1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাতক্ষীরা ‘আপাতত শান্ত’

১৮ ডিসেম্বর ২০১৩

সাতক্ষীরা জেলায় গত কয়েকমাস ধরে সহিংসতা চলার পর এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত৷ রবিবার যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনার পর সেখানকার জামায়াত অধ্যুষিত এলাকাগুলো পুরুষশূন্য হয়ে আছে বলে জানান স্থানীয় সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল৷

https://p.dw.com/p/1AbBJ
ছবি: Mustafizur Rahman Uzzal

সাতক্ষীরায় গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই সহিংসতা চলছিল৷ প্রশাসনের ভাষায়, এসব নাশকতা কিংবা সন্ত্রাসী হামলার শুরু হয় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর থেকে৷ ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রাণ হারিয়েছে বেশ কয়েকজন৷

সহিংসতায় সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের ১৭ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন৷

আওয়ামী লীগের ‘১৭ নেতাকর্মী' নিহত

সাতক্ষীরার সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল মঙ্গলবার ডয়চে ভেলেকে জানান, ২৮ ফেব্রুয়ারির পর থেকে সহিংসতায় সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের ১৭ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘জামায়াত-শিবির এবং তাদের সহযোগীদের হাতে এপর্যন্ত আমরা প্রায় সতেরজন আওয়ামী লীগ সমর্থিত লোকজনকে নিহত হতে দেখেছি৷''

একই সময়ে পুলিশের বিভিন্ন অভিযানে, গোলাগুলিতে ত্রিশ ব্যক্তি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ এবং বিএনপির সমর্থক রয়েছে বলে জানান উজ্জল৷ তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের গুলিতে এসব প্রাণহানি নিয়ে আমরা নিয়মিত রিপোর্ট করেছি৷ নিহতের সংখ্যার ক্ষেত্রে কিছুটা তারতম্য হতে পার, কিন্তু সবমিলিয়ে সংখ্যাটি কম নয়৷''

যৌথ অভিযানে প্রাণহানি

সাতক্ষীরার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রবিবার রাত থেকে যৌথ অভিযান শুরু করে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি৷ এই অভিযানে প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে৷ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল বলেন, ‘‘প্রথম দিনের অভিযানের ব্যাপারে সাতক্ষীরার নবাগত পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির আমাদের বলেছিলেন, অভিযানে জামায়াত-শিবিরের পাঁচজন নেতাকর্মী নিহত হয়েছে৷ কিন্তু আমরা খোঁজখবর নিয়ে যা দেখলাম এবং জামায়াতের পক্ষ থেকে আমাদের যা জানানো হয়েছে তাতে এই অভিযানে তাদের একজন কর্মী নিহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে৷''

যৌথবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে বেশ কয়েকজন জামায়াত কর্মীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জেনেছেন মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, জামায়াত বলছে, তাদের বেশ কয়েকজন কর্মীকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে৷ তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না৷

‘এলাকা পুরুষশূন্য'

প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরায় জামায়াত নেতা আবদুল খালেকের বাড়ি বুলডোজার চালিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে একটি খবর ফেসবুকে ছবিসহ ছড়ানো হচ্ছে৷ এই বিষয়ে উজ্জল বলেন, ‘‘জেলা জামায়াতের আমীর এবং সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল খালেক মন্ডলের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে৷ পুলিশ আমাদের বলেছে যে, এটি আসলে বিক্ষুব্ধ জনতার আক্রোশের প্রতিফলন৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছি, বুলডোজারতো সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারে না৷ তারা আমাদের এই প্রশ্ন এড়িয়ে গেছে৷''

Anschlag in Bangladesch EINSCHRÄNKUNG
সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জলছবি: Mustafizur Rahman Uzzal

এদিকে, যৌথ অভিযান শুরুর পর থেকে জামায়াত অধ্যুষিত এলাকাগুলো পুরুষশূন্য হয়ে আছে বলে জানান উজ্জল৷ তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের অভিযান অব্যাহতভাবে চলায় এলাকাগুলোতে পুরুষের উপস্থিতি আমরা দিনের বেলায় দেখতে পাচ্ছি না৷ পুরুষরা বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে আছে৷''

সাতক্ষীরায় ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চলা সহিংসতায় সাংবাদিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল৷ তিনি মনে করেন, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সাতক্ষীরায় তেমন কোনো উত্তাপ না থাকলেও নির্বাচন পরিচালনা করতে হলে নিরাপত্তা বাহিনীর শক্ত উপস্থিতি থাকতে হবে৷ সেক্ষেত্রে যৌথবাহিনীর অভিযান চালিয়ে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন মাছরাঙ্গা টেলিভিশন এবং আমাদের সময়ের এই সাতক্ষীরা প্রতিনিধি৷ যৌথ অভিযান থেমে গেলে জামায়াত আবারো প্রতিশোধ নিতে সক্রিয় হতে পারে বলে শঙ্কা তাঁর৷

সাক্ষাৎকার: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: জাহিদুল হক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য