1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির ফার্মাসিউটিক্যাল নেটওয়ার্ক ‘বুকো’ র কর্মকাণ্ড

৮ অক্টোবর ২০১১

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে ওষুধপত্র পাঠানোর ক্ষেত্রে সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে জার্মানির ফার্মাসিউটিক্যাল নেটওয়ার্ক বুকো৷ জার্মানিতে নিষিদ্ধ ওষুধপত্র যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে রপ্তানি করা না হয়, সে ব্যাপারে তৎপর তারা৷

https://p.dw.com/p/12o9A
Wer hat die Bild gemacht/Fotograf?: Jacques Botha, University of Stellenbosch, South Africa Wann wurde das Bild gemacht?: August 2010 Wo wurde das Bild aufgenommen?: Stellenbosch, Südafrika Bei welcher Gelegenheit/in welcher Situation wurde das Bild aufgenommen?: Labortests, Wer oder was ist auf dem Bild zu sehen?: Teebeutelwasserfilter, Prof. Eugen Cloete Zugeliefert von Jörg Poppendieck.
ফাইল ফটোছবি: Jacques Botha/University of Stellenbosch

উন্নয়নশীল দেশের মানুষের স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেয় জার্মানির ফার্মাসিউটিক্যাল নেটওয়ার্ক ‘বুকো'৷ ১৯৮১ সালে যাত্রা শুরু করে বুকো৷ বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সুবিচার ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে জার্মানিতে নিষিদ্ধ ওষুধপত্রের রপ্তানি বন্ধের ব্যাপারে সোচ্চার এই প্রতিষ্ঠান৷ বুকোর কর্মীরা সারা বিশ্বের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করে যাচ্ছেন৷ এবছর ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সামনের দিকে দৃষ্টি দিতে চায় সংস্থাটি৷ দীর্ঘ কয়েক দশকের সফল কর্মকাণ্ড নিয়ে গর্ববোধও করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি৷ বুকোর মুখপাত্র হেডভিশ ডিকভিশ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘জীবন বাঁচানোর জন্য আবশ্যকীয় ওষুধের পেটেন্ট রক্ষা করা সঠিক পথ কিনা, সে ব্যাপারে আমরাই প্রথমে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করি৷ এজন্য আমাদের বহুদিন পর্যন্ত বাঁকা চোখে দেখা হত৷ এখন তো বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ‘ডাব্লিউ এইচ ও' এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও এ বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে৷ তাই আশা করা যায়, ভবিষ্যতে আমরা এমন সব বিষয়কে তুলে ধরতে পারব, যা পরে বাস্তবায়িত হবে৷''

জার্মান ওষুধ কোম্পানিগুলির দোষ ত্রুটি তুলে ধরছে বুকো

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে জার্মান ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলির ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ও দোষ-ত্রুটি জনসমক্ষে তুলে ধরছে বুকো৷ এর ফলে রাজনীতিকদের এবং ওষুধ কোম্পানিগুলির কিছুটা হলেও টনক নড়ছে৷ মাত্র ৭ জন কর্মী নিয়ে গঠিত বুকো৷ এতে রয়েছেন রসায়নবিদ, চিকিৎসক ও সমাজবিজ্ঞানী৷ সাংবাদিক হিসাবে যোগাযোগের দায়িত্বে রয়েছেন ক্লাউডিয়া ইয়েনকেস৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমরা বেশ কিছু পত্রপত্রিকা প্রকাশ করে থাকি৷ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করাটাও গুরুত্বপূর্ণ৷ আমরা ‘হেল্থ অ্যাকশন ইন্টারন্যাশনাল' এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ড্রাগ বুলেটিনস'এর মত স্বাস্থ্য বিষয়ক অনেক আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে নানা রকম তথ্য সংগ্রহ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি আমরা৷''

পরিত্যক্ত ওষুধ তৃতীয় বিশ্বে রপ্তানি করা নিষিদ্ধ হয়েছে

রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আইনের ব্যাপারে বুকো সফল হয়েছে৷ এর ফলে জার্মানির পরিত্যক্ত ওষুধপত্র তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির ওষুধের দোকানে ঢুকতে পারছেনা৷ ওষুধ কোম্পানিগুলি তাদের ব্যবসায়িক রীতিনীতি বারবারই পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে৷ বাধ্য হয়েছে বেশ কিছু ওষুধের উৎপাদন বন্ধ করতে৷ স্কুলের পাঠক্রমেও বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে৷ হেডভিশ ডিকভিশ' এর ভাষায়, ‘‘উন্নয়ন রাজনীতিক বিষয়গুলি সম্পর্কে সংবেদনশীলতা জাগিয়ে তোলার জন্য খুব অল্প বয়স থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে৷ এক্ষেত্রে স্কুলে আমরা ইতিবাচক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি৷ যেমন কোনো কোনো ক্লাসে যক্ষ্মা রোগটি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে৷ বিশেষ করে তরুণদের জন্য আমাদের নিজস্ব একটি ওয়েব সাইটও রয়েছে৷ অল্পবয়সীদের পছন্দের বিষয়গুলির ওপর জোর দেয়ার চেষ্টা করি আমরা৷ তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করি উন্নয়ন রাজনীতিক বিষয়গুলির দিকে৷''

গণ সচেতনতা জাগিয়ে তুলতে চায় বুকো

বিশেষ করে দানের টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চলছে৷ গির্জা কর্তৃপক্ষও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন৷ ‘ফার্মা ব্রিফ' বা ‘ফার্মা পত্র' নামে একটি পুস্তিকা থেকেও কিছু অর্থ আসে, যেটি আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন অ্যামেরিকার দেশের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলি তুলে ধরে৷ ইতোমধ্যে অনেকই গ্রাহক হয়েছেন এই পুস্তিকার৷ তবে এক্ষেত্রে আরো অনেক কিছু করার রয়েছে৷ বুকোর রসায়নবিদ ডা. ক্রিস্টিয়ান ভাগনার আল্ফস বলেন, ‘‘ওষুধপত্রের গবেষণার ক্ষেত্রে আরো বেশি সচেতনতা আশা করি আমরা৷ তার মানে লাভজনক না হলেও বহু অসুখ বিসুখের গবেষণার জন্য আরো বেশি অর্থ বরাদ্দ করা ও নতুন নতুন ধ্যান ধারণার প্রকল্প গড়ে তোলা৷ পেটেন্ট রক্ষার বিষয়টি নিয়েও নতুন করে চিন্তাভাবনা করা দরকার৷ গবেষণার উন্নয়ন লক্ষ্যে অসংখ্য মডেল নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে৷ কিন্তু রাজনৈতিক দিক দিয়ে সাহসের অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে এ ক্ষেত্রে৷ বলা হচ্ছেনা, আসুন আমরা একটি প্রকল্প নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করি৷

কালাজ্বর এবং আফ্রিকায় এক ধরনের মাছি দ্বারা সংক্রামিত রোগ ‘স্লিপিং সিকনেস' এর মত অসুখের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার মত তেমন কোন থেরাপি বের হয়নি৷ ওষুধের কোম্পানিগুলি আর্থিক দিক দিয়ে লাভজনক নয় বলে এসব রোগের ওষুধ বের করার ব্যাপারে খুব একটা মাথা ঘামাচ্ছে না৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন