1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাংস আর মদ

মার্কুস ল্যুটিকে/এআই১৯ ডিসেম্বর ২০১২

অনেক জার্মান এখনো তাদের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানে মাত্রাতিরিক্ত মাংস খাওয়া এবং মদ্যপান অব্যাহত রেখেছে৷ ইতিবাচক কিছু ধারা লক্ষ্য করা গেলেও অনেকে এখনো বাড়তি ওজনের অধিকারী এবং ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/175HV
ছবি: ARC/Fotolia

জার্মানির ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে মাংসের আধিক্য খুব বেশি৷ শুকরের পা থেকে শুরু করে, সসেজ, বাছুরের মাংসের কাটলেট, কিংবা পটেটো স্যালাড – জার্মানির ঐতিহ্যবাহী এসব খাবারে মাংস, চর্বি আর ক্যালোরির উপস্থিতি অত্যন্ত বেশি৷ সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য জার্মানদের খাদ্য তালিকায় খানিকটা পরিবর্তন এসেছে৷ চলতি বছর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এসব তথ্য৷

Helmut Heseker Präsident der Deutschen Gesellschaft für Ernährung
পুষ্টি বিষয়ক সংগঠন ডিজিই'র প্রেসিডেন্ট হেলমুট হেসেকারছবি: privat

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জার্মানদের মাংস খাওয়ার পরিমাণ গত কয়েকবছর ধরে স্থির রয়েছে, তবে সেটি অনেক উঁচু পর্যায়ে৷ অর্থাৎ প্রত্যাশিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে মাংস খাচ্ছেন জার্মানরা, জানান পুষ্টি বিষয়ক সংগঠন ডিজিই'র প্রেসিডেন্ট হেলমুট হেসেকার৷ তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে মাংস খাওয়ার পরিমাণ বাড়েনি৷ তবে এই পরিমাণ উঁচু একটি মাত্রায় গিয়ে স্থির হয়ে আছে৷ এখানে বলা প্রয়োজন, এই মাত্রা আমাদের প্রত্যাশার অনেক উপরে৷''

ডিজিই'র বক্তব্য অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে গড়ে একজন ব্যক্তির ৬০০ গ্রামের বেশি মাংস খাওয়া উচিত নয়৷ কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অনেকে, বিশেষ করে পুরুষরা একদিনেই এর চেয়ে বেশি মাংস খান৷ এমনকি কম-চর্বিযুক্ত মাংসও মাঝে মাঝে অস্বাস্থ্যকর, দাবি ডিজিই'র৷

বলাবাহুল্য, বাড়তি মাংস গ্রহণ শুধু মানুষের শরীরের ওজনই বাড়ায় না৷ এতে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে৷ হেসেকার এই বিষয়ে বলেন, ‘‘সুশৃঙ্খল গবেষণা থেকে জানা গেছে, লাল মাংস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়৷ বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলে বলতে হয়, লাল মাংস হচ্ছে গরু, শুকর, ভেড়া আর ছাগলের মাংস৷ তবে মাছ এবং হাস-মুরগির মাংস খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে না৷''

খাদ্যাভ্যাস বিষয়ক এই প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, জার্মানদের খাদ্য তালিকায় শাক-সবজির উপস্থিতি বাড়ছে৷ ২০০০ সাল থেকে হিসেব করলে প্রতি বছর গড়ে আগের চেয়ে এক কেজি করে বেশি শাক-সবজি খাচ্ছেন এখন জার্মানরা৷ বর্তমানে বছরে একজন ব্যক্তি ২৫ কেজি শাক-সবজি খান৷ দেহের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেলের অন্যতম উৎস এগুলো৷

শাক-সবজির মধ্যে টমেটো, শসা, গাজর এবং স্যালাডের চাহিদা যেমন বাড়ছে, অন্যদিকে বাঁধাকপি, মটর আর মসুর ডালের চাহিদা পড়তির দিকে৷ পড়তির দিকে থাকা শাক-সবজির জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য প্রচারণার দিকে গুরুত্ব দিলেন হেসেকার৷ বললেন, ‘‘টেলিভিশনে অনুষ্ঠান করা পাচকরা যদি তাঁদের রন্ধনপ্রনালীতে এসব সবজি অন্তর্ভুক্ত করেন, তাহলে চমৎকার ব্যাপার হবে৷ তখন মানুষের খাদ্য তালিকায় এসবের ব্যবহার আবারো বাড়বে৷''

প্রতিবেদনে যে উদ্বেগজনক বিষয়টি ধরা পড়েছে, তা হচ্ছে, জার্মানরা ফলের দিক থেকে ক্রমশ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন৷

Übergewichtiger Mann
বাড়তি মাংস গ্রহণ শুধু মানুষের শরীরের ওজনই বাড়ায় না, এতে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়েছবি: picture alliance/dpa

এছাড়া পানীয় গ্রহণের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, মিনারেল ওয়াটার এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়৷ পাশাপাশি চিনিমিশ্রিত হালকা পানীয়র চাহিদাও উপরের দিকে৷ এটিকে অবশ্য ইতিবাচক হিসেবে নিচ্ছেন না গবেষকরা৷ কেননা, চিনিমিশ্রিত হালকা পানীয়তে প্রচুর ক্যালোরি থাকলেও তা আমাদের ক্ষুধা মেটাতে পারে না৷

জার্মানদের ওয়াইন এবং বিয়ার পানের পরিমাণ আগের চেয়ে পড়তির দিকে৷ তবে তা এখনো প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছায়নি৷ বিশেষ করে ৩১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৫ শতাংশ নারী পরিমিত মাত্রার চেয়ে বেশি ওয়াইন এবং বিয়ার পান করেন৷ পরিমিত মাত্রাটি হচ্ছে নারীর ক্ষেত্রে দশ গ্রাম, পুরুষের ক্ষেত্রে ২০ গ্রাম৷ এক বা দুই গ্লাস ওয়াইনেই এই মাত্রা রয়েছে৷

প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সাল থেকে প্রতি চার বছর অন্তর জার্মান সরকারের সহায়তায় খাদ্যাভাস সংক্রান্ত এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়৷ জার্মানদের পুষ্টিধারা বিশ্লেষণের এক বিজ্ঞানসম্মত পন্থা এটি৷ চলতি বছরের প্রতিবেদনে বয়স্ক মানুষদের দিকে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়৷ জার্মানিতে ৭০ থেকে ৭৪ বছর বয়সি ৭৪ শতাংশ নারী এবং ৬৩ শতাংশ পুরুষ বাড়তি ওজনের অধিকারী৷

তবে বাড়তি ওজনের শিশুর সংখ্যা কিন্তু আগের চেয়ে কমতির দিকে৷ প্রাক-বিদ্যালয় পর্যায়ের শিশুদের মধ্যে বাড়তি ওজনের হার কমেছে তিন শতাংশ৷ আর স্থূলতা কমার হার ১.৮ শতাংশ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য