় দেখা যায় ফ্রাপোর্টকে৷ প্রতিযোগিতার এই বাজারে বিশ্বের বাকি নামী বিমানবন্দর পরিচালন সংস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয় ফ্রাপোর্টকে৷ কিন্তু খোদ্‌ ফ্রাঙ্কফুর্টেই সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বার বার বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে ফ্রাপোর্টকে৷ নতুন রানওয়ে তৈরীর কাজে বাধা এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে - গণতান্ত্রিক সমাজে যেমনটা ঘটা স্বাভাবিক৷ ড.ভিলহেল্ম বেন্ডার এবিষয়ে বললেন, ……দুবাইয়ের শেখ আহমেদ শুধু এমিরেটস বিমান সংস্থার মালিকই নন - তাঁরই হাতে বিমানবন্দর, সমুদ্র বন্দর ইত্যাদি আরও অনেক পরিকাঠামোরই নিয়ন্ত্রণ রয়েছে৷ এমন একজন যদি বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেন, তখন তাঁকে অনুমতি নিয়েও সমস্যার মুখে পড়তে হয় না, অর্থের যোগান নিয়েও নয়৷ পেট্রোলিয়াম রপ্তানী করে তাঁদের হাতে কোটি কোটি ডলার আসে৷ আমাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেক কঠিন৷––

১১ই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলা, সার্স রোগের প্রকোপ ইত্যাদি অনেক সঙ্কট সামলে উঠেছে বিমান চলাচল ক্ষেত্র৷ ভবিষ্যতেও এই ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে পারবে এই শিল্পক্ষেত্র৷ অদূর ভবিষ্যতে এয়ারবাস সংস্থার বিশালাকার বিমান A380 যখন একাধিক বিমান সংস্থার উদ্যোগে নিয়মিত উড়ান শুরু করবে, সেই ঘটনা নতুন উদ্দীপনা বয়ে আনবে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে - এমনটাই আশা করছে ফ্রাপোর্ট৷

ভারতে বিমান চলাচলের চালচিত্র

শিল্পোন্নত দেশগুলিতে বিমান চলাচল বা সামগ্রিকভাবে পরিবহন সম্পর্কে যে মনোভাব বা অবস্থান দেখা যাচ্ছে, তার সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার মত উদীয়মান অঞ্চলের পার্থক্য যে থাকবে, তা যথেষ্ট স্বাভাবিক৷ বহুকাল সরকারী বেড়াজালে আটকে থাকার পর ভারতের মত দেশে বিমান চলাচল এক আলাদা মাত্রা অর্জন করেছে৷ হাতে গোনা কিছু অর্থবান মানুষের নাগাল থেকে বিমান পরিবহন সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের অনেকটা কাছাকাছি এসে পড়েছে৷ এবিষয়ে মতামত জানিয়েছেন ভারত-জার্মান বাণিজ্য চেম্বারের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার প্রধান ব্রজগোপাল রায়ের সঙ্গে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান