1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে বৈষম্যবিরোধী আইন

৫ এপ্রিল ২০০৯

যে কোন ধরনের বৈষম্যই জার্মানিতে নিষিদ্ধ৷ ২০০৬ সালে জার্মানিতে সর্বজনীন সমানাধিকার আইন চালু করা হয়৷ যার মূল কথা, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সব মানুষ ভোগ করবে সমানাধিকার৷

https://p.dw.com/p/HQjB
ছবি: picture-alliance/dpa

এখন প্রশ্ন হল -আদতে জার্মানিতে এই আইন কতোটা বাস্তবায়িত হচ্ছে৷ সেটা খতিয়ে দেখার জন্য এই প্রথম বিশদ এক সমীক্ষা চালানো হয়৷ যার ফলাফল অবাক করার মতো৷

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিনুন সোশিওভিষন-এর সাম্প্রতিক এই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, যে উত্তরদাতা সকলের কাছেই বৈষম্য হলো অবিচারের নামান্তর৷ সিনুন সোশিওভিষন-এর অন্যতম কর্মকর্তা বোডো ফ্লাইগ জানান, জার্মানির মানুষ যে কোন ধরনের বৈষম্য বা বৈষম্যমূলক আচরণের বিরোধী৷ আইন-এর চোখে ন্যায়বিচার এবং সমান অধিকার সবার প্রাপ্য বলেই মনে করেন তাঁরা৷

এছাড়া, সমানাধিকারকে বিশ্বায়নের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে মনে করে জার্মানির প্রায় ৬৮ শতাংশ মানুষ৷ জানিয়েছেন ফেডারেল সরকারের বৈষম্য বিরোধী বিভাগের প্রধান মার্টিনা ক্যোপেন৷ তবে আক্ষরিক অর্থে জার্মানরা বৈষম্য বিরোধী হলেও, বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে সরকারি নীতিমালা বা বিধি-বিধান প্রয়োগের ব্যাপারটা তাদের কাছে তেমন গুরুত্বের নয় ৷ জার্মান জনগণের একটি ক্ষুদ্র অংশই শুধু সর্বস্তরে সমানাধিকারের পক্ষপাতি৷ বোডো ফ্লাইগের কথায়, বৈষম্য বিষয়ে এই পরস্পরবিরোধী মনোভাব দূর করা সত্যিই কঠিন৷ কিন্তু জার্মান সমাজে এটাই যে সত্য৷ তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটা নির্ভর করে সরকারি নীতির ওপর৷

Symbolbild Diskriminierung im Alltag Kampagne Schule ohne Rassismus
জার্মানিতে এখনও নারীরা পুরুষের তুলনায় কম বেতন পেয়ে থাকেছবি: picture-alliance/dpa

অপ্রয়োজনীয়, আমলাতান্ত্রিক এবং ব্যর্থ - জার্মানির বৈষম্যবিরোধী বিধিনিয়মগুলোর বিরুদ্ধে যুক্তি দেখাতে গিয়ে এই তিনটি শব্দই উচ্চারিত হয়ে থাকে৷ বিশেষ করে জার্মানির রক্ষণশীল, মফস্বলী মানসিকতার মানুষদের কাছে বৈষম্য বিষয়ক আইনগুলির অর্থ এটাই৷ এমনকি শিক্ষিত, সুপ্রতিষ্ঠিত মানুষদের কাছেও৷ তাদের মতে, সরকারি সব রকম নীতিমালাই সমাজের মধ্যকার অথবা মানুষে-মানুষে বৈষম্য দূর করতে অক্ষম৷

শুধুমাত্র শহুরে পরিবেশে থাকা তরুণ সমাজই বৈষম্যবিরোধী নীতিকে একটি গণতান্ত্রিক সমাজের অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার বলে মনে করে৷ সমাজের একটু নীচু তলার মানুষরদের অবশ্য এ ব্যাপারে খুব একটা মাথাব্যথা নেই৷ সর্বজনিন সমানাধিকার আইনটি বাস্তবসম্মত৷ যাদের প্রশ্ন করা হয়েছিল তাদের একটা বড় অংশ এমনকি মনে করে যে বৈষম্যবিরোধী আইন সুনির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীকে অসঙ্গত সুবিধা দিচ্ছে৷ এছাড়া, জার্মানদের কাছে বৈষম্যের মাত্রা সব ক্ষেত্রে একরকম নয়৷ তাই অবসরপ্রাপ্ত, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী এবং নারীরা সমানাধিকারের যোগ্য হলেও, বহু ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম দেখা যায়৷

বৈষম্যের এই তারতম্য জার্মানির সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ভিন্নতার ওপর ভিত্তি করেও ঘটে থাকে৷ অন্যদিকে, জার্মান অভিবাসীদের মধ্যে বর্ণ, ধর্ম-বিশ্বাস এবং সমাজবোধের ভিন্নতার কারণেও এই বৈষম্য ঘটে থাকে৷ এমনটি জানান সিনুন সোশিওভিষন-এর অন্যতম কর্মকর্তা বোডো ফ্লাইগ৷ জনসাধারণের মধ্যে জার্মানির বৈষম্যবিরোধী আইন নিয়ে যে সংশয় তার একটি দিক হল - তারা মনে করে, এই আইনের বলে সমাজে অসুবিধাভোগকারী সব গ্রুপকে সমানভাবে সুরক্ষা করা হচ্ছে৷

প্রতিবেদক: দেবারতি গুহ, সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারুক