1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জিএসপি ফিরে পেতে তত্‍পরতা’

সমীর কুমার দে, ঢাকা১ জুলাই ২০১৩

জিএসপি ফিরে পেতে নতুন করে তত্‍পরতা শুরু করেছে সরকার৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া শর্তগুলো পূরণের ব্যাপারেও হচ্ছে আগ্রহী৷ ফলে সংশোধন করা শ্রম আইনের বিল সংসদে তোলার আগেই আবারো সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/18zA1
ছবি: picture-alliance/Dinodia Photo

সোমবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে মন্ত্রীসভা কমিটির এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ বৈঠকের পর মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের বলেন, শ্রম আইন আবারো সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ এ লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, আইনটি আবারো বিবেচনা করতে বর্তমান মন্ত্রী এবং সাবেক মন্ত্রীদের নিয়ে ‘রিভাইজ কমিটি' করা হবে৷

এর আগে গত ৫ জুন জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন ২০১৩' নামের বিলটি উত্থাপন করা হয়৷ পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়৷ কমিটি বিলটি নিয়ে গত ১৩ জুন থেকে তিন দিনব্যাপী গণশুনানি করে৷ শুনানিতে পাওয়া পরামর্শ ও আপত্তি নিয়ে গত দু'দিন সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা শেষে ২০ জুন সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে৷

তবে বিলটি চূড়ান্ত করার আগে থেকেই শ্রমিকদের অধিকার সঠিকভাবে থাকা নিয়ে শ্রমিক নেতারা দাবি করে আসছিলেন৷ শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করে আইনটি পাশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রও দাবি জানিয়েছিল৷ এমন পরিস্থিতির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত পণ্য প্রবেশের সুবিধা জিএসপি স্থগিত করা হয়৷ আর এরপরই নড়ে চড়ে বসে সরকার৷ শুরু করে নানা তত্‍পরতা৷

বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলের সভাপতি সৌমিত্র কুমার দাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, শ্রম আইনের সংশোধনের পরও কিছু ধারা নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলো আন্দোলন করে আসছে৷ রবিবারও ঢাকায় সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ওয়ার্কার্স ফেডারেশন৷ সংশোধিত আইনটিকে গণতান্ত্রিক করার জন্য তারা দাবি জানিয়ে আসছেন৷ তিনি বলেন, নতুন যে আইন করা হচ্ছে তা শ্রম আইন ২০০৬-এর চেয়েও খারাপ৷

তিনি বলেন, ‘‘নতুন সংশোধনীর ২৭ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো শ্রমিক ১০ দিন কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকলে তাঁকে কোনো পাওনাদি দেয়া হবে না৷ কিন্তু মালিক যদি কোনো শ্রমিককে গার্মেন্টসে ঢুকতে না দিতে চান, তাহলে ওই শ্রমিক কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে পারবে না৷ কারণ প্রত্যেক গার্মেন্টসেই মালিকের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকে৷ এইভাবে একজন শ্রমিককে ১০ দিন অনুপস্থিত দেখিয়ে তাঁর কর্মজীবনের দীর্ঘ ১০/১৫ বছরের পাওনা থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ থাকছে৷''

তিনি বলেন, শ্রমিকদের নিয়ে আইনগতভাবে লড়াই করতে গেলে এই বিষয়টা সামনে চলে আসে৷ কারণ মালিক যাঁকে বের করে দিয়েছেন, তাঁর ক্ষেত্রে বলা হয়ে যে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি কর্মক্ষেত্রে আসেন না৷ আর যিনি সত্যি আসেন না, তাঁর ক্ষেত্রেও একই কথা বলা হয়৷

সৌমিত্র কুমার দাস বলেন, ‘‘এতদিন আইনে ছিল মালিক কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করলে বছরে ১৪ দিনের ‘বেনিফিট' তিনি পাবেন৷ কিন্তু নতুন সংশোধনীতে সে পথও রহিত করা হয়েছে৷ ফলে কোনো শ্রমিক চাকরি চলে গেলে কোনো সুবিধাই আর পাবেন না৷ এছাড়া নতুন সংশোধনীতে ট্রেড ইউনিয়নের ব্যাপারে বলা হয়েছে, সবার অংশগ্রহণমূলক (মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে) কমিটি৷ এটা তো কোনো শ্রম আইনের বিষয় না৷ তাহলে তো ট্রেড ইউনিয়নের দরকার নেই! আর সবার অংশগ্রহণে একটি কমিটি হলেও তো আর তার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই৷ এটা কোনো নির্বাচিত কমিটিও না৷ এখন তারা আইনের মধ্যে এটি যোগ করে দিয়েছে৷'' তাই নতুন করে যেহেতু সংশোধনীর সুযোগ এসেছে, তাই অগণতান্ত্রিক ও শ্রমিক বিরুদ্ধ ধারাগুলো বাদ দেয়ার দাবি করেন তিনি৷

তিনি বলেন, ২০০৬ সালের শ্রম আইনে বলা ছিল কোনো মালিক শ্রম আইন ভঙ্গ করলে তাঁর জরিমানা হবে ৫০ হাজার টাকা, অনাদায়ে ছয় মাসের জেল৷ অথচ নতুন সংশোধনীতে সেটি কমিয়ে ২৫ হাজার টাকা আর অনাদায়ে ছয় মাসের জেলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷

সৌমিত্র কুমার দাস বলেন, ‘‘একজন শ্রমিক ২০ বছর কাজ করলে তাঁর পাওনা হয় কয়েক লাখ টাকা৷ সেক্ষেত্রে একজন মালিক ওই শ্রমিককে পাওনা পরিশোধ না করে মাত্র ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিলেই মাফ পেয়ে যাবেন৷ এটা তো হতে পারে না৷ তাই শ্রম আইন সংশোধন করতে শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কমিটিকে বসতে হবে৷ প্রয়োজন হলে তাঁরা মালিকদের সঙ্গেও বসবেন৷ কিন্তু নয়-ছয় করে কিছু করা যাবে না৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য