বিপর্যস্তদের পাশে ‘আমরা’
১৩ মার্চ ২০১৩কথা হলো সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী সায়ন্তনী ত্বিষার সঙ্গে৷ প্রবীর সরকার বিধান এবং অনুপম দেব কানুনগোর মতো তিনিও ‘আমরা'র মূল উদ্যোক্তাদের একজন৷ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদির ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর বেশ কিছু জায়গাতেই ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির৷ তাণ্ডবের শিকারদের দুরবস্থা দেখে ‘আমরা' দূরে বসে থাকতে পারেনি৷ সহায়তার জন্য যেটুকু সম্ভব জোগাড় করে ছুটে গিয়েছে বাঁশখালির সেই এলাকায়, যেখানে সরকারি অফিসগুলো এখন পোড়ো বাড়ি, দু'দিন আগের সচ্ছল মানুষেরাও যেখানে সব হারিয়ে দিশেহারা৷
সায়ন্তনী ত্বিষার ডয়চে ভেলেকে দেয়া এ সাক্ষাৎকারে তাণ্ডবের ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে অনেকটাই৷ সরকারি সম্পদের ক্ষতি টাকার অঙ্কে কতটা হয়েছে সে অনুমানে তিনি যাননি৷ সংখ্যালঘুদের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণও নিষ্প্রয়োজন৷ ঘর-বাড়ি পুড়ে ছাই, এক পাড়ায় একটা চুলো ছাড়া কিছুই নেই- এমন ক্ষতির আবার হিসেব-নিকেশ! কয়েকটা পরিবারের জনা তিরিশেক মানুষ দিন কাটায় খোলা আকাশের নিচে, রাতে তাঁদের আশ্রয় এক নিকটাত্মীয়ের এখনো টিকে থাকা বাড়ির ছোট্ট একটা ঘর৷ সেই ঘরে ত্রিশ জনের গাদাগাদি করে থাকা আর রাত ফুরোলে কী ভাবে, দোকানপাট ছাই হয়ে যাওয়া এই বর্তমান কোন ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে সেই ভাবনা৷
ত্বিষা এবং তাঁর সঙ্গীরা অবশ্য আশার এক চিলতে আলোর উজ্জ্বলতাও দেখেছেন জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবের আঁধারে ঢাকা বাঁশখালিতে৷ জামায়াত-শিবির সেদিন ঘন্টাখানেক তাণ্ডব চালিয়েছে ইচ্ছেমতো৷ অতর্কিত হামলায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় সাধারণ মানুষতো বটেই, এমনকি পুলিশও এগিয়ে আসেনি বাধা দিতে৷ কিন্তু একটা সময় হাতের কাছে যে যা পেয়েছেন তা নিয়েই রুখে দাঁড়ান স্থানীয়রা৷ তাঁদের ধাওয়া খেয়ে পালাতে বাধ্য হয় জামায়াত-শিবিরের উন্মত্ত কর্মী-সমর্থকরা৷
‘আমরা' তাই একটা মহলের সাম্প্রদায়িক বর্বরতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সম্প্রীতির শক্তিও দেখেছে৷ এই দেখা, এভাবে সব হারানোদের পাশে দাঁড়ানো, শুভ মানসিকতার আরো উন্মেষে প্রেরণা হওয়ার এখানেই শেষ নয়৷ সাক্ষাৎকারে এ আশ্বাসটুকুও দিয়েছেন সায়ন্তনী ত্বিষা৷
সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন