1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে নব্য-নাৎসি

৮ ডিসেম্বর ২০১৩

জার্মানির চরম ডানপন্থি দলের নাম ‘ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি’ বা এনপিডি৷ তবে বেশি পরিচিত নব্য-নাৎসি সংগঠন হিসেবে৷ এ কারণে জার্মানির সবগুলো রাজ্য একজোট হয়ে এনপিডি নিষিদ্ধের আবেদন করেছে৷

https://p.dw.com/p/1AUf1
নব্য-নাৎসি দল এনপিডি নিষিদ্ধের আবেদন করেছে জার্মানির রাজ্যগুলিছবি: Reuters

সাংবিধানিক আদালতের কাছে করা এই আবেদনে রাজ্যগুলো বলেছে, হিটলারের নাৎসি দলের সঙ্গে এনপিডির ‘সাদৃশ্যপূর্ণ মিল' রয়েছে৷ সে কারণে দলটিকে নিষিদ্ধ করা উচিত৷

রাজ্যগুলোর এই আবেদনের সঙ্গে যুক্ত হয়নি জার্মানির কেন্দ্রীয় সরকার৷ কারণ এর আগে ২০০৩ সালে প্রথমবারের মতো এনপিডিকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটা সম্ভব হয়নি৷ সেসময়ে এনপিডি দলের মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার এত চর লুকিয়ে ছিল যে, দলের প্রকৃত রূপ বোঝাই কঠিন হয়ে পড়েছিল৷ ফলে সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিল এনপিডি৷ এবারও যদি সেরকম কিছু ঘটে, মানে দল হিসেবে এনপিডি টিকে যায়, তাহলে কিছু ভোটারের চোখে হয়ত দলটি বৈধতা পেয়ে যেতে পারে – এমন আশঙ্কা চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের

Bundesverfassungsgericht Urteil zum ESM
সাংবিধানিক আদালতের বিচারকগণছবি: Reuters

তবে জার্মানির তুর্কি সম্প্রদায়, ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ জিউস' এবং ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ সিন্টি অ্যান্ড রোমা'-র নেতারা বলছেন, রাজ্যগুলোর সঙ্গে যোগ না দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার দায়িত্ব এড়াতে চাইছে৷

নিষিদ্ধের বিরোধীতা

যারা এনপিডিকে দল হিসেবে নিষিদ্ধের বিপক্ষে তাদের একটি যুক্তি হচ্ছে, এর ফলে দলটি আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যেতে পারে এবং তেমনটা হলে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা কঠিন হবে৷

এনপিডি সম্পর্কে আরও তথ্য

রাজ্য সরকারগুলো এনপিডিকে নিষিদ্ধের আহ্বান সংক্রান্ত তাদের পিটিশনে দলটির একটি প্যামফ্লেটের কিছু অংশ উল্লেখ করেছে৷ তাতে লেখা রয়েছে, ‘‘হয় তুমি জন্মসূত্রে একজন জার্মান, না হলে তুমি জার্মানই নও৷''

প্যামফ্লেটে আরও লেখা আছে, ‘‘একজন আফ্রিকান অথবা এশিয়ান....কখনো জার্মান হতে পারে না, কারণ তাদের একটা কাগজ দেয়ার মানে এই না যে, তাদের ‘বায়োলজিক্যাল জেনেটিক ম্যাকআপ'-এ পরিবর্তন আসবে৷ অন্য জাতিগোষ্ঠী থেকে আসা লোকজন যত বছরই জার্মানিতে বাস করুক না কেন তারা বিদেশিই থেকে যাবে৷''

Angela Merkel und Semiya Simsek
এনএসইউর হাতে পিতা হারানো সেমিয়া সিমসেকের সঙ্গে কথা বলছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেলছবি: Bundesregierung/Kugler

১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এনপিডি দল কখনো জার্মানির কেন্দ্রীয় সংসদে প্রবেশ করতে পারেনি৷ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে দলটি ১.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে৷ অবশ্য জার্মানির ১৬টি রাজ্যের মধ্যে দুটি রাজ্যের সংসদে এনপিডি দলের প্রতিনিধি রয়েছে৷ সাক্সোনি ও মেকলেনবুর্গ-ফোরপমার্ন রাজ্যের সংসদে এনপিডির যথাক্রমে ৮ ও ৫ জন করে প্রতিনিধি রয়েছে৷ রাজ্য দুটিরই অবস্থান সাবেক পূর্ব জার্মানিতে৷

ফ্রান্স, ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডসের অভিবাসী-বিরোধী দলের চেয়েও বেশি কট্টর জার্মানির এনপিডি দলের কয়েকটি দাবির মধ্যে একটি হলো অভিবাসন প্রক্রিয়ার সমাপ্তি৷

‘সিরিয়াল কিলিং'

এনপিডি নিষিদ্ধে একবার ব্যর্থ হওয়ার পর আবারও সেই প্রক্রিয়া শুরু করার ক্ষেত্রে যে ঘটনাটি ভূমিকা রাখতে পারে সেটা হচ্ছে, তিন নব্য-নাৎসির হাতে ধারাবাহিকভাবে ১০ জন খুন হওয়ার খবর প্রকাশ৷ এই ১০ জনের বেশিরভাগই তুর্কি অভিবাসী৷ এর বাইরে রয়েছে একজন গ্রিক অভিবাসী ও একজন জার্মান নারী পুলিশ সদস্য৷

Fahndungsfoto 1998 Neonazi Trio Böhnhard Zschäpe Mundlos Terrrorismus
এই তিন নব্য-নাৎসির হাতে ধারাবাহিকভাবে ১০ জন খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছেছবি: picture-alliance/dpa

২০১১ সালে খবরটি প্রকাশের পর সেটা রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে অনেক সাধারণ জার্মান নাগরিকের মনেও আলোচনার জন্ম দেয়৷ কেননা তার আগে সরকার নব্য-নাৎসিদের কর্মকাণ্ডকে ততটা গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি৷ জনগণও তাদের সম্পর্কে ততটা জানতো না৷

খুনের অভিযোগ থাকা ঐ তিন নব্য-নাৎসি অবশ্য ‘ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট আন্ডারগ্রাউন্ড' বা এনএসইউ নামের আরেকটি সংগঠনের সদস্য৷ তবে সেটাও এনপিডির মতোই উগ্র ডানপন্থি ঘরানার৷

এনএসইউর তিন কর্মীর মধ্যে দুজন আত্মহত্যা করেছে৷ বেঁচে আছে একজন৷ তার এখন বিচার চলছে৷

পুনরায় পর্যবেক্ষণ

এনএসইউর ঘটনার প্রেক্ষিতে জার্মান পুলিশ ১৯৯০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সমাধান না হওয়া প্রায় ৩,৩০০ হত্যার ঘটনা পুনরায় ঘেঁটে, তার মধ্য থেকে ৭৪৬টি ঘটনা পুনরায় তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এর মাধ্যমে পুলিশ ঐ খুনের ঘটনাগুলোর সঙ্গে উগ্র ডানপন্থিদের কোনো যোগসূত্র আছে কিনা, তা খুঁজে দেখবে৷

জেডএইচ/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য