1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে রোজা পালন

১৪ আগস্ট ২০১১

চলছে রমজান মাস৷ পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে ইফতার আর মসজিদে তারাবির নামাজ আদায়৷ সেইসঙ্গে আসছে ঈদের প্রস্তুতি৷ এসবই বাংলাদেশ সহ অন্যান্য মুসলিম দেশের ছবি৷

https://p.dw.com/p/12G5Q
জার্মানিতে মুসলমানদের নামাজ আদায়ছবি: AP

কিন্তু জার্মানিতে কী করছেন মুসলমানরা? কারণ এখানে প্রায় ৪০ লক্ষ মুসলমানের বাস৷ এর প্রায় অর্ধেকই তুর্কি নাগরিক৷ আর বাকীদের অধিকাংশই এসেছেন আরব বিশ্ব অথবা আফ্রিকার দেশগুলো থেকে৷ আর খোদ জার্মান নাগরিক, যারা ইসলামকে তাদের ধর্ম হিসেবে গ্রহণ করেছেন, তাদের সংখ্যাও হবে কয়েক হাজার৷

অনেক মুসলমান মনে করেন, জার্মানিতে রোজা রাখা সহজ নয়, কারণ অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকতে হয়৷ যেমন প্রথম দিন সেহরির শেষ সময় ছিল রাত তিনটা ৫৫ মিনিট৷ আর ইফতারের সময় সন্ধ্যা ৯টা ২১ মিনিট৷ তার মানে প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা না খেয়ে থাকা! অবশ্য দিন যত গড়াচ্ছে সেহরি আর ইফতারের সময়টাও কমে আসছে৷ তারপরও শেষ রোজার সময় ব্যবধান থাকবে ১৬ ঘণ্টারও বেশি৷

এছাড়া বাংলাদেশ সহ মুসলিম বিশ্বে যেমন রোজার সময় অফিস আদালতের সময় কমে যায়, স্বাভাবিকভাবে জার্মানিতে সেটা নেই৷ ফলে বছরের অন্যান্য দিনের মতো রোজার সময়ও একই সময় ধরে কাজ করতে হয়৷ তাই জার্মানিতে রোজা রাখা কঠিন বলে জানিয়েছেন নেহরু আব্দুল-মোহসেন৷ ইরাক থেকে আসা এই মুসলমান ২৫ বছর ধরে থাকেন নুরেমব্যার্গ শহরে৷

এদিকে, আহমাদ হাইতাম নামের ৩৩ বছরের এক ফিলিস্তিনি নাগরিক বলছেন, জার্মানিতে তিনি, তাঁর দেশে রোজার সময়ে যে ধরনের খাবার খাওয়া হয়, সেটার অভাববোধ করছেন৷ এছাড়া রমজান মাসে ফিলিস্তিনে যে পরিবেশ থাকে সেটারও কথা মনে পড়ে তাঁর৷ তবে এসবের চেয়েও বড় যে কঠিন পরিস্থিতি তিনি অনুভব করেন সেটা হলো, চোখের সামনে সবাইকে খেতে দেখেও সেগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখা৷

৬৬ বছরের তাহরাও পরিবেশের কথা বলছেন৷ পাকিস্তানি এই নাগরিক থাকেন ড্যুসেলডর্ফে৷ তিনি বলছেন, দেশের মতো জার্মানিতে মসজিদের আজান শুনে ইফতার করার উপায় নেই৷ কারণ মসজিদের সংখ্যা খুবই কম৷ এছাড়া কোন মসজিদের আজানই বাইরে থেকে শোনা যায় না৷

তবে যে কয়টা মসজিদ আছে সেগুলোতে ইফতারের সময় বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা একসঙ্গে জড়ো হয়ে ইফতার করে৷ পরে তারাবির নামাজ আদায় করে৷ এতে মুসলমানদের মধ্যে একটা যোগাযোগ গড়ে উঠে৷ বার্লিনে থাকা এজাত উগান বলছেন, রোজার সময় অনেক দেশের মুসলমানের সঙ্গে কথাবার্তা হয়, তাদের নিজ নিজ দেশের সংস্কৃতি ও খাবারের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়৷

এদিকে ২৬ বছরের ইরাকি নাগরিক পায়াম মারুফ থাকেন নুরেমব্যার্গে৷ এ বছরের রোজাটা জার্মানিতে করতে পেরে তিনি খুশি৷ কারণ বছরের এ সময়টা ইরাকে তাপমাত্রা মাঝেমধ্যে ৫০ ডিগ্রিও ছুঁয়ে ফেলে৷ ফলে রোজা রাখতে খুব কষ্ট হয়৷ সেই তুলনায় জার্মানিতে তাপমাত্রা অনেক কম হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে রোজা রাখতে হলেও খুব একটা কষ্ট হয় না বলে মন্তব্য করেন তিনি৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই