1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান পত্রপত্রিকায় ‘দিদি’র জয়

২২ মে ২০১১

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে বামফ্রন্টের ভরাডুবি একাধিক জার্মান পত্রিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে৷ বামফ্রন্টের দীর্ঘ ৩৪ বছরের আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে তিনি এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী৷

https://p.dw.com/p/11LC7
জনসভায় জনপ্রিয় জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ছবি: DW

মমতার জয় এবং বামফ্রন্টের শোচনীয় পরাজয়ের ওপর আলোকপাত করেছে বার্লিনের টাগেসাইটুং - টাৎস - দুটি লেখায়৷ তৃণমূল নেত্রী যে সাধারণ মানুষের কাছে ‘দিদি'র আসনে অধিষ্ঠিত সেকথা উল্লেখ করে পত্রিকা লিখছে:

‘‘বহু বছর ধরে যা অসম্ভব মনে হয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় একাই তা সম্ভব করলেন৷ ৫৬ বছর বয়স্কা এই রাজনীতিক এবার সিপিআইএম'কে ৩৪ বছর পর তাদের শক্ত ঘাঁটি পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরিয়ে দিলেন৷ অথচ ‘দিদি'র কোন প্রভাবশালী পরিবারের ছাপ নেই, নেই ধনসম্পদ, না আছে পাকাপোক্ত কোন সংগঠন৷ শিক্ষক তনয়া মমতা বিয়ে করেননি৷ মায়ের সঙ্গে থাকেন কলকাতায় অত্যন্ত সাধারণভাবে৷ অগ্নিবর্ষী বক্তা তিনি, ধমনীতে যাঁর মানুষকে টেনে আনার শক্তি৷ ক্ষমতার বোধটাও যেন তাঁর সহজাত৷''

কেন্দ্রের রেলমন্ত্রী হিসেবে অবশ্য মমতা তেমন কিছু করতে পারেননি বলে মনে করে দৈনিক টাগেসসাইটুং৷ পত্রিকা লিখছে: ‘‘পশ্চিমবঙ্গে শিল্প আর কৃষি খাতকে একই সঙ্গে জোরদার করার গালভরা প্রতিশ্রুতি তিনি কীভাবে রক্ষা করবেন তা স্পষ্ট নয়৷ তবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ উদ্ধত কমিউনিস্টদের সহ্য করে যাওয়ার চাইতে বরং নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ‘‘দিদি''কে নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ঝুঁকি নিতেও আগ্রহী৷''

সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহর থেকে প্রকাশিত ‘নয় স্যুরশার সাইটুং' পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের নির্বাচনী বিপর্যয়কে ভারতের বামদের জন্য এক বড় আঘাত বলেই মনে করে৷ পত্রিকা লিখছে: ‘‘বামফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তাঁর পার্টির অন্যান্য বহু শীর্ষ নেতা তাঁদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় পরাস্ত হয়েছেন৷ বুদ্ধদেব বিধানসভায় বিরোধী নেতার আসনেও বসতে পারবেননা৷ পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বচ্ছ এক সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ তবে কিনা তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক কর্মজীবনে রাস্তায় জনবিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েই দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি৷ ২০০৯ সাল থেকে কেন্দ্রের মন্ত্রী হিসেবে তিনি অবশ্য তেমন দূরদৃষ্টির পরিচয় দেননি৷''

‘ভারতের লাল দুর্গ এবার সবুজ' - এই শিরোনাম ‘নয়েস ডয়েচলান্ড' পত্রিকার প্রতিবেদনের৷ পত্রিকা মনে করে, মমতার ‘মা, মাটি, মানুষ' ও পরিবর্তনের শ্লোগান ভোটারদের মনে প্রতীতি জাগাতে পেরেছে৷ বামফ্রন্টের বিপর্যয়ের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বাম শিবিরের এই জার্মান দৈনিক লিখছে: ‘‘সাড়ে তিন দশক ক্ষমতায় থেকে বামফ্রন্ট নেতৃত্ব হয়ে উঠেছিল আত্মগর্বী৷ এমন সব সিদ্ধান্ত তাঁরা নেন যা তাঁদের তৃণমূল পর্যায়ের সমর্থকদের দুর্বল করে ফেলে৷...সিপিআই নেতা এ.বি.বর্ধন যেমন ‘আমজনতা থেকে বামফ্রন্টের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া'টাকেই তার পরাজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেছেন৷''

প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন