1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে মাদকসেবন

৩০ মার্চ ২০১২

কোকেইন, হেরোইন, এক্সটাসি, ক্যানাবিস অথবা হাশিশ’এর মতো মাদক বস্তুত জার্মানিতে নিষিদ্ধ৷ তা সত্ত্বেও প্রতিবছর কয়েক’শ মানুষ এই মাদকগুলির ওভারডোজ’এর ফলে প্রাণ হারিয়ে থাকেন৷ তবে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে৷

https://p.dw.com/p/14V45
ছবি: fotolia/Thomas N

সমাজ জীবনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অথবা সমস্যাকর এলাকার মতো মাদকসেবনের ক্ষেত্রেও জার্মান সরকার একজন ‘ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি’ নিয়োগ করে থাকেন৷ বর্তমানে এই ‘ড্রোগেনবেআউফট্রাগ্টে’ হলেন মুক্ত গণতন্ত্রী রাজনীতিক মেশ্টহিল্ড ডুইকমান্স৷ ২০১১ সালের মাদকসেবন সংক্রান্ত পরিসংখ্যান পেশ করতে গিয়ে ডুইকমান্স বলেন:

‘‘২০১১ সালে জার্মানিতে ৯৮৬ জন মাদকসেবনের ফলশ্রুতি থেকে প্রাণ হারিয়েছেন৷ ১৯৮৮ সাল যাবৎ মাদকসেবনে প্রাণহানির সংখ্যা এতো নীচে নামেনি৷ ২০১০ সালের তুলনায় এই সংখ্যা ২০ শতাংশ কম৷’’

২০১০ সালে জার্মানিতে ১,২৩৭ জন মানুষ মাদকসেবন থেকে প্রাণ হারান৷ সব মিলিয়ে মাদকে প্রাণহানির সংখ্যা যে কমেছে, ডুইকমান্স’এর কাছে সেটাই প্রমাণ যে, ফেডারাল সরকার ও রাজ্য সরকারগুলির মাদক প্রতিরোধ কর্মসূচিগুলিতে কাজ হচ্ছে৷ হেরোইন-আসক্তদের হেরোইনের বিকল্প হিসিবে মেথাডন দেওয়া; মাদকসেবনের জন্য সরকারি আশ্রয়, যেখানে অতিরিক্ত মাদকসেবন ইত্যাদির উপর নজর রাখা হয়; এছাড়া মাদক ইঞ্জেকশনের সুচ যা’তে নোংরা না হয়, একাধিক মাদকাসক্ত যা’তে তা ব্যবহার না করে, এ’সবের সরকারি ব্যবস্থা করার ফলেও মাদকসেবনে মৃত্যুর পরিসংখ্যান কমেছে, বলে ডুইকমান্স’এর ধারণা৷

Bärengalle als Medizin in Ostasien
যারা বেআইনি মাদক সেবন করে, তাদের আয়ু ক্রমেই বাড়ছে...ছবি: picture-alliance/dpaweb

এমনকি তিনি জানান যে, পরিসংখ্যান এ’ও দেখাচ্ছে: যারা বেআইনি মাদক সেবন করে, তাদের আয়ু ক্রমেই বাড়ছে৷ আরো আশার কথা, অপেক্ষাকৃত তরুণদের মধ্যে হেরোইন সেবনকারীদের অনুপাত কমছে৷ কিন্তু এ’সব সত্ত্বেও, ২০১০ থেকে ১০১১ সালের মধ্যে বেআইনি মাদকসেবনে প্রাণহানির সংখ্যা একধাপে ২০ শতাংশ কমে গেল কি করে, তার কোনো ব্যাখ্যা জার্মান সরকার কিংবা তাদের ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধির হাতে নেই৷

সে কারণেই হয়তো ফেডারাল অপরাধ দপ্তরের প্রধান ইয়র্গ সিয়ের্কে প্রতিরোধ কর্মসূচির সাফল্য নিয়ে খুশি থাকা সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন৷ বিশেষ করে প্রথমবারের মতো যারা মাদক পরখ করেছে, তাদের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে, বলে সিয়ের্কে স্মরণ করিয়ে দেন৷ সিয়ের্কে বলেন, ২০১১ সালে এ ধরণের নভিস মাদক সেবনকারীদের সংখ্যা প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়েছে৷ অর্থাৎ এই ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীতে পড়বে প্রায় ২১,০০০ মাদক সেবনকারী৷

সিয়ের্কে জানান যে, এই নিয়ে পর পর আটবার, অর্থাৎ বিগত আট বছর ধরে জার্মানিতে অ্যাম্ফেটামাইন ও মেথাম্ফেটামাইনের নতুন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে৷ এগুলো হল যা’কে বলে সিন্থেটিক ড্রাগস, অর্থাৎ রাসায়নিক থেকে গবেষণাগারে তৈরি মাদক৷ ডিজাইনার ড্রাগস বলেও এগুলোর নাম আছে৷ অপরাধ দপ্তর গতবছর যে পরিমাণ চোরাচালান করা অ্যাম্ফেটামাইন ও মেথাম্ফেটামাইন আটক করতে পেরেছে, তা একটা রেকর্ড৷ প্রায় ১১,০০০ চোরাচালানের ঘটনায় মোট ১ দশমিক ৪ টন সিন্থেটিক ড্রাগস আটক করা হয়েছ, ২০১০ সালের তুলনায় যা ১৭ শতাংশ বেশি৷ কর্তৃপক্ষ ক্রিস্টাল ও এক্সটাসি’র মতো তথাকথিত পার্টি ড্রাগস আরো অনেক বেশি পরিমাণে আটক করেছেন৷ অপরদিকে আটককৃত ক্যানাবিস, কোকেইন ও হেরোইনের পরিমাণ কমেছে৷

অপরাধ দপ্তরের প্রধান স্মরণ করিয়ে দেন যে, আফগানিস্তানে আফিম চাষ এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা থেকে বিশ্বে যে পরিমাণ হেরোইন সেবন করা হয়ে থাকে, তার দ্বিগুণ পরিমাণ হেরোইন উৎপাদন করা যায়৷ আফগানিস্তানে আফিম চাষ কিংবা হেরোইন উৎপাদন রোখার কোনো কার্যকরি পন্থা দৃশ্যত আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রসমাজের হাতে নেই৷ শুধু একটি ছাড়া৷ হেরোইন তৈরি করতে রাসায়নিক লাগে, সেই রাসায়নিক আফগানিস্তানে আসে বাইরে থেকে৷ সিয়ের্কে বলেন:

‘‘শুধু একটাই কৌশল আছে৷ রাসায়নিক ছাড়া যখন হেরোইন তৈরি হতে পারে না, তখন আফগানিস্তানে রাসায়নিক ঢোকাটাই রুখতে হবে৷ অর্থাৎ আমরা পেরু’তে যা করছি, আফগানিস্তানেও সেই কৌশলই ব্যবহার করা হবে৷’’

জার্মান অপরাধ দপ্তর প্রথমে জার্মানির রাসায়নিক শিল্পের সঙ্গে চুক্তি করেছে, যা’তে তারা হেরোইন উৎপাদনকারী দেশ ও এলাকাগুলিতে বেছে-শুনে রাসায়নিক রপ্তানি করে৷ পেরু কিংবা আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গেও কূটনৈতিক উপায়ে এ’ধরণের চুক্তি চাই৷ তৃতীয়ত, অপরাধ দপ্তর পেরু’র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একত্রে মাদক উৎপাদন ও পাচারকারী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে, আফগানিস্তানেও যার সূচনা ঘটেছে, তবে সূচনা মাত্র৷

প্রতিবেদন: রিচার্ড ফুক্স / অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য