1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাপানি সম্রাটের ভারত সফর

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি৩ ডিসেম্বর ২০১৩

জাপানের সম্রাট আকিহিতোর সস্ত্রীক ছয় দিনের ভারত সফর মূলত শুভেচ্ছামূলক হলেও এর তাৎপর্য অস্বীকার করা যায় না, বিশেষ করে যখন পূর্ব চীন সাগরের ভূখণ্ড নিয়ে চীন-জাপান সংঘাত চরমে৷

https://p.dw.com/p/1ARl1
Japanese Emperor Akihito, left, and Empress Michiko, second from left, greet guests during a spring garden party hosted by the Japanese monarch at the Akasaka Palace Imperial Garden in Tokyo on Thursday, April 19, 2012. (Foto:Kazuhiro Nogi, Pool/AP/dapd)
ছবি: AP

এর প্রেক্ষিতে ভারতসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলিকে পাশে পেতে চাইছে জাপান৷

সরকারিভাবে জাপানের সম্রাট আকিহিতোর ভারত সফরকে শুভেচ্ছা সফর বলা হলেও দিল্লির কূটনৈতিক অঙ্গনে এই সফরের অন্য তাৎপর্য আছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ সেটা কী? ভারতের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক সমস্যামুক্ত, যা চীনের সঙ্গে নেই৷ ভারতের সঙ্গে এমন কোনো বড় ইস্যু নেই যার সমাধান বাকি আছে৷ কিন্তু চীনের সঙ্গে আছে৷ জাপানি সম্রাটের ভারত সফর এমন একটা সময়ে হচ্ছে যখন পূর্ব চীন সমুদ্রের বিতর্কিত দ্বীপপুঞ্জের ভৌগলিক অধিকার নিয়ে জাপান-চীন বিরোধ তুঙ্গে৷ এই পরিস্থিতিতে চীনকে চাপে রাখতে ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলিকে পাশে পেতে চাইছে জাপান৷ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে প্রধানমন্ত্রী হবার এক বছরের মধ্যে ভারতসহ এশিয়ার দশটি দেশ সফর করেন চীনের ওপর পাল্টা চাপ সৃষ্টি করতে৷

FILE - This May 2012 file photo provided by China's Xinhua News Agency shows the Chinese aircraft carrier Liaoning cruising for a test on the sea. A congressional advisory panel sounded a warning Wednesday about China's military buildup, predicting Beijing could possess the largest fleet of modern submarine and combatant ships in the western Pacific by 2020. The U.S.-China Economic and Security Review Commission said China's military modernization is altering the balance of power in the Asia-Pacific region and challenging decades of U.S. pre-eminence. (AP Photo/Xinhua, Li Tang, File) NO SALES
ছবি: picture-alliance/AP

১৯৯০ সালে সম্রাট পদে আসীন হবার পর আকিহিতো তাঁর দক্ষিণ এশিয়া সফরে ভারতকেই প্রথম বেছে নেন৷ সম্রাটের সঙ্গে এসেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইওশিরো মোরি সহ ৫০ জনের এক প্রতিনিধিদল৷ কূটনৈতিক প্রোটোকল ভেঙে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং সস্ত্রীক বিমানবন্দরে যান তাঁকে স্বাগত জানাতে৷ উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের মে মাসে ড. সিং গিয়েছিলেন টোকিওতে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতায় গতি আনতে৷ ৫৩ বছর আগে সম্রাট আকিহিতো ভারতে এসেছিলেন যুবরাজ হিসেবে৷

ভারত-জাপান সম্পর্কের সুপ্রাচীন ইতিহাস কারোর অজানা নয়৷ তবে একবিংশ শতাব্দীতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুণগত মানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইওশিরো মোরি৷ ২০০০ সালে অটল বিহারি বাজপেয়ীর আমলে তিনি ভারত সফর করেন৷ সেসময় শান্তি ও ধারাবাহিক উন্নয়নের ভিত্তিতে রচিত হয় ‘‘গ্লোবাল পার্টনারশিপ'' এর রোডম্যাপ – যার লক্ষ্য, দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ৷ ছয় দিনের ভারত সফরে এসে জাপানের সম্রাট আকিহিতো সেই বার্তাই দিতে চান৷

পর্যবেক্ষকদের মতে ভারত-জাপান বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অন্যতম স্তম্ভ৷ জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর সেদেশে পরমাণু বিদ্যুতের বিরুদ্ধে জনমত সরব হচ্ছে৷ জাপান এখন আর পরমাণু বিদ্যুতের ওপর জোর দিচ্ছে না৷ ৫৪টি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ অথচ ভারতে বিদ্যুতের চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে৷ ২০০৮ সালে ভারত-মার্কিন বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা চুক্তির পর ভারত জনমতের বিরোধিতা অগ্রাহ্য করে একের পর এক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে৷ সেখানে জাপান এক বড় অংশীদার৷ ফুকুশিমা দুর্ঘটনায় জাপানের আর্থিক লোকসানের পরিমাণ ধরা হয়েছে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ সেটা উশুল করতে সম্ভবত বিশ্বব্যাপী পরমাণু বিদ্যুতের সাজ সরঞ্জাম বিপণনের ওপর জোর দিচ্ছে জাপান৷

তোশিবা, হিতাচি ও মিৎসুবিশির মতো জাপানি কোম্পানিগুলি ভারতে সক্রিয়৷ এইসব কোম্পানি মনে করে, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে পরমাণু উপকরণ বিপণন বেশ লাভজনক হবে৷ তবে কথা হচ্ছে ফুকুশিমা বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে ভারতের কী উচিত হবে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথে হাঁটা?

সোমবার সম্রাট দম্পতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগত মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হন৷ সোনিয়া গান্ধীর উপস্থিতিতে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়৷ এর আগে রাষ্ট্রপতি ভবন প্রাঙ্গণে সম্রাটকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানানো হয়৷ রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন সম্রাট দম্পতি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য